সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১ || ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

করোনায় প্রশাসনের ব্যস্ততায় চট্টগ্রামে সক্রিয় ইয়াবা সিন্ডিকেট

রাজিব শর্মা, চট্টগ্রাম 

১৩:২৯, ৩ আগস্ট ২০২১

আপডেট: ১৬:৪১, ৩ আগস্ট ২০২১

৭৩৮

করোনায় প্রশাসনের ব্যস্ততায় চট্টগ্রামে সক্রিয় ইয়াবা সিন্ডিকেট

চট্টগ্রামে আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে ইয়াবা সিন্ডিকেটগুলো। করোনাকেন্দ্রিক প্রশাসনের ব্যস্ততার সময়ে নিয়মিত দেশের আনাচেকানাচে চালান হচ্ছে ইয়াবা, সক্রিয় কারবারিরা। শতাদিক পুরাতন ব্যবসায়ীরা কৌশল পাল্টে প্রতিদিনই আনছে ইয়াবার চালান। সেই সঙ্গে দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকা মাদকের আখড়াগুলো এখন আবারো জমজমাট। গত মাসে মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রাণও দিয়েছেন দুই যুবক। 

চট্টগ্রামে মাদক ব্যবসায় বাধা দেয়ায় গত মাসে খুন হওয়া যুবকরা হন- নগরীর ডবলমুরিং থানা ছাত্রদল নেতা মীর সাদেক অভি (২৪) ও সাতকানিয়া উপজেলার বারদোনা গ্রামের মোসাদ্দেকুর রহমান (৩৫)। এসব খুনের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট এলাকায় স্থানীয়দের মাঝে এখনও ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে। অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ীসহ তাদের সহযোগীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়ে আসছে তারা।

করোনাকালীন লকডাউনে র‍্যাব-৭ এর অভিযানে গত ২৩ জুন বুধবার  ১৭ নং ওয়ার্ড পশ্চিম বাকলিয়ায় ১৯ হাজার ইয়াবাসহ ৪ মাদক কারবারিকে আটক করা হয়। ২৬ জুন চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানা এলাকা থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের ৪৮ হাজার ইয়াবা উদ্ধারসহ আটক করা হয় ২ জনকে । 

২৭ জুন দুপুরে কর্ণফুলী থানাধীন পটিয়া ক্রসিং থেকে পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) এর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ে কর্মরত এসআই মাসুদ রানা ১১ হাজার ৫৬০ পিস ইয়াবাসহ চট্টগ্রামে আটক হন। 

২০ জুলাই মঙ্গলবার র‌্যাব-৭ অভিযানে পটিয়া উপজেলার বাইপাস এলাকা থেকে  ২৮ হাজার ৬৬০ পিস ইয়াবাসহ ২ মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। ২৫ জুলাই বাকলিয়ায় ২৬ হাজার ৫০০ ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয় তিনজন। 

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) বিশেষ শাখা সূত্র জানায়, গত চার মাসে (মার্চ-জুন) নগরীর ১৬ থানায় মাদক আইনে মামলা হয়েছে ৫৭৯টি। এর মধ্যে মার্চে ৩৪৪টি, এপ্রিলে ৫১টি, মে মাসে ৫১টি ও জুনে ১৩৩টি মামলা দায়ের করা হয়।

জানা গেছে, সিএমপির অন্তত সাড়ে ৩০০ পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে অনেক থানার ওসিসহ একাধিক পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। যার কারণে মাদক উদ্ধারসহ স্বাভাবিক কার্যক্রমে কিছুটা ভাটা পড়ে। এখনও আক্রান্ত অন্তত দেড় শতাধিক পুলিশ সদস্য।

সিএমপির কর্ণফুলী ওসি দুলাল মাহমুদ বলেন, ‘করোনার কারণে পুলিশ লকডাউনসহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। এ কারণে থানার কার্যক্রমে এখনও স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসেনি। একসময় মাদক আইনে বাকলিয়া থানায় প্রতি মাসে ৫০ থেকে ৫৫টি মামলা হতো। কয়েক মাস মাদকসহ অন্যান্য মামলার সংখ্যা কমে গেছে। ইদানীং আবারও মাদকের চালান ধরা পড়ছে। এসব ঘটনায় মামলা হচ্ছে।’

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের উপ-পরিচালক রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘কিছু দিন মাদক চালান কমে গেলেও এখন আবার বেড়েছে। প্রতিদিনই ধরা পড়ছে । করোনা মহামারীকে কাজে লাগিয়ে কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে মার্চ মাসে ১৯ হাজার ১৩২ পিস ইয়াবা, ছয় কেজি ৩৩০ গ্রাম গাঁজা ও ২০ লিটার চোলাই মদ উদ্ধার করা হয়। এসব উদ্ধারের ঘটনায় ৭৮টি মামলা হয়। এতে ৮১ জনকে আসামি করা হয়। 

এপ্রিলে সাত হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। মামলা দায়ের করা হয়েছে একটি। মে মাসে ২৫ হাজার পাঁচ পিস ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয় চারটি।’ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সর্বশেষ তালিকা অনুযায়ী নগরীতে ২৭৭টি স্পটে ৫১৯ জন মাদক ব্যবসায়ী আছে। একইভাবে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তালিকায়ও নগরীর ছয়টি জোনে মাদক ব্যবসায়ী আছে ৯৫ জন। এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় চট্টগ্রাম নগরীর শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীর সংখ্যা ১৯ জন।

সিএমপির বিশেষ শাখার উপ-কমিশনার আবদুল ওয়ারিশ খান বলেন, ‘করোনা শুরুর পর থেকে থানায় মাদক মামলা কিছুটা কমলেও এখন আবারও বেড়েছে। প্রতিদিনই মাদকের চালান ধরা পড়ছে। গ্রেফতার হচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীরা।’

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank
খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত