অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ফ্রান্সকে বিদায় দিয়ে সুইস রূপকথা

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:১০ এএম, ২৯ জুন ২০২১ মঙ্গলবার   আপডেট: ০৯:১৮ এএম, ২৯ জুন ২০২১ মঙ্গলবার

স্পেন-ক্রোয়েশিয়ার ৫-৩ গোলের রোমাঞ্চের রেশ তখনও কাটেনি। এর মধ্যেই মাঠে গড়ায় ফ্রান্স-সুইজারল্যান্ড ম্যাচ। কে জানতো আগের ম্যাচের চেয়ে বেশি নাটক অপেক্ষা করছে এই ম্যাচে! কে ভাবতে পেরেছিল বিশ্বকাপজয়ী ফ্রান্সকে হারিয়ে দেবে সুইজারল্যান্ড!

কেউ ভাবুব আর না ভাবুব বাস্তবে সেটাই হয়েছে। শক্তিশালী এক প্রতিপক্ষের বিপক্ষে এগিয়ে যাওয়া পেনাল্টি মিস করা তারপর তিন গোল হজম করে শেষ মিনিটে ম্যাচে ফেরা। ৩-৩ গোলে সমতার পর পেনাল্টি শুটআউটে এমবাপের কিক ঠেকানো। সব মিলিয়ে টানটান উত্তেজনা দিয়ে শেষ হয়েছে ইউরো-২০২০ এর ১৮তম দিন। 

ছোট্ট একটা পরিসংখানই কাল রাতের মাহাত্ম বোঝাতে সম্ভব। ইউরোতে এর আগে কখনও ৮০ মিনিটে দুই গোল পিছিয়ে থেকে ম্যাচে ফিরতে পারেনি কোন দল। কাল রাতে সেটা দুইবার হয়েছে। 

সবমিলিয়ে এই ইউরো পুরোপুরি অন্যরকম। বিশেষ করে পেনাল্টি আর আত্মঘাতি গোলে। ইউরো ইতিহাসে এই আসরের আগ পর্যন্ত আত্মঘাতি গোল ছিল ৯টি। আর এবার এক আসরেই কিনা ৯টি!
 
এছাড়া এর আগে ইউরোতে কখনই কোন গোলরক্ষক আত্মঘাতি গোল হজম করেননি। কিন্তু এই ইউরোতে সেটা দেখা গেছে তিনবার্। কাল সিমনেরটা হিসেব করলেও হতো ৪ বার! আর এ আসরে এখন পর্যন্ত ৮ বার পেনাল্টি থেকে গোল হয়নি, যেটা সর্বোচ্চ। 

আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে শুরু হওয়া ম্যাচে ১৫ মিনিটে এগিয়ে যায় সুইজারল্যান্ড। স্টিভেন জুবেরের ক্রস থেকে হেডে গোল আদায় করেন হ্যারিস স্যাফেরোভিচ। প্রথমার্ধে দুই পক্ষই আরও সুযোগ পেলেও গোল আদায়ে ব্যর্থ হয়।  

দ্বিতীয়ার্ধের পাঁচ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি পায় সুইজারল্যান্ড। গোল হলে এখানেই হয়তো শেষ হতো পারতো ম্যাচ। কিন্তু নিয়তি যে লিখে রেখেছে অন্যকিছু। স্পট কিক থেকে গোল আদায় করতে পারলেন না রদ্রিগুয়েজ। ঠিক পরের মিনিটে সমতা আনে ফ্রান্স।

৫৭ মিনিটে ডিফেন্স চেরা পাসে বেনজেমার কাছে বল বাড়ান কিলিয়ান এমবাপে। কঠিন এক জায়গা থেকে বল সামনে বাড়িয়ে গোল আদায় করেন রিয়াল মাদ্রিদ স্ট্রাইকার। তার মিনিট পর আবারও স্কোরকার্ডে নাম লেখান বেনজেমা। এবার গ্রিজম্যানের বাড়ানো বল জায়ে জড়িয়ে। যা এবারের ইউরোতে বেনজেমার চতুর্থ। 

সুইসদের পিছিয়ে পড়ার হতাশা না কাটতেই ব্যবধান ৩-১ করে বসেন পল পগবা। ডি বক্সের বাইরে থেকে করা গোলটি এবারের ইউরোর অন্যতম। কিন্তু একেবারে ভেঙে পড়েনি শাকিরিরা। একের পর আক্রমণ চালায় সুইজারল্যান্ড।

৮১ মিনিটে এমবাবুর ক্রস থেকে হেড দিয়ে নিজের জোড়া গোল পূর্ণ করেন স্যাফেরোভিচ। আর ৯০ মিনিটে দূরহ কোন থেকে গোল করে সমতা আনেন গ্যাব্রানোভিচ। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে কোন দল গোল করতে না পারায় ম্যাচ যায় পেনাল্টি শুটআউটে। 

প্রথমে শট নেয়া সুইজারল্যান্ড পাঁচবারই বল জালে জড়ায়। ফ্রান্সও প্রথম চার কিক থেকে গোল আদায় করে। কিন্তু শেষ শটটি নেয়া এমবাপের বল ডান দিকে ঝাপিয়ে বাঁচান ইয়ান সোমার। সে সাথে জন্ম হয় সুইস রূপকথারও।