রশীদ হায়দার আর নেই
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ১০:৫৪ এএম, ১৩ অক্টোবর ২০২০ মঙ্গলবার আপডেট: ১২:১২ পিএম, ১৩ অক্টোবর ২০২০ মঙ্গলবার
রশীদ হায়দার
কথাসাহিত্যিক ও গবেষক এবং বাংলা একাডেমির সাবেক পরিচালক রশীদ হায়দার আর নেই। মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীতে মেয়ের বাসায় মারা যান এই কথাসাহিত্যিক।
একজন গবেষক রশীদ হায়দারের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রয়েছে ব্যাপক গবেষণামূলক কাজ। যার স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ২০১৪ সালে একুশে পদক লাভ করেন। রশীদ হায়দারের মৃত্যু দেশের অপূরণীয় ক্ষতি।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। রশীদ হায়দারের জন্ম ১৯৪১ সালের ১৫ জুলাই পাবনার দোহারপাড়ায়। তিনি ১৯৫৯ সালে গোপালগঞ্জ ইনস্টিটিউশন থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৬১তে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৬৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন।
সেই ৬১ তেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় রশীদ হায়দার জনপ্রিয় পত্রিকা চিত্রালীতে কাজ শুরু করেন। ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান রাইটার্স গিল্ডের মুখপত্র পরিক্রম পত্রিকার সহকারী সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরের যাত্র ১৯৭০ সালে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ত্রৈমাসিক কৃষিঋণ পত্রিকা, সেখানেও সম্পাদকের দায়িত্বে। ১৯৭২ সালে তিনি বাংলা একাডেমিতে পরিচালকের দায়িত্ব নেন। বাংলা একাডেমির সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ায় বহুকাল। ৭২ এ কাজ শুরু করে ১৯৯৯ সালে পরিচালকের পদ থেকে অবসর নেন। পরে নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন।
বাংলা একাডেমিতে কর্মরত থাকা অবস্থায় তার শ্রেষ্ঠ কীর্তি ছিল মুক্তিযুদ্ধে স্বজন হারানো মানুষের স্মৃতিচারণা ১৩ খণ্ডের ‘স্মৃতি : ১৯৭১’। গল্পগ্রন্থ ‘নানকুর বোধি’ প্রকাশিত হয় ৬৭ তে। আর বাহাত্তরে দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে লেখা শুরু করেন জীবনের প্রথম উপন্যাস ‘গন্তব্যে’। তবে লেখাটি কোনো কারণে অর্ধসমাপ্ত থেকে যায়। তবে বেশ পরে এটি অন্য নামে প্রকাশ হয়।
রশীদ হায়দারের গল্প, উপন্যাস, নাটক, অনুবাদ, নিবন্ধ, স্মৃতিকথা ও সম্পাদনা মিলিয়ে ৭০-এর বেশি বই প্রকাশ করেন। কথাসাহিত্যে অবদান রাখার জন্য পেয়েছেন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পুরস্কার ও সম্মাননা। বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক ছাড়াও হুমায়ূন কাদির পুরস্কার, পাবনা জেলা সমিতি স্বর্ণপদক, রাজশাহী সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংকসহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।