সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১ || ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

নবনির্বাচিত চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর সাক্ষাৎকার

বিড়াল সাদা না কালো দেখার দরকার নেই, ইঁদুর ধরলেই হলো

ইমরান এমি, চট্টগ্রাম

২০:২৮, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২১

আপডেট: ২০:৩৩, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২১

২০৯৯

নবনির্বাচিত চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর সাক্ষাৎকার

বিড়াল সাদা না কালো দেখার দরকার নেই, ইঁদুর ধরলেই হলো

চট্টগ্রামের নবনির্বাচিত মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী
চট্টগ্রামের নবনির্বাচিত মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়েছে গত ২৭ জানুয়ারি। ইতিমধ্যে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নামে গেজেটও সম্পন্ন করেছে সরকার। শপথ এখনো বাকি থাকলেও ইতিমধ্যে নতুন মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীকে ফুল দিয়ে বরণ করে নিচ্ছেন অনেকে। সিটি করপোরেশনের অনেক কর্মচারী-কর্মকর্তা গিয়ে দিচ্ছেন ধরণা। 

সোমবার রাতে তিনি মুখোমুখি হয়েছেন অপরাজেয় বাংলার সাথে। বলেছেন চট্টগ্রাম মহানগরীকে নিয়ে নিজের নানা পরিকল্পনার কথা। আওয়ামী লীগের এম রেজাউল করিম চৌধুরী তার নির্বাচনী ইশতেহারে ৪১টি ওয়ার্ডে স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা আর শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনসহ নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আগামী ৫ বছরের নিজের প্রতিশ্রুতির কতটুকু পূরণ করতে পারেন তিনি তা দেখার অপেক্ষায় নগরবাসী। 

৪১ ওয়ার্ডে স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব কি-না জানতে চাইলে এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ৪১ ওয়ার্ডে না থাকলেও প্রায় ওয়ার্ডে সিটি করপোরেশনের খাস জমি রয়েছে। আর যে সব ওয়ার্ডে জায়গা পাওয়া যাবে না সে ওয়ার্ডের ধনাঢ্য ব্যক্তি যারা আছেন, তাদের জায়গা দিতে অনুরোধ করবো। প্রয়োজনে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য যিনি জায়গা দিবেন, তার নামেই হবে সে স্বাস্থ্য কেন্দ্র। আমি সমাজের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের অফার করবো, বিড়াল সাদা না কালো সেটা দেখার দরকার নাই ইঁদুর ধরলে হলো।

রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, সিটি করপোরেশনের অনেক জায়গা আছে বিভিন্ন ওয়ার্ডে, তা প্রভাবশালীরা দখল করে রেখেছে। সেসব জায়গা উদ্ধার করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। ৪১ ওয়ার্ডের সবগুলোতে চেষ্টা করবো মেয়াদ থাকতে এসব করার, না পারলে শতে ৮০ শতাংশ করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করবো। পরিকল্পনা তো থাকতে হবে, যদি শেষ করতে না পারি পরবর্তীতে যিনি আসবেন তিনি করবেন। 

নগরীর যানজট নিরসনে ট্রাফিক সিস্টেম পুলিশের হলেও তা ডিজিটালাইজ করার উদ্যোগের কথা ইশতেহারে জানিয়েছেন তিনি। ফুটপাত দখলের কারণে যানজট, আর সে ফুটপাত অতীতে কেউ উচ্ছেদ করতে পারেনি, আপনার দ্বারা সম্ভব কি না এমন প্রশ্নের জবাবে নবনির্বাচিত মেয়র রেজাউল করিম বলেন, ফুটপাতের হকারদের হঠাৎ উচ্ছেদ করলে তারা যাবে কোথায়? আমি একবার আমার বহদ্দারহাট এলাকার সব হকার উচ্ছেদ করেছিলাম। কয়েক সপ্তাহ তাদের কাউকে বসতে দেয়নি। কিন্তু এরপর তারা পরিবার নিয়ে আমার উঠানে জমায়েত হয়েছে, তাদের অনেকে অনাহারে ছিল সেই ক’দিন। তাদের চেহারার দিকে তাকিয়ে মানবিক কারণে আবার বসতে দিতে হয়েছে। সে অভিজ্ঞতায় বলতে চাই, আমি যেটা করবো সেটা স্থায়ীভাবে করবো। হকারদের স্থায়ী কর্মসংস্থান ব্যবস্থা করবো। হকার মার্কেট করলে যে সমস্যা সমাধান হবে তা নয়। আর হকার মার্কেট এখন যেটা আছে তাতে কয়জনই বা হকার আছে। তাদের তো এতো পুঁজি নেই, তারা যে দোকান নিবে। তাই পরিকল্পনা করছি শহরের যে সব এলাকায় জনসমাগম কম হয় সেখানে তাদের জায়গা দেওয়ার, যাতে যানজট বা জনভোগান্তি না হয়।
 
মশার যন্ত্রনায় নগরবাসী অতিষ্ঠ, সে ক্ষেত্রে ব্যবস্থা কি নেবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রথম ১০০ দিনের কার্যক্রমে মশার বিষয়টি রয়েছে। মশা বড় বিরক্তিকর, কে মেয়র আর কে আমজনতা মশা তা চেনে না। যাকে পায় তার রক্ত খায়। এটার বিষয়ে উদ্যোগ নিবো, শতভাগ না হলেও তা ৮০% মশক নিধন করবো ইনশাল্লাহ।

নগরীর সৌন্দর্যবর্ধন নিয়ে প্রশংসার সাথে সমালোচনা রয়েছে, সে বিষয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সৌন্দর্যবর্ধন করতে হবে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য, ব্যবসার জন্য নয়। ফুটপাত দখল করে কেন ব্যবসা কেন্দ্র গড়তে হবে। এটা আমি সমর্থন করি না। সৌন্দর্যবর্ধন সুন্দরের জন্য, জনগণের সুবিধার জন্য। সৌন্দর্যবর্ধনের নামে সৌন্দর্যহানি কখনো কাম্য নয়।

নতুন করে বিলবোর্ড বসার আশঙ্কা করছেন নগরবাসী, সে আশঙ্কা কি সত্য হবে এমন প্রশ্নের জবাবে নবনির্বাচিত মেয়র বলেন, অতীতে কে-কি করছে সেটা আমার দেখার বিষয় না। আমি নিজেও বিলবোর্ডের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। নগরের টাইগারপাস দিয়ে গেলে মনে হয় বিদেশের কোনো সড়ক দিয়ে যাচ্ছি। এক সময় মানুষ টাইগারপাসসহ নগরীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিলবোর্ডের কারণে দেখা যেত না। এখন মানুষ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারছে। বিলবোর্ড হবে পরিকল্পিতভাবে, যেন নগরীর সৌন্দর্যহানি হয় এমনভাবে না, আমি সৌন্দর্যহানির পক্ষে না। শহরের জন্য যেটা সুন্দর হবে, যেটা ভালো হবে, সেটা করবো। 
তিনি বলেন, নগরে যে বইমেলা হয়ে আসছে তা আরো আধুনিক করা হবে। নগরের বুদ্ধিজীবি, সাংবাদিক, শিক্ষকসহ সকলকে নিয়ে কমিটি গঠন করে তাদের সমন্বয়ে পরামর্শে কাজ করবো। 

চট্টগ্রামকে নিয়ে সার্বিক পরিকল্পনা কি জানতে চাইলে রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বিশ্বমানের শহর গড়ে তুলতে অনেক কিছু দরকার। প্রাকৃতিকভাবে অপরূপ সুন্দর আমাদের চট্টগ্রাম। এ শহরে কিশোর-কিশোরীদের খেলার মাঠ নাই। আমার পরিকল্পনা আছে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে যেখানে খালি জায়গা পাওয়া যাবে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে ছোট ছোট মাঠ গড়ে তুলবো। চট্টগ্রামের কয়েকটি স্থানে সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স বা মুক্তমঞ্চ গড়ে তোলার ইচ্ছে আছে। ধনাঢ্য ব্যক্তিদের যদি এতে যুক্ত করা যায়, সে ক্ষেত্রে মনে হয় কাজগুলো করা অনেক সহজ হবে। তাদেরও তো সমাজ ও দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা আছে।

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank
খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত