অভিবাসী চাইছে বিশ্বের ‘সবচেয়ে সুখী দেশ’, কিন্তু কেন?
অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:২০ পিএম, ২২ জুন ২০২১ মঙ্গলবার আপডেট: ০৩:২২ পিএম, ২২ জুন ২০২১ মঙ্গলবার
জীবনযাত্রার মান বিবেচনায় বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে ফিনল্যান্ড। সে হিসেবে দেশটিতে স্থানান্তরিত হওয়ার কথা অনেক মানুষের। অথচ উল্টো শ্রমিক সংখ্যা কমছে দেশটিতে।
দেশটিতে অভিবাসী নিয়োগ দেয়া এজেন্সি ‘ট্যালেন্ডেট সল্যুশন’ এর কর্মকর্তা সাকু তিহাভরেনেন বলেন, আমাদের দেশে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা অনেক বাড়ছে। সমস্যা দূর করতে ব্যাপক সংখ্যক মানুষ প্রয়োজন।
বিশ্বের অনেক দেশই এখন জনসংখ্যা হ্রাস সমস্যায় জর্জরিত। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশের পাশাপাশি অনেক ইউরোপিয় দেশ এই সমস্যায় ভুগছে। তারমধ্যে সবচেয়ে তীব্রভাবে অনুভব করছে ফিনল্যান্ড।
দেশটির কর্মদক্ষ মানুষের মধ্যে ৩৯.২ শতাংশেরই বয়স ৬৫ বছরের বেশি। যা জাপানের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। জাতিসংঘের হিসেবে ২০৩০ সালে দেশটির ‘বার্ধক্য নির্ভরতা’র অনুপাত হবে ৪৭.৫ শতাংশ।
তাই ফিনল্যান্ডের সরকার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে দেশের ৫৫ লাখ জনসংখ্যার পরিষেবা বজায় রাখতে প্রতিবছর অন্তত ২০ থেকে ৩০ হাজার অভিবাসী নিয়োগ দিতে হবে।
কাগজে হয়তো জীবনযাত্রার মান, স্বাধীনতা, লিঙ্গ সমতার পাশাপাশি কম দুর্নীতি, অপরাধ ও দূষণে এগিয়ে আছে ফিনল্যান্ড। তবে অভিবাসী বিরোধী মনোভাব এবং বহিরাগতদের নিয়োগে অনীহা পশ্চিম ইউরোপের সর্বাধিক সমজাতীয় সমাজেও বিস্তৃত।
ফিনল্যান্ডের একাডেমির এক গবেষক চার্লস ম্যাথিস বলেছেন, বছরখানেকের জড়তার পরে ব্যবসায়ী এবং সরকার এখন এই সমস্যাটি বুঝতে পেরেছে এবং এটিকে স্বীকৃতি দিচ্ছে।
ম্যাথিস হলো সে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অন্যতম যারা "ট্যালেন্ট বুস্ট" প্রোগ্রামটি নিয়ে কাজ করেছেন। যার লক্ষ্য স্থানীয়ভাবে নিয়োগের মাধ্যমে কিছু অংশে আন্তর্জাতিকভাবে দেশকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা।
এই লক্ষ্যবস্তুদের মধ্যে রয়েছে স্পেনের স্বাস্থ্যকর্মী, স্লোভাকিয়া থেকে ধাতকর্মী এবং রাশিয়া, ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আইটি এবং সমুদ্র বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেয়া। কিন্তু এ প্রচেষ্টা এর আগে অনেকটা ব্যর্থ হয়েছে।
২০১৩ সালে স্প্যানের আট নার্সকে নিয়োগ দেয়া হয় পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ভাসায়। কিন্তু জিনিসপত্রের দাম, অত্যন্ত শীত ও দুর্বোধ্য ভাষার সমস্যা উদ্ধৃত করে পাঁচজনই চাকরি ছেড়ে চলে যান।
তারপর থেকে অনেকটাই নিখরচায় অভিবাসনের ব্যবস্থা করছে ফিনল্যান্ড। এই উদ্যোগের পরও ২০১৯ সালে ১৫ হাজার দেশটি ছেড়ে চলে যান। যাদের অধিকাংশই উচ্চ শিক্ষিত।
তারপর থেকেই নড়েচড়ে বসে ফিনিশ সরকার। অনেকগুলো স্টার্টাপ কোম্পানি বিদেশি প্রতিভা খুঁজে বের করতে ক্যারিয়ার সাইট খুলে বসেছে। এমন এক সাইটের প্রতিষ্ঠাতা শন রুডেন বলেন, আমরা অভিবাসীদের স্থানান্তর প্রক্রিয়া যতটা সম্ভব সহজ করার চেষ্টা করছি। ধীরে ধীরে এই সমস্যা দূর করতে কাজ করা হচ্ছে।