সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছে প্রতিবেশী দেশ: গয়েশ্বর
সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছে প্রতিবেশী দেশ: গয়েশ্বর
বিভিন্ন দাবিতে রাজধানীতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে বিএনপি। শুক্রবার বিকালে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশ করেন নেতাকর্মীরা।
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, বর্তমান সরকারকে প্রতিবেশী দেশ ভারত নিয়ন্ত্রণ করছে। ভারতের সমর্থনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরবে কিনা তা প্রতিবেশী দেশের ওপর নির্ভর করছে। ওবায়দুল কাদেরের (আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক) কথায় তা প্রমাণিত।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা, নিঃশর্ত মুক্তি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং সব রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি এ সামবেশ ও মিছিলের আয়োজন করে।
গয়েশ্বর বলেন, প্রতিবেশী দেশের দালালি করে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রী জনগণের ভাষা বোঝেন না। তার জনসমর্থন শূন্যের কোটায়। অন্যায়ভাবে যারা বেশিদিন ক্ষমতায় থাকে, তাদের পরিণতি ভালো হয় না। ক্ষমা চাওয়ার সময়ও পাবে না।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ফেলানির মতো কাঁটাতারে ঝুলছে। এই কাঁটাতার ভাঙতে হবে। দেশ ও স্বাধীনতা নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। স্বাধীনতা রক্ষার জন্য ৭১ সালের মতো লড়াই করতে হবে।
‘বিএনপি চলছে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে’ ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপির রিমোট খালেদা জিয়া নয়তো তারেক রহমানের হাতে। আপনাদের (আওয়ামী লীগের) রিমোট কন্ট্রোল কি মোদির (ভারতের প্রধানমন্ত্রী) কাছে? আপনি ওবায়দুল কাদের নিজেই বলেছেন ভারত না থাকলে আপনারা ৭ জানুয়ারির নির্বাচন করতে পারতেন না। ভারতই আপনাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, সরকার বিএনপি ও তারেক রহমানের নাম শুনলেই ভয় পায়। তাই দুদিন পরপর তারেক রহমানকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বিএনপির কর্মীরা ক্লান্ত কিন্তু হতাশ নয়, বুকটান করে দাঁড়িয়ে আছে। আজকে মামলা চালাতে গিয়ে কর্মীরা সংসার চালাতে পারেন না, নিজের চিকিৎসা চালাতে পারেন না। তারপরও স্বাধীনতা রক্ষার জন্য বুক ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। যত জুলুমই আসুক তা মোকাবিলা করে দাঁড়ানোর শক্তি তাদের আছে।
গয়েশ্বর বলেন, অনেকে বলেন উনার (প্রধানমন্ত্রী) পায়ে মাটি নেই। থাকবে কী করে? জনগণ বা মাটির সঙ্গে তো তার কোনো সম্পর্ক নেই। জনগণের তো উনার দরকার নেই। উপজেলা নির্বাচনে গোপালগঞ্জে শেখ সেলিমের প্রার্থী এগিয়ে থাকলেও পরে রেহানার প্রার্থীকে জয়ী করা হয়। ভোট কেন্দ্রে ভোটার না থাকলেও কেন্দ্রের ভিতরে ঠিকই চলেছে ভোট ডাকাতি। বুধবার প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন থেকেও কম। ওরা (সরকার) বলে, ভোট ফেয়ার (সুষ্ঠু) হয়েছে। তবে যে যতটুকু পেয়েছে, সিল মেরেছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, নির্বাচন নিয়ে চলছে তামাশা। চারদিকে চলছে লুটপাটের সংস্কৃতি। এই দুঃশাসন জনগণ বেশি দিন মানবে না। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তিনি দেশের জনগণকে সচ্ছল করছেন। আসলে তিনি জনগণকে নয় তার ঘনিষ্ঠ, আত্মীয়-স্বজন ও ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সচ্ছল করছেন। প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজন এখন বৈশ্বিক ধনীদের তালিকায় রয়েছেন।
রিজভী বলেন, ডামি সরকার বাংলাদেশের প্রকৃত ব্যবসায়ীদের সুবিধা দিচ্ছে না, ভারতের ব্যবসায়ীদের সুবিধা দিচ্ছে। এক আদানি গ্রুপকে বিদ্যুৎ খাতে বছরে ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যবসা করার সুযোগ করে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ লোকজনকে লুটপাটের সুযোগ করে দিয়েছে। তারা আগে ছিল সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ধনী, এখন তারা বৈশ্বিক ধনীদের তালিকায় রয়েছেন। তিনি ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচনের পর ডামি উপজেলা ভোট বর্জন করায় দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানান।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- মহানগর বিএনপির আমিনুল হক, ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানি, যুবদলের এম মোনায়েম মুন্না, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, ছাত্রদলের আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়া।
সমাবেশে বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, অ্যাভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মীর সরাফত আলী সপু, আজিজুল বারী হেলাল, এবিএম মোশাররফ হোসেন, শামীমুর রহমান শামীমসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বিএনপির সমাবেশ ঘিরে শুক্রবার দুপুরে নয়াপল্টনে সড়কে ট্রাকের ওপর অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়। দুপুরে জুমার নামাজ শেষে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা সমাবেশ স্থলে অংশ নেন। মঞ্চে খালেদা জিয়ার ছবি সংবলিত বিশাল ব্যানারে লেখা ছিল- ‘মা আমায় দিচ্ছে ডাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’।
সমাবেশ শেষে মিছিলটি বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড়-ফকিরাপুল মোড় ঘুরে পার্টি অফিসের সামনে এসে শেষ হয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহনীর সদস্যদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো।
আগামীকাল শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করবে জাতীয়তাবাদী যুবদল।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- ঋণখেলাপীর মিথ্যা মামলায় ডিএমডিকে হয়রানি, এবি ব্যাংকের প্রতিবাদ
- পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ কাইয়ুম ক্লিনিক্যালি ডেড, লাইফসাপোর্ট খোলার সিদ্ধান্ত
- সরকার ই-কমার্স ফ্রেন্ডলি, এখনই ২০০০ কোটি টাকার মার্কেট এক্সপ্লোর করা সম্ভব
- জাতিসংঘ ৭৭-তম অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন শেখ হাসিনা, কি থাকছে?
- আরজে কিবরিয়ার অনুষ্ঠানে এসে ২৫ বছর পর বাবা-মাকে খুঁজে পেলেন মেয়ে
- বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মদিন আজ
- ঢাকায় বসবে ২৫৮কি.মি. পাতাল রেল, কোথা থেকে কোথায়?
- করোনা পরীক্ষায় প্রতারণাকে নির্মম বাণিজ্য বললেন ওবায়দুল কাদের
- মেট্রোরেলের আদ্যোপান্ত, ডেডলাইন জয়ে ছুটছে কর্তৃপক্ষ
- বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস
`বঙ্গবন্ধু ফিরে এলে তোমার স্বপ্নের স্বাধীন বাংলায়`