অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

অতিরিক্ত সময়ের রোমাঞ্চকর ম্যাচ জিতে কোয়ার্টারে ইতালি

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:২৩ এএম, ২৭ জুন ২০২১ রোববার  

গ্রুপ পর্বে যে ধারাবাহিকতায় খেলে গেছে ইতালি, অনেকে ভেবেছে সহজেই শেষ আট নিশ্চিত করবে দলটি। তবে ডেভিড আলাবা অস্ট্রিয়াও যে হাল ছাড়ার পাত্র নয়। মানচিনির শিষ্যদের ৯০ মিনিট পর্যন্ত আটকে রাখলো অস্ট্রিয়ানরা। তবে শেষ রক্ষা হয়নি, অতিরিক্ত সময়ের জোড়া গোলে শেষ আট নিশ্চিত করেছে ইতালি। 

রবিবার (২৭ জুন) ওয়েম্বলেতে অস্ট্রিয়াকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছে ইতালি। ফ্রেব্রিকো চিয়েসা ও মাটেও পেসিনার গোলের পর অস্ট্রিয়ান হয়ে ব্যবধান কমান সাসা কালাদজিক।  

ম্যাচটি জিতে ৮২ বছর আগের একটি রেকর্ডে ভেঙেছে ইতালি। ১৯৩৫-১৯৩৯ সাল পর্যন্ত টানা ৩০ ম্যাচ অপরাজিত ছিল আজ্জুরিরা। আর এবার মানচিনির অধীনে টানা ৩১ ম্যাচে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সে রেকর্ড। 

এছাড়া ইউরো ইতিহাসে সর্বোচ্চ আটবার অতিরিক্ত সময়ে গড়িয়েছে ইতালির খেলা। কিন্তু কোন বারই পায়নি গোলের দেখা। আর এবার জোড়া গোল করে সেই ইতিহাসও গড়লো মানচিনির শিষ্যরা। 

আরও একটি রেকর্ড গড়ার রাত ছিল এটি ইতালির জন্য। এর আগে ১১ ম্যাচ গোল হকম করেননি গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি ডোনারুমা। এসময় প্রত্যেক ম্যাচ জিতেছে চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। এদিকে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে ১১৪ মিনিটে একটি গোল খেলেও হয়ে গেছে রেকর্ড। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রথম কোন দল ১১৪৪ মিনিট নিজেদের জাল অক্ষত রাখতে পেরেছে। 

৬৫ মিনিটে অবশ্য একবার জড়িয়েছে ইতালির জালে। তবে ভিএআর দেখে গোলটি বাতিল করেন রেফারি। 

১৭ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো ইতালি। লিওনার্দো স্পিনাজ্জোলার পাস থেকে বক্সের মধ্যে বল পেয়ে শট নিয়েছিলেন নিকোলা বারেল্লা। অস্ট্রিয়ার গোলরক্ষক বাখম্যান শেষ মুহূর্তে একটা পা ধরে দিয়ে গোল বাঁচান।

পরের মিনিটেই প্রথমার্ধে নিজেদের একমাত্র সুযোগটি পেয়েছিল অস্ট্রিয়া। কিন্তু আরনোতোভিচ বারের ওপর দিয়ে মেরে সুযোগটি নষ্ট করেন।

৩৭ মিনিটে ইতালির গোল আটকে যায় পোস্টে। বক্সের অনেক বাইরে থেকে দূরপাল্লার এক বুলেট গতির শট নিয়েছিলেন ইম্মোবিলে। সেটা ওপরের দিকে বারে লেগে ফেরত আসে।

দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ায় অস্ট্রিয়া। গতিময় ফুটবলে ইতালির রক্ষণকে ব্যস্ত করে তুলে তারা। ৬৫ মিনিটে আনন্দের উপলক্ষও তৈরি হয়েছিল।

লেইনার উঁচু করে বল বাড়িয়ে দিয়েছিলেন বক্সের বাঁ দিকে থাকা আলাবার কাছে। আলাবা সেটা হেডে পাঠিয়ে দেন ডানদিকে আরনাটোভিচের কাছে। আরনাটোভিচ দারুণ হেডে পরাস্ত করেন ইতালির গোলরক্ষক ডোনারোমাকে। কিন্তু ভারের সাহায্যে অফ সাইড চেক করে সে গোল বাতিল করে দেন রেফারি।

এরপর দুই দলই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে লড়েছে। আক্রমণ প্রতি আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ। কিন্তু কোনো দলই শেষ পর্যন্ত ফিনিশিং টাচ দিতে পারেনি। বেশিরভাগ আক্রমণই পর্যবসিত হয়েছে লক্ষ্যভ্রষ্ট শটে। ফলে নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ হয় গোলশূন্য সমতায়।

অতিরিক্ত সময়ে এসে খেই হারিয়ে ফেলে ইতালিকে কঠিন পরীক্ষায় ফেলা অস্ট্রিয়া। আজ্জুরিদের ৯০ মিনিট আটকে রাখা দলটি দশ মিনিটের ব্যবধানে হজম করে দুই গোল।

৯৫ মিনিটে প্রথম গোলটিতে অনেকটাই অপ্রস্তুত ছিল অস্ট্রিয়া রক্ষণ। স্পিনিজ্জোলার দূর থেকে উঁচু করে বাড়ানো বল বক্সের ডানদিকে পেয়ে যান বদলি হিসেবে নামা ফেদেরিকো কিয়েসা। মুখ দিয়ে বল রিসিভ করে তা পায়ে নামিয়ে দুর্দান্ত ভলিতে জাল কাঁপান এই ফরোয়ার্ড।

১০৫ মিনিটে আরও একটি আচমকা গোল খেয়ে বসে অস্ট্রিয়া। তাদের রক্ষণে জটলা বেঁধে গিয়েছিল। এর মধ্যে বল পেয়ে যান পেসিনা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই কোনাকুনি শটে দূরের পোস্ট দিয়ে বল জালে পাঠিয়ে দেন তিনি। এটি ছিল চলতি ইউরোর শততম গোল।

অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে অস্ট্রিয়া। ১১৪ মিনিটে কর্নার থেকে তারা শোধও করে এক গোল। আলেসান্দ্রো শোফের কর্নারটা যদিও নিচু হয়ে মাটিতে পড়তে যাচ্ছিল, কিন্তু হাওয়ার গতিতে বক্সের ডানদিকে দৌড়ে এসে শুয়ে পড়ে অবিশ্বাস্য এক হেডে ২-১ করেন সাসা কালাজডিক।

তবে সম্ভাবনা জাগিয়েও ম্যাচটা পেনাল্টি শুটআউট পর্যন্ত নিতে পারেনি অস্ট্রিয়া। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে দুই গোলে ভর করেই শেষ আটে নাম লিখিয়েছে ইতালি।