রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১ || ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

আমদানি করা ডিম মিলবে ১০ টাকায়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

১০:৫০, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

৩৩৪

আমদানি করা ডিম মিলবে ১০ টাকায়

বাংলাদেশের কিছু পণ্যের বাজার বড় সিন্ডিকেটের দখলে ছিল। কিন্তু গত এক-দেড় বছর ধরে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতায় ছোট ছোট অনেক পণ্যের সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এতে ভোক্তাকে দুই থেকে তিনগুণ বেশি দামে পণ্য কিনতে হচ্ছে। বাজার ব্যবস্থাপনা যে সিন্ডিকেটের দখলে এ কথা কয়েকবার স্বীকারও করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তবে সিন্ডিকেটের কারণে বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার ভারতসহ কয়েকটি দেশ থেকে ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

চার প্রতিষ্ঠানকে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে চাহিদা চার কোটি ডিম। অর্থাৎ এক দিনের ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অনুমোদন পাওয়া প্রতিষ্ঠান চারটি হচ্ছে মেসার্স মীম এন্টারপ্রাইজ, প্রাইম এনার্জি ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড সাপ্লাইয়ার্স, টাইগার ট্রেডিং এবং অর্ণব ট্রেডিং লিমিটেড। দেশে ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ার পর কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ডিম আমদানি করতে অনুমতি চেয়েছিল। তাদের মধ্য থেকে চারটি প্রতিষ্ঠানকে সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডিম আমদানির এ অনুমতি দেয়।

বাজারে ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ কিছুদিন ধরেই ডিম আমদানি নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। গত বৃহস্পতিবার বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সংবাদ সম্মেলনে আলু ও পেঁয়াজের সঙ্গে ডিমের দামও বেঁধে দেন।

প্রতিটি ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করে দিয়ে ওই সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বেঁধে দেওয়া দামে ডিম বিক্রি করা না হলে আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে।’ এরই ধারাবাহিকতায় ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, ভারতে খুচরা পর্যায়ে ডিমের পিস গড়ে ৫ রুপিতে। সে হিসাবে বাংলাদেশি মুদ্রায় তা ৬ টাকা ৬৫ পয়সা। কিন্তু আমদানিকারকরা বিশাল অঙ্কে আমদানি করবেন। সাধারণত তখন ৩ থেকে ৪ রুপিতে দাম পড়ার কথা। যেহেতু মন্ত্রী নিজেই ১২ টাকা দাম নির্ধারণ করে দিয়েছেন। ৬ থেকে ৭ টাকা দরে আমদানি করা ডিম ১২ টাকায় বিক্রি হলে লাভবান হবে আমদানিকারকরাই।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশে প্রতিদিন চার কোটি ডিমের প্রয়োজন হয়। এজন্য দেশের বাজারে ডিমের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে প্রাথমিক পর্যায়ে সরকার আমদানির পর বাজার স্থিতিশীল আছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করবে এবং বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, দেশের বাজারে প্রতিটি ডিম তারা ১০ টাকার কমে বিক্রি করতে পারবে। ভারত থেকে ডিম আনতে সময় লাগতে পারে এক সপ্তাহ।

এর আগে পেঁয়াজের সংকট দেখা দেওয়ার পর আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। কিন্তু আমদানির পর পেঁয়াজের দাম না কমে উল্টো আরও বেড়েছিল।

যে চার শর্তে ডিম আমদানির অনুমতি : ডিম আমদানি করার ক্ষেত্রে চারটি শর্ত দেওয়া হয়েছে। এর প্রথমটি হলো এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লুমুক্ত দেশ থেকে ডিম আমদানি করতে হবে। দ্বিতীয়ত, আমদানি করা ডিমের প্রতিটি চালানের জন্য রপ্তানিকারক দেশের সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের দেওয়া এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু ভাইরাস ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ামুক্ত সনদ দাখিল করতে হবে।

এ ছাড়া নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি করা যাবে না এবং সরকারের অন্যান্য বিধিবিধান প্রতিপালন করতে হবে এমন দুটো শর্তের কথা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানিয়েছেন, ঠিক কবে ডিম আমদানি হবে তা চার প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। তবে তাদের বলা হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব ডিম আমদানি করতে হবে। তিনি বলেন, যেহেতু ঋণপত্র খুলে আমদানি করতে হবে, সে ক্ষেত্রে কিছুটা সময় লাগতে পারে।

আমদানি করা ডিমের দাম কী হবে এ প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্য সচিব বলেন, বাজারে যেহেতু ডিমের খুচরা মূল্য ১২ টাকা করে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, তাই আমদানি করা ডিমও প্রতিটি ১২ টাকার বেশি দামে বিক্রি করা যাবে না। তবে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, প্রয়োজন হলে আরও ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে। ডিমের বাজারে সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

 

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank
খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত