অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

দুই বিশ্বরেকর্ড গড়ে গিনেস বুকে ঠাকুরগাঁওয়ের রাসেল

এস. এম. মনিরুজ্জামান মিলন, ঠাকুরগাঁও

প্রকাশিত: ০৬:৪৮ পিএম, ৩১ জুলাই ২০২১ শনিবার  

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার হরিহরপুর সিরাজপাড়া গ্রামের ছেলে রাসেল ইসলাম। দরিদ্র কৃষক পরিবারের এই ছেলে মাত্র ২১ বছর বয়সে এক পায়ে দড়ি লাফানো খেলায় (স্কিপিং রোপে) গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন।

৩০ সেকেন্ডের মধ্যে ১শ’ ৪৫ বার ও এক মিনিটে ২শ’ ৫৮ বার এক পায়ে স্কিপিং রোপ করে গিনেস বুকে নাম লেখান রাসেল। এর আগে ৩০ সেকেন্ডে স্কিপিং রোপের রেকর্ড ছিল ১৪৪ বার ও এক মিনিটে ছিল ২৫৬ বার। 

রাসেলের প্রশিক্ষক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য সাজিদ আহমেদ রানা জানান, রাসেল ঠাকুরগাঁও শিবগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের মানবিক বিভাগের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র। স্কুল জীবন ২০১৭ সাল থেকেই স্কিপিং রোপ খেলা শুরু তার। এক সময় জেলা থেকে বিভাগ পর্যায়ে স্কিপিং রোপে প্রথম হয় সে। বিভাগ থেকে জাতীয় পর্যায়ে স্কিপিং রোপে অংশগ্রহণ করতে গেলে অজ্ঞাত কারণে তাকে অংশগ্রহণ করা থেকে বঞ্চিত করা হয়। তখন থেকেই সে প্রতিজ্ঞা করে, একদিন এই খেলা নিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়ার।

তিনি আরও বলেন, তারপর থেকে বাসার আশপাশে বিভিন্ন সড়কের ধারে যখন যেখানে সময় পেয়েছে সেখানেই স্কিপিং রোপের চর্চা করেছে সে। নিজেকে এই খেলায় পরিপূর্ণ মনে হলে ২০১৯ সালে অনলাইনের মাধ্যমে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে আবেদন করে রাসেল। স্কিপিং রোপে এক পায়ের ওপর দুটি বিষয়ে চ্যালেঞ্জ করে সে। একটি ৩০ সেকেন্ডের অন্যটি এক মিনিটের।
 
আবেদনের তিন মাস পর গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড থেকে কিছু গাইডলাইনসহ একটি রিপ্লাই পায় রাসেল। সেখানে তারা তাদের নিয়ম মতো কিছু ভিডিও চায় তার কাছে। সেই সঙ্গে কীভাবে সেগুলো করতে হবে তারও বিস্তারিত দেওয়া হয়। এরপর কিছুদিন আরও মনোযোগ দিয়ে চর্চা করে সেই ভিডিওগুলো তাদের পাঠায় রাসেল।

প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ ডাক যোগের মাধ্যমে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড-এর দুটি সনদপত্র (সার্টিফিকেট) বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) পায় রাসেল। তার লক্ষ্য এখন সাউথ এশিয়ান গেমস ও আন্তর্জাতিকভাবে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন দেশের সঙ্গে খেলায় অংশগ্রহণ করা।
 
রাসেলের পিতা বজলুর রহমান বলেন, একজন গরিব কৃষক হয়েও যথাসাধ্য আমার ছেলেকে সহযোগিতা করেছি। আমার ছেলে আজকে এমন এক পর্যায়ে গেছে, আমার খুব ভালো লাগছে।

এমন অর্জনে অভিনন্দন ও শুভকামনা জানিয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান। পৃষ্ঠপোষকতার জন্য তার কোনো প্রয়োজন হলে তাকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন তিনি। এছাড়া তাঁর এই অর্জনে শুভেচ্ছা প্রদান করেছে জেলা ক্রীড়া সংস্থা।