সব শিক্ষার্থীর টিকার পর বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সুপারিশ
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ০৬:২৮ পিএম, ২৭ মে ২০২১ বৃহস্পতিবার আপডেট: ০৬:৩২ পিএম, ২৭ মে ২০২১ বৃহস্পতিবার
আবাসিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে সর্বশেষ ৯১ হাজার শিক্ষার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের সব শিক্ষার্থীকে করোনা ভাইরাসের টিকা দেয়ার পরই বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার জন্য সরকারকে সুপারিশ করবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
বৃহস্পতিবার (২৭ মে) ইজজিসির সম্মেলন কক্ষে এ বিষয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. ফেরদৌস জামান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘একটা পর্যায়ে সিদ্ধান্ত ছিল, যে সকল শিক্ষার্থী শুধুমাত্র হলে থাকে, তাদের টিকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া হবে। কিন্তু আজ কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সব শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়ার পরই বিশ্ববিদ্যালয় খোলার। এ সংক্রান্ত সুপারিশ আমরা খুব শিগগিরই সরকারকে দেব।’
তিনি আরও বলেন, ‘ক্লাসে তো সব শিক্ষার্থী আসবে, তাই শুধু হলের শিক্ষার্থীদের টিকা দিলেই হবে না, সব শিক্ষার্থীকে দিতে হবে। হলের শিক্ষার্থীকে অগ্রাধিকার দেয়া যেতে পারে।’
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম, প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর, প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের ও সচিব ড. ফেরদৌস জামান।
এর আগে বুধবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছিলেন, ‘আবাসিক শিক্ষার্থীদের করোনা টিকার আওতায় আনার পর বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইতোমধ্যে কতজন শিক্ষক-শিক্ষার্থী টিকা পেয়েছে সে তথ্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কাছে চেয়েছি। তবে যাদের বয়স ৪০ এর বেশি, তাদের বেশিরভাগই টিকা নিয়েছেন বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। শিক্ষার্থীদের যাদের বয়স যাদের ৪০ এর কম, তাদের বিশেষ বিবেচনায় টিকা দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন। নতুন টিকা এলেই তারা অগ্রাধিকার পাবে। এক্ষেত্রে আবাসিক শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পাবে। এ সংখ্যাটা যেহেতু বিশাল নয়, তাই দ্রুত তাদের টিকার আওতায় নিয়ে আসতে পারব বলে আশা করছি।’
এ বিষয়ে খুব শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্য ও ইউজিসির সঙ্গে বৈঠক করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষার্থীদের জন্য অ্যাপস
অনেক শিক্ষার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকা, থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে তা সংরক্ষিত না থাকার কারণে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনা যায়নি। এ জন্য বিশেষ একটি অ্যাপস তৈরি উদ্যোগ নিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। আর এ কাজে সহায়তা করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন।
সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যাতে সহজে কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই টিকার নিবন্ধন করে টিকা দিতে পারেন, সেজন্য তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের সহায়তায় একটি অ্যাপ তৈরি করা হচ্ছে। আমরা শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের তথ্যগুলো দিয়ে সহায়তা করছি।’
কবে নাগাদ অ্যাপসটি চালু হতে পারে, এমন প্রশ্নে ড. ফেরদৌস আইসিটি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।
ইউজিসির থেকে জানা যায়, সারা দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাড়ে ৩ লাখ। তাদের মধ্যে ১২০টি আবাসিক হলে ১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থীর আসন থাকলেও মূলত হলগুলোতে থাকেন ২ লাখের বেশি শিক্ষার্থী।
আবাসিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে সর্বশেষ ৯১ হাজার শিক্ষার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। তাদের পুরো তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে দিয়েছে ইউজিসি। সব মিলিয়ে ১ লাখ ৩ হাজার শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মচারীর তথ্য দেয়া হয়েছে। এ অ্যাপসের মাধ্যমে বিশেষভাবে তারা নিবন্ধন করতে পারবেন।