অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

প্রধানমন্ত্রী রাখলেন রুবিনার আর্জি

সরকারক কইয়্যা মোক এটা বাড়ি দে বাহে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০১:২৭ পিএম, ১৫ অক্টোবর ২০২০ বৃহস্পতিবার   আপডেট: ০১:২৮ পিএম, ১৫ অক্টোবর ২০২০ বৃহস্পতিবার

‘তোরা কি সরকারি লোক বাহে? তোরা কি এটা বাড়ি দিবার পারো হামাক? এ জগতে মোর কেউ নাই। সরকারকে কইয়্যা মোক এটা বাড়ি দে বাহে।’ এই আর্তি ৩৫ পার করা বয়সী এক নারীর, নাম রুবিনা। বাড়ি দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের মধ্যমপাড়া গ্রামে। তিনি আর দশটা সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ নন, মানসিক প্রতিবন্ধী। লোকে তাকে ডাকে রুবি পাগলি নামে। 

১৫ বছর আগে রুবিনার বিয়ে হলেও দেড় বছরের মাথায় তাকে ফেলে স্বামী বিদেশে চলে যায়। স্বামী পরিত্যক্তা মানুষটি এতকাল থেকেছেন গরীব বাবার সংসারে। সেই বাবাও দুনিয়া ছেড়েছেন মাসখানেক আগে। সংসারে আপন বলতে আছে ছোট ভাই, সেও শারিরিকভাবে প্রতিবন্ধী। থাকার একমাত্র জরাজীর্ণ মাটির ঘরটি এবারের বর্ষার তোড়ে ভেঙেচুরে বেহাল দশায়। বৃষ্টির দিনে ভাঙা টিনের চালা দিয়ে পানি পড়ে ঝুঁকিপূর্ণ ওই ঘরে। দুই ভাইবোনের যেখানে খাবারই জোটে না, সেখানে ঘর সারানো হবে কেমন করে!

কিন্তু  প্রতিবন্ধীরও মাথার ওপর ছাদের দরকার হয়, দুবেলা দুমুঠো খাবারের কাছে তার পাকস্থলীও বাঁধা। তাই গ্রামে নতুন কেউ আসলেই তার কাছে এই ঘরের জন্য কাকুতি মিনতি। সম্প্রতি এক সাংবাদিকের কাছেও এই কথা পাড়েন রুবিনা। 

বলার জায়গাটি ঠিকই ছিল। রুবিনার দুর্দশার কথা গণমাধ্যমে উঠে আসে। তাতেই এ খবরটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় মারফত চলে যায় খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। এরপরে কি হতে পারে, সেটি সহজেই অনুমেয়।

সঙ্গে সঙ্গে সরকার প্রধানের নির্দেশনায় রুবিনার জন্য ঘর নির্মাণের ব্যবস্থা করা হয়। মানবতা- চারটি বর্ণ যে শুধু শব্দেই আটকে রাখার বিষয় নয়, তা আবারও প্রমাণ করলেন বন্ধবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। দেশের প্রকৃত নিঃসহায়, অসহায়, আর্তের প্রতিটি ডাক তার কানে পৌঁছে যাওয়ামাত্র মুহুর্তকাল বিলম্ব না করে তাদের পাশে দাঁড়ান তিনি। এবং একেবারেই চাননা সে খবর জানুক দেশের মানুষ। কিন্তু এমন খবরতো আর চাপা থাকেনা। 

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারের আশ্রায়ন প্রকল্পে ‘আবাসিক ভবন নির্মাণ’ খাতের আওতায়  রুবিনা বেগমকে একটি সেমি পাকা ঘর নির্মাণে অর্থও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ আছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করার।