আলুর দাম বাড়ার নেপথ্যে কি সিন্ডিকেট?
আলুর দাম বাড়ার নেপথ্যে কি সিন্ডিকেট?
দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নতুন অস্বস্তির নাম আলু। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন উচ্চতায় অবস্থান করছে বিভিন্ন শ্রেনীর পেশার ক্রেতার প্রয়োজণীয় এই পণ্যের মূল্য। ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি আলুর মুল্য এখন ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আকস্মিক দ্বিগুন মূল্য বৃদ্ধির কারণ এখনও অজানা। তবে হিমাগারে সংরক্ষণ করা মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারসাজিই আলুর মূল্য দ্বিগুন হওয়ার নেপথ্য কারণ বলে অভিযোগ এবং হঠাৎ আলুর মূল্য বাড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে ওই সিন্ডিকেটই জড়িত বলে সাধারণ ক্রেতা ও কৃষকরা দাবী করেছেন।
অন্যদিকে সুবিধাভোগী এই ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট মূল্য বৃদ্ধির নেপথ্য আড়ালে রাখতে ঢাল বানিয়েছে করোনা ভাইরাসকে। বলছেন, এই সঙ্কট সৃষ্টির ফলে আলুর দাম বেড়েছে।
মুন্সীগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচারক এ বি এম অহিদুর রহমান বলেন, আলুর দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। আলু উৎপাদনে শীর্ষ জেলা মুন্সীগঞ্জে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। সংরক্ষণও হয়েছে যথাযথ। হিমাগারগুলোতে আলুর কোন রকম ক্ষতি হয়নি।
কৃষি বিভাগ বলছে, তারপরও এই দাম বৃদ্ধিতে সহজেই অনুমেয় যে, আলুর বাজার এখন একটি সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে। তাই সংরক্ষণকারী কৃষক হিমাগারে গিয়েও তার আলু বিক্রি করতে পারছে না। এ জন্য মধ্যস্বত্ত্বভোগী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারসাজিই মূলত আলুর মূল্য দ্বিগুন বৃদ্ধির নেপথ্য কারণ বলে কৃষি বিভাগ, কৃষক, সাধারণ বিক্রেতা ও ক্রেতারা দাবি করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আলু উৎপাদনে দেশের শীর্ষ জেলা মুন্সীগঞ্জের ৬৬টি হিমাগারে পর্যাপ্ত আলু সংরক্ষিত আছে। তারপরও করোনাভাইরাস ও বন্যায় সবজির দাম বাড়তি থাকার কথা বলে আলু সংরক্ষণকারী বড় বড় মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ী, কতিপয় স্বচ্ছল কৃষক ও হিমাগার মালিকপক্ষ মিলে সিন্ডিকেট করে আলুর দাম বাড়িয়েছে। বর্তমানে জেলার হিমাগারগুলোতে পাইকারী আলু ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা কেজি আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪৬ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মোঃ আল মামুন জানান, এবার জেলায় ৩৮ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের পর ১৩ লাখ ৫১ হাজার ১২৯ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়। এর মধ্যে ৬০ থেকে ৬৫ হাজার মেট্রিক টন আলু বীজ হিসেবে সংরক্ষন করা হয়। প্রায় ৮ লাখ মেট্রিক টন আলু বিভিন্নভাবে সংরক্ষনসহ কম মূল্যে বিক্রি করে দেয়। ৫ লাখ ৫১ হাজার মেট্রিক টন আলু সংরক্ষন করা হয় জেলার ৬৬টি হিমাগারে। এর মধ্যে হিমাগারে সংরক্ষিত ২ লাখ মেট্রিক টন আলুর মালিক মধ্যস্বত্ত্বভোগী ব্যবসায়ীরা। বাকী ৩ লাখ ৫১ হাজার মেট্রিক টন আলু কৃষকের। জেলায় ৭৮ হাজার কৃষক পরিবারে ৪ লাখ ৬৮ হাজার সদস্য কৃষিকাজে জড়িত। চাহিদার চেয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় আলু উৎপাদন বেশী হওয়ায় গত ৪টি মৌসুমে মুন্সীগঞ্জের আলু ব্যবসায়ীরা লোকসানের শিকার হয়।
মুন্সীগঞ্জের রিভার ভিউ কোল্ড স্টোরেজের মালিক ও পঞ্চসার ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বলেন, কৃষকের সংরক্ষিত আলু নষ্ট হয়ে যায়, তার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য কিছু আলু ক্রয় করা হয়। কিন্তু হিমাগার মালিকরা কখনও আলু কেনার পর সংরক্ষনে রাখেন না।
বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মোঃ মোশারফ হোসেন পুস্তি বলেছেন, সংরক্ষণ মৌসুমের সময়ে করোনা আতঙ্কের কারণে অস্বাভাবিক আলু কিনেছে ক্রেতারা। ফলে বাজারে অতিরিক্ত চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামও বেড়েছে। তবে এর সঙ্গে কোনো সিন্ডিকেট জড়িত কিনা তার জানা নেই বলে দাবী করেন অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান।
আলু সংরক্ষণে সারাদেশে ৪২৯টি হিমাগারের মধ্যে ৪০০টির মতো চালু রয়েছে। এগুলোতে ৫৫ লাখ টন আলু সংরক্ষণ করার সুযোগ থাকলেও এবার প্রায় ৪০ লাখ টন আলু সংরক্ষণ হয়েছে।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- ঋণখেলাপীর মিথ্যা মামলায় ডিএমডিকে হয়রানি, এবি ব্যাংকের প্রতিবাদ
- পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ কাইয়ুম ক্লিনিক্যালি ডেড, লাইফসাপোর্ট খোলার সিদ্ধান্ত
- সরকার ই-কমার্স ফ্রেন্ডলি, এখনই ২০০০ কোটি টাকার মার্কেট এক্সপ্লোর করা সম্ভব
- জাতিসংঘ ৭৭-তম অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন শেখ হাসিনা, কি থাকছে?
- আরজে কিবরিয়ার অনুষ্ঠানে এসে ২৫ বছর পর বাবা-মাকে খুঁজে পেলেন মেয়ে
- বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মদিন আজ
- ঢাকায় বসবে ২৫৮কি.মি. পাতাল রেল, কোথা থেকে কোথায়?
- করোনা পরীক্ষায় প্রতারণাকে নির্মম বাণিজ্য বললেন ওবায়দুল কাদের
- মেট্রোরেলের আদ্যোপান্ত, ডেডলাইন জয়ে ছুটছে কর্তৃপক্ষ
- বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস
`বঙ্গবন্ধু ফিরে এলে তোমার স্বপ্নের স্বাধীন বাংলায়`