করোনায় সবচেয়ে নাজুক মানসিক স্বাস্থ্য
ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:২৫ পিএম, ১০ অক্টোবর ২০২০ শনিবার
করোনাভাইরাস মহামারী অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর। এর কারণ সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন থাকা, সংক্রমণভীতি, পরিবারের সদস্য হারানোর দুঃখ কষ্ট এবং এসবের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে উপার্জন ও চাকরি হারানো ও চাকরি হারানোর ভয়। শনিবার (১০ অক্টোবর) বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসে এ কথা বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘সবার জন্য মানসিক স্বাস্থ্য: অধিক বিনিয়োগ-অবাধ প্রবাহ’। করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে দিবসটির বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী কিংবা যারা করোনা জয় করেছেন, তাদের সবার মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর এই রোগটি ব্যাপক প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছে। আবার যারা করোনায় আক্রান্ত হয়নি, তারাও কোনো না কোনোভাবে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ডব্লিউএইচও বৈশ্বিক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বজুড়েই মারাত্মক সংকটে পড়েছে মানসিক স্বাস্থ্য। করোনার কারণে সব বয়সী মানুষ মানসিকভাবে বিপদগ্রস্ত হচ্ছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও জার্মানির ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ডব্লিউএইচওর তত্ত¡বাবধানে পরিচালিত সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, ৬৯ শতাংশ মানুষ যে কোনো রোগের শুরুর দিকে মানসিক কষ্টে পড়ে যান। তা ছাড়া করোনাকালে সামাজিক দূরত্ব মানতে গিয়েও মানসিক সমস্যায় ভুগছে বহু মানুষ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, একশো কোটির কাছাকাছি মানুষ মানসিক সমস্যায় ভোগে। কিন্তু খুব কম মানুষই একে গুরুত্ব দেয়। জরিপে অংশ নেওয়া ৫৭ শতাংশ ফরাসি মানসিক সমস্যা নিয়ে কথাই বলতে চায় না। জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের লোকজনের অবস্থাও প্রায় একই।
এ ছাড়া জরিপে দেখা গেছে,নারীদের তুলনায় পুরুষেরা মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলতে কম আগ্রহী। ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের তিন দেশের পুরুষেরা একই মনোভাব দেখিয়েছে।
মহামারির আগের অবস্থার তুলনায় এখন গত দুইমাসে ইথিওপিয়ার মানুষের মধ্যে বিষন্নতা তিন গুণ বেড়েছে। কানাডায় ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সীদের মধ্যে মদ্যপান বেড়েছে ২০ শতাংশ। স্পেনে শিশু ও কিশোরদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়েছে।
মহামারি শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষকে নতুন বাস্তবতায় বাঁচতে হচ্ছে। নতুন মানসিক সংকটের মধ্যে ফেলেছে। এই বাস্তবতায় বহু দেশে এখনো অফিসের কাজ করতে হচ্ছে ঘরে বসে। শিশুরা স্কুল করছে বাড়িতে। পরিবার সদস্য, প্রিয়জন, বন্ধু বা সহকর্মীদের সঙ্গে শারীরিকভাবে মেলামেশা করা থেকে মানুষ দূরে থাকছে সংক্রমণের ভয়ে। এই ভয় দূর করে নতুন ব্যবস্থায় সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে না পেরে অনেকে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছেন বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।