কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি
কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি
কুড়িগ্রামের বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত ১৫ ঘণ্টায় দুধকুমার নদীর পানি ৩১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছ। ধরলা নদীর তালুক শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার ও সদর পয়েন্টে বিপৎসীমার ০১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কিছুটা কমে নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬৮, চিলমারী পয়েন্টে ৭২ ও হাতিয়া পয়েন্টে ৭১ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
নতুন করে দুধকুমার ধরলার পানি বাড়ায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে। জেলার ৪১টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এতে দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শত শত বাড়ি ঘর পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। বাড়িঘর ছেড়ে বন্যাদুর্গতরা উচুস্থানে ও ফ্লাড সেন্টারে অবস্থান নিয়েছে। এদিকে বন্যাক্রান্ত হওয়ায় ৩৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান ও ১০৩টি মাধ্যমিক এবং মাদরাসার সামষ্টিক মূল্যায়ন বন্ধ ঘোষণা করেছে শিক্ষা বিভাগ।
বন্যার পানিতে ঘরবাড়ী তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে মানুষজন। বানভাসি পরিবারগুলো বসতবাড়িতে বাঁশের মাচান, নৌকা ও কলাগাছের ভেলায় আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। অধিকাংশ পরিবারে ৫ দিন ধরে চুলা জ্বলছে না। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে তাদের গৃহপালিত পশুপাখি। চারণ ভূমি তলিয়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের তীব্র সংকট। বানভাসিদের অনেকেই গবাদি পশুসহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। গ্রামাঞ্চলের কাঁচা-পাকা সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বানভাসিদের মাঝে খাদ্য, বিশুদ্ধ খাবার পানি ও শুকনো খাবারের এবং জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ায় চরম ভোগান্তিতে বন্যা কবলিত মানুষ।
সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের মিলপাড়া এলাকার আব্দুল মতিন বলেন, পানি হু হু করে বাড়ছে। ঘরেও পানি প্রবেশ করেছে। চিন্তা ভাবনা করছি উঁচু স্থানে আশ্রয় নেয়ার।
সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর বলেন, আমার ইউনিয়নের অনেক চর ও দ্বীপ চর তলিয়ে গেছে।
অনেক কষ্টে বসবাস করছে চরের মানুষ। এছাড়াও কুড়িগ্রাম-যাত্রাপুর সড়কের দুটি স্থানে পানি ওঠায় যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এ ইউনিয়নে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা ৩০ হাজারের বেশি।
নাগেশ্বরী উপজেলার কেদার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আ খ ম ওয়াজিদুল কবির রাশেদ জানান, দুধকুমারের পানি বাড়ায় তার ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ড তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, এখন পর্যন্ত বানভাসিদের জন্য ৯ উপজেলায় ২৮২ মেট্রিক টন চাল ও ২১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা বিতরণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মজুত আছে ৩৯৫ মেট্রিক টন চাল ও ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ৫০০ প্যাকেট শুকনা খাবার। যা পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, সরকারের নির্দেশনায় স্থানীয় প্রশাসন বন্যার্তদের পাশে থেকে দুর্ভোগ কমাতে সবধরনের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বন্যা মোকাবিলায় সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ৪০৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র আশ্রয় নিয়েছেন এক হাজার ২৪৬ জন।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- ঋণখেলাপীর মিথ্যা মামলায় ডিএমডিকে হয়রানি, এবি ব্যাংকের প্রতিবাদ
- পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ কাইয়ুম ক্লিনিক্যালি ডেড, লাইফসাপোর্ট খোলার সিদ্ধান্ত
- সরকার ই-কমার্স ফ্রেন্ডলি, এখনই ২০০০ কোটি টাকার মার্কেট এক্সপ্লোর করা সম্ভব
- জাতিসংঘ ৭৭-তম অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন শেখ হাসিনা, কি থাকছে?
- আরজে কিবরিয়ার অনুষ্ঠানে এসে ২৫ বছর পর বাবা-মাকে খুঁজে পেলেন মেয়ে
- বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মদিন আজ
- ঢাকায় বসবে ২৫৮কি.মি. পাতাল রেল, কোথা থেকে কোথায়?
- করোনা পরীক্ষায় প্রতারণাকে নির্মম বাণিজ্য বললেন ওবায়দুল কাদের
- মেট্রোরেলের আদ্যোপান্ত, ডেডলাইন জয়ে ছুটছে কর্তৃপক্ষ
- বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস
`বঙ্গবন্ধু ফিরে এলে তোমার স্বপ্নের স্বাধীন বাংলায়`