রোববার   ১৯ জানুয়ারি ২০২৫ || ৫ মাঘ ১৪৩১ || ১৬ রজব ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

রাজধানীর ছয় স্থানে ‘জনতার বাজার’ বসাচ্ছে জেলা প্রশাসন

অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক

২১:৩৯, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫

১৩০

রাজধানীর ছয় স্থানে ‘জনতার বাজার’ বসাচ্ছে জেলা প্রশাসন

নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের বাজারমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ এবং জনজীবনে স্বস্তি আনার লক্ষ্যে রাজধানীর ছয়টি স্থানে ‘জনতার বাজার’ বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা জেলা প্রশাসন। রাজধানীর কামরাঙ্গীচরের কুড়ারঘাট মেডিক্যাল মোড়, মোহাম্মদপুর, গুলশান, মিরপুর, বাড্ডা ও ডেমরা এলাকায় ন্যায্যমূল্যের এই বাজারগুলো বসবে।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাজধানীর কামরাঙ্গীচর কুড়ারঘাট মেডিক্যাল মোড়ে এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানান ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ। 

জানা গেছে, পর্যায়ক্রমে বাজারের সংখ্যা বাড়বে। রমজানে এসব বাজারের মাধ্যমে ভোক্তাদের জন্য বিশেষ সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।

এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বড় সহায়ক হবে। তবে পণ্যের সরবরাহ, বাজারের নিরাপত্তা ও পণ্যের পরিমাণ যেন বেশি হয়– এসব বিষয়ে নজর দেওয়ার তাগিদ দেন তারা।

মতবিনিময় সভায় ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ বলেন, ক্রেতাদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, কৃষকের কাছ থেকে ভোক্তা পর্যায়ে পণ্য আসা পর্যন্ত কয়েকটি হাত বদল হয়। তাতে পণ্যের দর কয়েক গুণ বাড়ে। মধ্যস্বত্বভোগীর এই দৌরাত্ম্য কমাতে এমন উদ্যোগ ভূমিকা রাখবে। মূলত সরাসরি কৃষক ও ভোক্তাদের সংযোগ স্থাপনের জন্য এই বিশেষ বাজার স্থাপন করা হচ্ছে। 

তিনি বলেন, এই বাজারের মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে খাদ্যপণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এতে সহায়তা করবে কৃষি বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। এ বাজার টেকসইভাবে পরিচালিত হবে এবং রাজধানীর মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণে বড় ভূমিকা রাখবে।

সভায় জানানো হয়, নিত্যপণ্যের বাজার এখন বেশ চড়া। অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে গেছে পণ্যমূল্য। কিছু অসৎ ব্যবসায়ী ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে বিপুল টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাতে ভোক্তার ওপর বাড়ছে চাপ। দেখা দিয়েছে জনঅসন্তোষ। উৎপাদক ও আমদানিকারকের কাছ থেকে সরাসরি পণ্য এনে বিক্রি করলে এসব দৌরাত্ম্য দূর হবে। এ জন্য বিভিন্ন জেলায় এরই মধ্যে প্রশাসনের মাধ্যমে এ ধরনের বাজার বসানো হয়েছে। তা জনমনে ইতিবাচক সাড়া ফেলছে। এ কারণে আশপাশের বাজারেও পণ্যের দর কমতে শুরু করেছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই ঢাকায় বাজার বসানো হচ্ছে।

জনতার বাজারে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, সবজিসহ নিত্যপণ্য সাশ্রয়ী দামে বিক্রি হবে। প্রাথমিকভাবে কামরাঙ্গীচরসহ ঢাকার ছয় স্থানে বাজার বসলেও পর্যায়ক্রমে পরিসর বাড়বে। বাজার ব্যবস্থাপনার জন্য সরকারি জায়গায় অবকাঠামো নির্মাণ করে স্থানীয় উদ্যোক্তা, শিক্ষার্থী এবং বেকার যুবকদের সম্পৃক্ত করা হবে। শুধু খুচরা বিক্রির ব্যবস্থা থাকবে। পণ্য কেনার জন্য একটি নির্ধারিত মূল্য তালিকা অনুসরণ করা হবে। ক্রেতারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে টাকা পরিশোধ করে একটি কোড পাবেন, যা দেখিয়ে পণ্য সংগ্রহ করতে পারবেন।

বাজারের বিশেষত্ব 
জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে এই বাজার। এতে সহযোগিতা করবে সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতর ও সংস্থা। দেশের যেখানে যে পণ্যের দাম তুলনামূলক কম থাকবে, সেখান থেকে পণ্য এনে সরাসরি এ বাজারে বিক্রি করা হবে। 

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বেচাকেনা ও পরিবহন ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় উদ্যোক্তা, ছাত্র-জনতাকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। প্রতিটি পণ্য জেলা প্রশাসন বা সংশ্লিষ্ট কমিটির মাধ্যমে নির্ধারিত দরে বিক্রি করা হবে। ক্রয়মূল্যের সঙ্গে প্রকৃত পরিবহন খরচ এবং উদ্যোক্তাদের প্রদেয় যৌক্তিক মুনাফা যোগ করে বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ হবে। তবে ইচ্ছা করলে যে কোনো চাষি, খামারি বা উৎপাদনকারী তার উৎপাদিত পণ্য সরাসরি এনেও বিক্রি করতে পারবেন। হিসাব সংরক্ষণ ও সার্বিক কার্যক্রম ব্যবস্থাপনার জন্য সফটওয়্যার নির্মাণ করা হবে। এর মাধ্যমে পণ্যের ক্রয় ও বিক্রয়মূল্য অনলাইনে দেখা যাবে।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপপরিচালক মো. ইকবাল হোসেন, ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) মো. শামীম হুসাইন, সিনিয়র সহকারী কমিশনার এবং বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তানজিল পারভেজ, লালবাগ জোনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শরীফুল ইসলাম, কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম, খাদ্য অধিদফতরের প্রতিনিধি, কৃষি বিপণন অধিদফতরের প্রতিনিধি, ছাত্র প্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank
খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত