বিশ্ব পরিবেশ দিবস: দেশের টেকসই উন্নয়নে চাই প্লাস্টিক দূষণ রোধ
অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৪২ এএম, ৫ জুন ২০২১ শনিবার আপডেট: ১২:৪৮ পিএম, ৫ জুন ২০২১ শনিবার
পানিতে প্লাস্টিক
জনবহুল শহর কিংবা সৌন্দর্যে ভরা গ্রামের জলাশয়, ড্রেন এমনটি নদীগুলো এখন ধ্বংস হওয়ার দারপ্রান্তে। প্রত্যেকটি জায়গা এখন মশা ও পানি বাহিত রোগের প্রজনন ক্ষেত্র হয়ে উঠছে৷
পানি বোতলের মধ্যে থেকে যায় এবং একসময় এ প্লাস্টিক ক্ষুদ্র হয়ে মাইক্রোপ্লাস্টিকে পরিণত হয়। যা মানুষ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি। তিমি, ডলফিন ও কচ্ছপের যে করুণ চিত্র আমরা দেখি তা প্লাস্টিকেরই ফল। ফলে পরিবেশ সংরক্ষণে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া অতিব জরুরী।
গত ১৫ বছরে ঢাকায় প্লাস্টিক বর্জ্য সাড়ে তিনগুণ বেড়েছে। ২০১৫ সালে দৈনিক প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হতো ১৭৮ টন। ২০২০ সালে এ সংখ্যা ৬৪৬ টন। যার মাত্র ৩৭ শতাংশ রিসাইকেল হয়। এছাড়া অনেক জমিই প্লাস্টিক বোতল ও ব্যগ দিয়ে পরিপূর্ণ দেখা যায়
বিশ্ব ব্যাংকে ব্লগে বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেকটর লেখেন, আমি গতবছর সুন্দরবনের কাটাক বিচে যাই এবং সেখান থেকে দুই ঘনমিটার প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করি। অথচ এই বিপটি কক্সবাজারের মতো পর্যটক ভরপুর নয়।
করোনা মহামারি প্লাস্টিকের দূষণকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। এই মহামারি কেবল মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে না বরং পরিবেশের মারাত্বক ক্ষতিও করছে। পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জার্নাল অনুসারে প্রতি মাসে বিশ্বে ১২৯ বিলিয়নের বেশি ডিসপোজেবল মাস্ক ৬৫ বিলিয়ন গ্লাভস ছুঁড়ে ফেলা হচ্ছে। যেগুলো শেষ পর্যন্ত গিয়ে সাগরে পৌঁছায়।
এদিবে দক্ষিণ এশিয়া বাৎসরিক ৩৩৪ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদিত হয়্। এখনই লাগাম টানতে না পারলে ২০৫০ সালে তা দ্বিগুণ হবে। যা কয়েক কোটি মানুষের জীবিকা, স্বাস্থ্য, জীববৈচিত্র বিরুপ প্রভাব ফেলবে। ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে তাই প্লাস্টিক বর্জ্য কমানোই হোক আমাদের লক্ষ্য।
পার্থক্য গড়তে পারে পারস্পরিক সহযোগিতা
প্লাাস্টিক দূষণ বন্ধ করা কেবল মাত্র সবুজ উন্নয়নের হাতিয়াই নয় বরং বাংলাদেশের মানুষের জন্য নতুন চাকরির সম্ভাবনাও নিয়ে আসতে পারে। কিছু পদক্ষেপ ইতোমধ্যে বাংলাদেশ নিয়েছে। যেমন ২০০২ সালে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে প্লাস্টিকের ব্যগ ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। ২০১৮ সালে একটি ড্রাফ্টের মাধ্যমে খাদ্য, পানীয় এবং কৃষি পণ্যগুলো প্লাস্টিক প্যাকেটিংয়ে নিয়ন্ত্রণ আনা হয় এছাড়া ২০২০ সালে উপকূলীয় হোটেলগুলোতে ওয়ানটাইম প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করা হয়। এই সমস্ত উদ্যোগে যদি নাগরিক, নির্মাতা ও সরকার একত্রে কাজ করে তবে পরিস্থিতির পরিবর্তন সম্ভব।
তারুণ্য থেকে সমাধান
বিশ্বব্যাংক পরিচালিত মাল্টি-ডোনার ট্রাস্ট ফান্ড, প্রোব্লু-র দ্বারা সমর্থিত প্লাস্টিক সার্কুলারিটি ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২১-এ প্লাস্টিক দূষণ রোধে উদ্ভাবনী সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশি তরুণরা।
যেখানে একটি মাইক্রো ক্রেডিট ব্যবসায়ের মডেল ব্যবহার করে একটি ভাসমান বর্জ্য-পরিষ্কারের রোবট এবং পাশাপাশি পরিবার এবং সংস্থাগুলি পুনর্ব্যবহার করতে উত্সাহিত করার জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা ছিল। তাদের পদ্ধতি যদি ব্যবহার করা যায় তবে অবশ্যই বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব।