কক্সবাজার অতিক্রম করছে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’, উপকূলে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি
কক্সবাজার অতিক্রম করছে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’, উপকূলে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি
প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করছে। এ সময় ঝড়ো বাতাসে গাছপালা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডসহ বাইরে নানা সরঞ্জাম উপড়ে গিয়ে যান চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) রাত ৮টা থেকে ঘূর্ণিঝড়টির উপকূল অতিক্রম শুরু হয়।
জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে সোমবার রাত থেকেই বৃষ্টিপাত শুরু হয়। মঙ্গলবার সারাদিন বৃষ্টি অব্যাহত ছিল। এ সময় হালকা বাতাস হলেও সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে হঠাৎ ঝড়ো হাওয়া শুরু হয়। এ সময় বৃষ্টিপাতও শুরু হয়। বাতাসের তীব্রতা এতই বেশি ছিল যে, সড়কে চলাচল করা ইজিবাইকগুলো উড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়।
এতে সড়কের উভয় পাশের ব্যাংক-বীমা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ছোট-বড় সাইনবোর্ড বাতাসের তোড়ে উপড়ে সড়কে পড়ে যায়। বিভিন্ন স্থান হতে টিনসহ হালকা পণ্যগুলো উড়ে একস্থান হতে অন্যস্থানে সরে যায়। সমানে ভেঙে পড়েছে গাছের ডালপালা। শহরের অনেক উপসড়কেও গাছ ভেঙে পড়ে জন চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ঝড়ো বৃষ্টি শুরুর পর থেকেই বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ।
কক্সবাজারের সহকারী আবহাওয়াবিদ ইমাম উদ্দিন জানান, ‘হামুন’ আরও দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় সন্ধ্যায়। সন্ধ্যা ৭টার কিছু পরে ঝড়ো বাতাসসহ কক্সবাজারের উপকূল অতিক্রম শুরু করে এটি। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সমুদ্রবন্দরে ৭ নম্বর ও মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৫ নম্বর বিপৎসংকেত এখনো বহাল রয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, সন্ধ্যা সাতটার পর থেকে ঘূর্ণিঝড় হামুনের অগ্রভাগ কক্সবাজারসহ উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে বলে খবর পেয়েছি। শহরের মতো উপকূলের গ্রামের অনেক কাঁচা ঘরবাড়ির চালা, গাছপালা উপড়ে পড়েছে বলে প্রাথমিকভাবে খবর পেয়েছি। পুরো অতিক্রম করা শেষ হলে বুধবার দিনের বেলা ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে সঠিক জানা যাবে।
এর বিকাল সাড়ে ৪টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড়টি রাতে দুর্বল হয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এর অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারী (৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বর্ষণ অব্যাহত আছে।
এছাড়া প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর কেন্দ্রের কাছে সাগর উত্তাল রয়েছে।
এ অবস্থায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদসংকেত কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদসংকেত নামিয়ে ৭ নম্বর বিপদসংকেত, পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদসংকেত নামিয়ে ৫ নম্বর বিপদসংকেত ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৫ নম্বর বিপদসংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এছাড়া, উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এর প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে। এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- ঋণখেলাপীর মিথ্যা মামলায় ডিএমডিকে হয়রানি, এবি ব্যাংকের প্রতিবাদ
- পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ কাইয়ুম ক্লিনিক্যালি ডেড, লাইফসাপোর্ট খোলার সিদ্ধান্ত
- সরকার ই-কমার্স ফ্রেন্ডলি, এখনই ২০০০ কোটি টাকার মার্কেট এক্সপ্লোর করা সম্ভব
- জাতিসংঘ ৭৭-তম অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন শেখ হাসিনা, কি থাকছে?
- আরজে কিবরিয়ার অনুষ্ঠানে এসে ২৫ বছর পর বাবা-মাকে খুঁজে পেলেন মেয়ে
- বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মদিন আজ
- ঢাকায় বসবে ২৫৮কি.মি. পাতাল রেল, কোথা থেকে কোথায়?
- করোনা পরীক্ষায় প্রতারণাকে নির্মম বাণিজ্য বললেন ওবায়দুল কাদের
- মেট্রোরেলের আদ্যোপান্ত, ডেডলাইন জয়ে ছুটছে কর্তৃপক্ষ
- বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস
`বঙ্গবন্ধু ফিরে এলে তোমার স্বপ্নের স্বাধীন বাংলায়`