শনিবার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ || ৭ পৌষ ১৪৩১ || ১৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

চট্টগ্রামে ঠাঁইহারা দুই অনাথ শিশু পাচ্ছে কেএসআরএমের স্নেহের আশ্রয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

০০:০২, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

আপডেট: ০০:১৫, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

২৭৮৪

চট্টগ্রামে ঠাঁইহারা দুই অনাথ শিশু পাচ্ছে কেএসআরএমের স্নেহের আশ্রয়

অন্যের হয়ে জেল খাটা মিনু আক্তারের দুই সন্তান ইয়াসিন (১২) ও গোলাপের (৯) পড়ালেখা ও ভরণপোষণের দায়িত্ব নিলো দেশের অন্যতম ইস্পাত নির্মাণ শিল্প প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম। বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর প্রতিষ্ঠানের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত অনাথ দুই সন্তানের দায়িত্ব নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এমন তথ্য পাওয়া গেছে জেলা প্রশাসন সূত্রে।পরে কেএসআরএমের মিডিয়া অ্যাডভাইজার মিজানুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

মিজানুল বলেন, 'কোম্পানির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাতের আগ্রহের কথা ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। মূলত জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী কেএসআরএম করণীয় নির্ধারণ করবে।'

"কেএসআরএম চায় হতভাগ্য মিনু আক্তারের অনাথ দুই সন্তান যেনো সমাজের নিষ্ঠুরতার বলি না হয়। তারা যেনো পৃথিবীর আলো বাতাসে আর দশটা শিশুর মতো হেসে খেলে বড় হতে পারে। পৃথিবী ও জীবনের প্রতি যেনো তাদের বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি না হয়," বলেন তিনি।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান  বলেন, 'মিনু আক্তারের অনাথ দুই সন্তানের সার্বিক দায়িত্ব নিতে চাই শিল্প গ্রুপ কেএসআরএম। ইতিমধ্যে কেএসআরএমের পক্ষ  থেকে আমার সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে একাধিকবার। কেএসআরএমকে আমরা কিছু করণীয় নির্ধারণ করে দিবো। সে অনুযায়ী সন্তান দুটির ভরণপোষণের দায়িত্ব নিবে শিল্প প্রতিষ্ঠানটি।  জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা তাদের সার্বক্ষণিক খবরা-খবর রাখবো।'

এ প্রসঙ্গে মিনু আক্তারের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ বলেন, কেএসআরএমের এমন উদারতা নিঃসন্দেহে প্রসংশার দাবিদার। এর মাধ্যমে মিনুর দুই এতিম ছেলে বেঁচে থাকার নিরাপদ অবলম্বন খুঁজে পেলো। এর চেয়ে খুশির খবর আর কি হতে পারে? আমরা যতদূর জানি কেএসআরএমের এমন মহানুভব অনেক কাজের দৃষ্টান্ত রয়েছে। যুগ যুগ ধরে তারা এমন অনেক মানবিক কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি আগামীতে তাদের এমন মহানুভুব কর্মতৎপরতা অব্যাহত থাকবে। যা পিছিয়ে পড়া সমাজ ব্যবস্থায় আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করবে।   
  
স্বামী পরিত্যক্ত হতভাগ্য মিনু আক্তার তার তিন সন্তানের ভরণপোষণের আশ্বাসে অন্যের হয়ে কারাগারে যায়। কথা ছিল অল্পদিনের মধ্যে মুক্তি পাবেন। কিন্তু প্রায় তিন বছর অতিবাহিত হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আইনজীবীসহ কিছু মহানুভব মানুষের প্রচেষ্টায় দীর্ঘ আইনী প্রক্রিয়া শেষে মিনু ১৬ জুন কারাগার থেকে মুক্তি পান। এরমধ্যে নানা অভাব অনটনে মারা যায় মিনুর কন্যসন্তান জান্নাত। কারামুক্তির ১৩ দিনের মাথায় রহস্যজনক সড়ক দুর্ঘটনায় জীবন থেকে মুক্তি পান মিনু। গত ২৮ জুন দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী ফৌজদারহাট সংযোগ সড়কের আরেফিন নগর এলাকায়  মিনুকে গাড়ি চাপা দেওয়া হয়। এতে গুরুতর আহত হন তিনি। খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে ২৯ জুন ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মিনু। কোনো পরিচয় না পাওয়ায় এক দিন পরে অজ্ঞাত হিসেবে তাঁর লাশ দাফন করে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম। ৩ জুলাই রাতে পুলিশ ও পরিবার নিশ্চিত হয় যে অজ্ঞাত হিসেবে দাফন করা লাশটি মিনুর। এরই মধ্যে মিনুর বড় ছেলে অর্থাভাবে চাকুরি নেয় ষোলশহর চায়ের দোকানে। মিনুর মৃত্যুর পর রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয় বড় ছেলে ইয়াসিন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে টনক নড়ে প্রশাসনের। পুলিশের তৎপরতায় খোঁজ মেলে নারায়নগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ শিশু কিশোর সংশোধনাগারে। ছোট ছেলে গোলাপ আছেন দিনমজুর মামার আশ্রয়ে।

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank
খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত