মঙ্গলবার   ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ || ১০ পৌষ ১৪৩১ || ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স: যশোর থেকে শারজাহ

মোঃ কামরুল ইসলাম

২০:২৬, ২৮ জানুয়ারি ২০২২

১২৯৮

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স: যশোর থেকে শারজাহ

লাল সবুজের পতাকাবেষ্টিত বাংলাদেশের একটি নবীন বিমানসংস্থা হিসেবে ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ঢাকা থেকে যশোর রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করেছে। ৭৬ আসনের দুইটি ড্যাশ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে এয়ারলাইন্সটি। অনেক স্বপ্ন, অনেক আশা, অনেক প্রত্যাশা নিয়ে যাত্রা শুরু করা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এগিয়ে চলেছে নিজের লক্ষ্য পূরণের জন্য।

প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হয় নিজের কাছে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ নিজের ভবিষ্যতের কাছে। সেই প্রতিজ্ঞা পূরণের লক্ষ্য নিয়ে স্বপ্নপূরণের ইচ্ছাগুলো পূর্ণ করে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের মানুষকে সেবা দেওয়ার প্রত্যয় নিয়ে আকাশপথকে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠার প্রথম বছরে দেশের প্রত্যেকটি চালু বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।। ঢাকা থেকে যশোরে ফ্লাইট শুরু করার পর ধারাবাহিকভাবে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সিলেট, সৈয়দপুর, রাজশাহী ও বরিশালে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে।

দেশের সবগুলো বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনার পর দুই বছরের মধ্যে আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট শুরু করার দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণা করেছিলো ইউএস-বাংলা। সেই প্রত্যয়কে বাস্তবে রূপ দিয়েছে ২০১৬ সালের ১৫ মে ঢাকা থেকে কাঠমান্ডু রুটে ফ্লাইটে পরিচালনার মধ্য দিয়ে। অনেক স্বপ্নকে সাথে নিয়ে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশ বিভূইয়ে যাত্রা শুরু করে জাতীয় বিমানসংস্থার সাথে দেশের পতাকাকে উচ্চাসনে তুলে ধরে বিদেশী বিমানসংস্থার সাথে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়।

কাঠমান্ডু রুটের ফ্লাইট শুরু করার পর ইউএস-বাংলার বিমানবহরে যুক্ত হয় ১৬৪ আসনের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাফট। এর পর বাংলাদেশিদের আধিক্য বজায় আছে এমন কয়েকটি রুটে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম রুট মাস্কাট, দোহায় ফ্লাইট শুরু করে ২০১৬ সাল শেষ হবার পূর্বেই। পূর্ব এশিয়ার দেশ সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুরে ফ্লাইট শুরু করে ২০১৭ সালে ইউএস-বাংলা। এর পর পার্শ্ববর্তী ভারতের অন্যতম গন্তব্য কলকাতায় যাত্রা শুরু করে।

বাংলাদেশের আকাশ পরিবহনে ৫০ বছরের ইতিহাসে জাতীয় বিমান সংস্থাসহ ইউএস-বাংলার পূর্বে চলাচলকারী সকল বেসরকারী বিমান সংস্থার স্বপ্ন ছিলো চীনের কোনো একটি প্রদেশে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করা। কিন্তু ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স প্রথম ও একমাত্র দেশীয় এয়ারলাইন্স ঢাকা থেকে চীনের গুয়াংজু রুটে সরাসরি রুটে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে ২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল।

গুয়াংজু রুটে ফ্লাইট শুরু করার পর চিকিৎসাসেবা নেওয়ার জন্য গমণকারী বাংলাদেশীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় গন্তব্য ভারতের চেন্নাইতে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে ২০১৮ সালের শেষদিকে। নানা প্রতিকূলতা ও কঠিন বাস্তবিক প্রতিযোগিতাকে সাথে নিয়ে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এগিয়ে চলার গল্পে যোগ করে অন্যতম পর্য্টক বান্ধব এশিয়ার অন্যতম গন্তব্য থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে।

স্বল্পসময়ের চলার পথে করোনাভাইরাসের মতো অতিমারীর সম্মুখীন হতে হয়েছে সারা বিশ্বের আকাশ পরিবহনের মতো ইউএস-বাংলাকেও। কোভিড-১৯ কালীন সময়কে চরম বাস্তবতা মেনে নিয়ে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এগিয়ে চলেছে নিজের দেখানো আলোর পথে। কঠিন সময়ে ইউএস-বাংলার লক্ষ্যচুতি ঘটেনি। কোভিডকালীন ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশিদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় রুট মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম গন্তব্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ফ্লাইট শুরু করে ইউএস-বাংলা। 

পরিকল্পনা আর বাস্তবায়নকে সাথে নিয়ে শুরু থেকে ইউএস-বাংলা এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ক্রসকান্ট্রির ধারণা থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ যশোর থেকে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং সৈয়দপুর থেকে চট্টগ্রামে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে। এশিয়ার অন্যতম গন্তব্য ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের সেবা দেওয়ার জন্য ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর ঢাকা থেকে মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে। 

যাত্রা শুরুর পর থেকে অতীত সময়ের অভিজ্ঞতাকে সাথে নিয়েই ইউএস-বাংলা নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর সাথে প্রতিযোগিতা করে দেশের আকাশ পরিবহনকে সুসংগঠিত করায় সচেষ্টা করছে প্রতিনিয়ত। একাদশ আন্তর্জাতিক গন্তব্য হিসেবে চলতি বছরে প্রথম ঢাকা থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের অন্যতম গন্তব্য শারজাহ-তে আগামী ৩০ জানুয়ারি ফ্লাইট শুরু করতে যাচ্ছে।

ইউএস-বাংলার ইচ্ছা পূরণের অঙ্গীকার নিয়ে বাংলাদেশিরা বিশ্বের যেসব দেশ কিংবা অঞ্চলে অবস্থান করছে সেসব দেশ কিংবা অঞ্চলে ফ্লাইট পরিচালনার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এই এগিয়ে চলার পথে খুব শীঘ্রই ঢাকা থেকে কলম্বো, দিল্লী, সৌদি আরবের রিয়াদ, জেদ্দা, দাম্মাম, মদিনায় ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করবে। 

দু’টি ড্যাশ ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট নিয়ে যাত্রা শুরু করা ইউএস-বাংলার বিমানবহরে মোট ১৬টি এয়ারক্রাফট রয়েছে, যার মধ্যে ৬টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০, ৭টি ব্র্যান্ডনিউ এটিআর-৭২-৬০০ ও তিনটি ড্যাশ ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এর এগিয়ে চলার গল্পের মূল চালিকাশক্তিই হচ্ছে যাত্রী সাধারণের আস্থা, সময়ানুবর্তিতা, ব্র্যান্ডনিউ এয়ারক্রাফট, ও আন্তর্জাতিক মানের ইনফ্লাইট সার্ভিসের নিশ্চয়তা।

মোঃ কামরুল ইসলাম: মহাব্যবস্থাপক-জনসংযোগ, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স লিমিটেড।

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank