চট্টগ্রামে রহমতগঞ্জে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত দেড়শ' বছরের পুরনো ভবন না ভেঙে সে জায়গায় বিপ্লবীদের স্মৃতি জাদুঘর প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রাম ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্র।

মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানান কেন্দ্রের চেয়ারম্যান আলীউর রহমান।

এ দাবির প্রতি সংহতি জানান খ্যাতিমান সমাজবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. অনুপম সেন, কবি-সাংবাদিক আবুল মোমেন, মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত প্রমুখ।

লিখিত বক্তব্যে দেশপ্রিয় যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্ত ও নেলী সেনগুপ্তের ওই জায়গার যেসব জাল দলিল বানানো হয়েছে তা দেশের ঐতিহ্য রক্ষার স্বার্থে বাতিল ঘোষণা করার দাবি জানানো হয়েছে। একই সাথে জেলা প্রশাসন ও ভূমি অফিসকে না জানিয়ে সরকারি সম্পত্তি দখল করতে পুলিশি তৎপরতার বিষয়টি তদন্ত করে ঐতিহাসিক ভবনটি অক্ষত রেখে পেছনে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন স্মৃতি জাদুঘর ও গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তোলা এবং ট্রাস্টি বোর্ড গঠনের দাবি জানান তারা। 

কবি আবুল মোমেন বলেন, সংবিধানের ২৪ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে 'বিশেষ শৈল্পিক কিংবা ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন বা তাৎপর্যমণ্ডিত স্মৃতিনিদর্শন, বস্তু বা বস্তুসমূহকে বিকৃতি, বিনাশ বা অপসারণ হইতে রক্ষা করিবার জন্য রাষ্ট্র ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।' যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত ও নেলী সেনগুপ্তের বাড়িটি সাংস্কৃতিক সম্পদ। এর সুরক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্র ও নাগরিকদের। রাষ্ট্র উদাসীন থাকায় সচেতন নাগরিক হিসেবে জাদুঘর প্রতিষ্ঠার দাবি জানাতে এসেছি।

অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, চট্টগ্রাম আদালত ভবন ভাঙার যখন চক্রান্ত হয়েছিল আমরা প্রতিরোধ করেছি। সিআরবি, পুরাতন রেল স্টেশন ভাঙার চক্রান্ত হয়েছিল। এসব অপকর্মের বিরোধিতা করেছিলাম বলে, তা যৌক্তিক ছিল বলে রক্ষা পেয়েছে। আজও আমরা চট্টগ্রামের সচেতন নাগরিক হিসেবে এ ভবন রক্ষা ও সংরক্ষণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই। 

তিনি আশঙ্কা করেন, জাল দলিল দিয়ে ঐতিহাসিক ভবনটি ভাঙার অপচেষ্টা করা হয়েছে। যারা ভাঙতে এসেছে তারা আরজি, রায় দেখাচ্ছে না। গোপনে জাল ডকুমেন্ট দেখানোর মাধ্যমে এ আদেশ এসেছে, যা ইলিগ্যাল। প্রয়োজনে আদালত ভবন রক্ষার মতো বিপ্লবীদের স্মৃতি রক্ষায় জাদুঘর প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আইনি উদ্যোগ নিতে পিছপা হবো না।