শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪ || ১৪ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১ || ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের মুক্তির দাবি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক’র

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

২৩:০০, ৮ এপ্রিল ২০২২

আপডেট: ২৩:০৬, ৮ এপ্রিল ২০২২

৪৪৩

শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের মুক্তির দাবি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক’র

‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগে গ্রেপ্তার মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার বিনোদপুর রাম কুমার উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞানের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের নিঃশর্ত মুক্তি চেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।

বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) রাতে সংগঠনটির ৭২ জন শিক্ষক এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল বিজ্ঞানের চর্চায় নিবেদিতপ্রাণ একজন এবং তাঁর একান্ত সত্তাটি আপাদমস্তক শিক্ষকতারই সত্তা। কারণ যতটা ধৈর্য্য ধরে তিনি তাঁর শিক্ষার্থীদের উস্কানিমূলক অযাচিত প্রশ্নের বিন্দুমাত্র বিরক্তি প্রকাশ ব্যতীত উত্তর করে গেছেন তা তাঁর বিনয় ও জ্ঞানেরই বহিঃপ্রকাশ। এমন মহান একজন শিক্ষককে যেখানে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মানিত করা প্রয়োজন, সেখানে রাষ্ট্র তাকে কারাগারে বন্দী করেছে।হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষের কথোপকথনের লিখিত রূপ আমরা পড়েছি এবং ওই আলাপচারিতাকে স্বাভাবিক এক বিতর্ক বলেই মনে করছি। এ ঘটনায় শিক্ষকের দিক থেকে ধর্মীয় অবমাননার কোনো প্রয়াস ছিল না, বরং তাঁর শিক্ষকসুলভ যুক্তি দিয়ে শিক্ষার্থীদের বোঝানোর মনোভঙ্গি স্পষ্ট ছিল। যদিও শিক্ষার্থীর দিক থেকে ছুঁড়ে দেওয়া প্রশ্নগুলো উদ্দেশ্যমূলক ছিল, এমনটা ভাবার অবকাশ রয়েছে। বক্তব্য রেকর্ড করে অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়া ও মামলা হওয়ার পর এ ধারণা আরও স্পষ্ট হয়।’

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক বিবৃতিতে আরও বলেছে, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই যে, এদেশের জন্য শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের মতো শিক্ষকেরই আজ বেশি প্রয়োজন। শিক্ষক ও নাগরিক হিসেবে আমরা মনে করি শিক্ষকের কাজই হলো শিক্ষার্থীদের চিন্তা-জগতকে প্রসারিত করতে সাহায্য করা, তাদের মধ্যে জানার কৌতূহল সৃষ্টি করা, প্রশ্ন করার সাহস সঞ্চার করা ও অনুসন্ধিৎসু মন তৈরি করা। হৃদয় এই চেষ্টাই করেছেন। কারও দ্বিমত থাকলে তর্ক-বিতর্ক হবে, সহনশীলতাসহ যুক্তি-পাল্টা যুক্তির মধ্য দিয়ে জ্ঞানের জগৎ সম্প্রসারিত হবে। কিন্তু মতামতের জন্য জোরজুলুম হবে কেন? একদিকে এক ধর্মীয় গোষ্ঠীর দাবির মুখে পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন আনা হচ্ছে, পাশাপাশি অন্য কেউ ঠিক করে দিতে চাচ্ছে ক্লাসে কী পড়ানো যাবে, কী যাবে না? সমাজে এমন এক পরিবেশ তৈরী হয়েছে যেখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে মুখোমুখি দাঁড় করানো হচ্ছে, পোশাক-পরিচ্ছদের স্বাভাবিক অংশ কপালের টিপের জন্য জনপরিসরে হেনস্থা হচ্ছে নারী, ছবি ছাড়াই পরিচয়পত্র তৈরীর দাবি উঠেছে।

আটক শিক্ষকের দ্রুত মুক্তি দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক থেকে আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, অবিলম্বে হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। তাকে হেনস্তা করার জন্য দুঃখপ্রকাশ করতে হবে। যাঁরা অসহিষ্ণুতা, প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন, তদন্তের মাধ্যমে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।’

বিবৃতিতে সই করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, কাবেরী গায়েন, সহযোগী অধ্যাপক কাজলী সেহরীন ইসলাম ও খোরশেদ আলম, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাসনীম সিরাজ মাহবুব, যুক্তরাষ্ট্রের বার্ড কলেজের এক্সপেরিমেন্টাল হিউম্যানিটিজের ভিজিটিং প্রফেসর ফাহমিদুল হক, অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুশাদ ফরিদী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আর রাজী ও সুদীপ্ত শর্মা, সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক মাইদুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক কাজী শুসমিন আফসানা, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের গৌতম রায়সহ অন্যান্যরা।

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank
খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত