দুর্যোগ থেকে আরও একবার বাঁচালো সুন্দরবন, নিজে রক্ষা পাবে তো?
অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:০৯ পিএম, ৩০ মে ২০২১ রোববার আপডেট: ০১:১৬ পিএম, ৩০ মে ২০২১ রোববার
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সবচেয়ে খারপ প্রভাব থেকে রক্ষায় প্রাকৃতিক বাধা হিসেবে কাজ করেছে সুন্দরবন, যেমনটা আর আগে অসংখ্যবার হয়েছে। তবে মানুষের নিরাপত্তা এসেছে বৃহত্তর ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের উদ্ভিদ ও প্রাণীর ইকোসিস্টেম নষ্ট করে।
ঘূর্ণিঝড়ে সৃষ্ট বন্যার কারণে বৃহস্পতিবার (২৭ মে) পর্যন্ত ছয়টি হরিনকে ভাসমান অবস্থা থেকে উদ্ধার করা হয়। যার মধ্যে চারটিকে জীবিত উদ্ধার করে বনে ছেড়ে দেয়া হয়।
সুন্দরবনের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমির হোসেন জানান, অস্বাভাকি উচ্চ জোয়ারের কারণে বন কর্মীদের এবং বন্য প্রাণীদের মিঠা পানি সরবরাহ করা ৫৫টি পুকুর লবনাক্ত হয়েছে। পানি বেড়ে যাওয়ায় অনেক প্রাণীকে পুকুরের উঁচু তীরে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে।
এছাড়া ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে কমপক্ষে ১১টি জেটি, ছয় জলাশয়, দুটি বন অফিস, একটি কর্মী ব্যারাক, ১২ টি রাস্তা । তবে পণ্য জীবনে কি পরিমানণ ক্ষতি হয়েছে তা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।
এদিকে দুদিনে জোয়ারের পানি পাঁচফুট পর্যন্ত বেড়ে যাওয়ায় পুরো সুন্দরবন লবনাক্ত পানিতে ভরে গেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বেশ কিছুদিন এই লবনাক্ত পানি মাটিতে মিশে যাওয়ার কারণে বনের জীববৈচিত্রের জন্য তা হুমকি হয়ে উঠবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন, একটি দীর্ঘ অভিযোহিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সুন্দরবনের বন্যজীবন টিকে আছে তবে খাদ্য ও বাসস্থান ধ্বংস হওয়ায় জীববৈচিত্র প্রভাবিত হবে। লবনাক্ত পানি প্রাণীদের পুনরুতপাদনে বাধাগ্রস্থ করে ও রোগাক্রান্ত করে তোলে।
বঙ্গোপসাগরের তীরে অবস্থিত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সুন্দরবন প্রতিবছর তা আশেপাশের অঞ্চলকে বহু ঘূর্ণিঝড় থেকে রক্ষা করে। ঘূর্ণিঝড় আইলা, সিডর, বুলবুল, আম্পান ও সাম্প্রতিক ইয়াসও প্রথমে সুন্দরবনের উপর দিয়ে আঘাত হানে। ফলে অন্যান্য অঞ্চলে যেতে যেতে তা দুর্বল হয়ে যায়।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মাহমুদ হোসেন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এই অঞ্চলে উত্তাল ঝড়ের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। একটি দুর্যোগের পর কোন বন আগের অবস্থায় ফিরে আসতে অন্তত ২৫ বছর সময় নেয়। কিন্তু ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড় হওয়ায় সুন্দরবন সে সময় পাচ্ছে না।