অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

মঙ্গলগ্রহ থেকে সেলফি পাঠালো চীনের রোভার ঝুরং

সাই-টেক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৫:৫০ পিএম, ১২ জুন ২০২১ শনিবার  

ছবিগুলোতে রোভার অবতরণের জায়গা এবং আশপাশের বিস্তৃত অঞ্চলের ভুমি দেখা গেছে

ছবিগুলোতে রোভার অবতরণের জায়গা এবং আশপাশের বিস্তৃত অঞ্চলের ভুমি দেখা গেছে

মঙ্গলগ্রহ থেকে মহাকাশযান রোভার ঝুরংয়ের ধারণ করা ছবি প্রথমবার প্রকাশ করেছে চীনের জাতীয় মহাকাশ কর্তৃপক্ষ (সিএনএসএ)। 

ছবিগুলোতে রোভার অবতরণের জায়গা এবং আশপাশের বিস্তৃত অঞ্চলের ভুমি দেখা যাচ্ছিল। একই সাথে রোভারের সেলফিও ধারণ করেন চীনের মহাকাশ গবেষকরা। তারজন্য প্রথমে অবতরণ অঞ্চল থেকে ১০ মিটার দূরে একটু উঁচূ জায়গায় নেয়া হয় রোভারকে। পরবর্তীবে রোবটিক রোভারের নিচ থেকে ক্যামেরা পৃথক করে সেলফি নেয়া হয়। 

প্রকাশিত ছবির মাধ্যমে সফলভাবে মঙ্গলগ্রহে রোভার পাঠানোর বিষয়টি প্রমাণ করলো চীন। একই সাথে অবতরণের জায়গার পাশে বড় বড় আকারের শিলা দেখা যাওয়ায় অবতরণের জায়গাও যথাযথ হয়েছে বলে মন্তব্য করা হচ্ছে।

যেখানে অনন্য চীনের রোভার

লালগ্রহ মঙ্গলে ১৫ মে সফলভারে অবতরণ করে চীনের রোভার ঝুরং। এর মাধ্যমে দ্বিতীয় দেশ হিসেবে এই গ্রহে রোভার অবতরণের স্বীকৃতি পায় দেশটি। তবে বিশেষ এক কারণে চীন এখানে অনেক এগিয়ে। 

কেননা কোন দেশই তাদের প্রথম মঙ্গল মিশনে একই সাথে অরবিট পার করা, বাইরে থেকে মঙ্গল পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি সফলভারে রোভার অবতরণ করাতে পারেনি। সেখানে প্রথম চেষ্টাতেই সবকিছুতে সাফল্য পেয়েছে চীন। 

ন্যাচার নামক সংবাদমাধ্যমকে মহাকাশ বিজ্ঞানী রবার্তো ওরোসেই বলেন, চীন তা একবারেই করেছে যা নাসার কয়েক যুগ লেগেছে। অন্যদিকে আরেক মহাকাশ গবেষক জোনাথন ম্যাকডওয়েল এটাকে ‘দুঃসাহসী পদক্ষেপি’ হিসেবে মন্তব্য করেছেন। 

যেখানে অবতরণ করেছে

মহাকাশ যানের নামটির মূলত চীনের অগ্নিদেবতা ঝুরং এর নাম অনুসরণে রাখা হয়েছে। যানটি তিয়ানওয়েন-১ রকেটে কক্ষপথ অতিক্রম করে মঙ্গলগ্রহের ইউটোপিয়া প্লানিতিয়া নামে বিস্তৃত সমভূমিতে অবতরণ করে। নাসার মঙ্গলযানও কাছাকাছি জায়গায় অবতরণ করেছিল। 

মঙ্গলগ্রহের এই অঞ্চলটি কোটি কোটি বছর পূর্বে গঠিত হয়েছিল, যখন কোনও উল্কাপিণ্ড গ্রহের পৃষ্ঠে ভেঙে পড়েছিল। আশেপাশের অঞ্চলটি বেশিরভাগ আগ্নেয়গিরির পদার্থে আবৃত।

এই অঞ্চলটি ঘুরে দেখার জন্য ঝুরং প্রথম রোভার নয়। ১৯৭৬  সালে, নাসার ভাইকিং-২ ল্যান্ডারটি আরও উত্তর দিকে ইউটোপিয়া প্লানিতিয়ায় অবতরণ করে। সেখানের ছবিসহ নমুনা হিসেবে মাটি নিয়ে আসা হয়। 

এটা কি করবে?

বর্তমানে রোবটযান ঝুরংকে তাকে বহন করে নেয়া যান থেকে পৃথক করা হচ্ছে। তারপরই শুরু হবে তিনমাসব্যাপী এই কার্যক্রম। ২৪০ কেজি ও ছয় চাকাযুক্ত রোভারটি ছয়টি পৃথক বৈজ্ঞানিক যন্ত্র দিয়ে সজ্জিত এবং এতে চারটি বৃহৎ সৌর প্যানেল রয়েছে, যার জন্য এটাকে "নীল প্রজাপতি" এর মতো দেখা যায়।

এর আগের মঙ্গল মিশনের মতো ঝুরংও চারপাশের পরিবেশ বিশ্লেষণ করবে। মিশনটি স্থানীয় পরিবেশের চারটি দিক জরিপ করবে বলে আশা করা হচ্ছে-


•    মঙ্গলগ্রহের ভূ-তাত্তিক কাঠামো
•    মাটির গঠন ও বরফের সম্ভাব্য উপস্থিতি
•    রাসায়নিক উপদান, খনিজ ও শিলার বিভিন্ন প্রকার
•    বায়ুমণ্ডল এবং পাথুরে পৃষ্ঠের শারীরিক বৈশিষ্ট্য