ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ২৩
ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ২৩
শঙ্কিত পদযাত্রা
ধারাবাহিক আত্মকথা
। খ ম হারূন ।
খ্যাতিমান টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব খ ম হারূন। দীর্ঘ চার দশকেরও বেশি সময় ধরে সম্পৃক্ত রয়েছেন দেশের টেলিভিশন এবং মঞ্চের সাথে। বাংলাদেশ টেলিভিশনের স্বর্ণময় সময়ে যে কয়েকজন নির্মাতা-প্রযোজকের নাম ছোট পর্দার কল্যাণে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে খ ম হারূন তাদের একজন। দীর্ঘ বর্ণিল ক্যারিয়ারে অসংখ্য উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন তিনি। এখনো রয়েছেন সমান সক্রিয়। দেশের গণমাধ্যম জগতের বরেণ্য এই ব্যক্তিত্বের আত্মকথা ‘শংকিত পদযাত্রা’ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে অপরাজেয় বাংলা’য়।
[পর্ব-২৩]
বাংলাদেশ টেলিভিশনে যে সব অনুষ্ঠান ভীষণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে সেগুলো যে শুধু নাটক, ধারাবাহিক নাটক বা বিনোদোনমূলক অনুষ্ঠান তা নয়, সিরিয়াস ধরণের তথ্যসমৃদ্ধ অনুষ্ঠান সব সময় জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিল। ‘সবিনয়ে জানতে চাই’ অনুষ্ঠান সম্পর্কে আগেই বলেছি। ‘যদি কিছু মনে না করেন’, ‘প্রচ্ছদ’, ‘আপনার ডাক্তার’, ‘মাটি ও মানুষ’, ‘ইত্যাদি’র নাম উল্লেখ করার মতো। ১৯৮৯ এর মার্চে শুরু হয়ে হানিফ সংকেত পরিচালিত ‘ইত্যাদি’ এখনো পরিবেশিত হচ্ছে। এক সময় এই ‘ইত্যাদি’ দেখার জন্য রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যেতো। হানিফ সংকেত তার অনুষ্ঠানের জনপ্রিয়তা এখনো ধরে রেখেছেন। বাংলাদেশে কোনো বেসরকারি টেলিভিশন এই ধরনের উদ্যোগ আজ পর্যন্ত গ্রহন করতে পারেনি।
২০০৯-২০১০ এ আমি যখন বিটিভি’র উপ-মহাপরিচালক (অনুষ্ঠান) পদে ছিলাম তখন প্রশাসনিক কাজের চাপে নিজে কোনো অনুষ্ঠান নির্মাণ করতে পারতাম না, তবে অনুষ্ঠানে বৈচিত্র্য আনা, নতুন নতুন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করা, টেলিভিশনকে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে রূপান্তর করা, নতুন মেধাবী প্রযোজক তৈরি করা এসব কাজে মনোনিবেশ করি। এর বাইরে কিছু অকাজও যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ তখন তা বুঝতে পারিনি। ঐ সময়ে আমি হানিফ সংকেতকে বলেছিলাম ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানটি মাসে একটা করে তৈরি করার জন্য। সে রাজি হয়নি। তার কথা- আমি তিন মাস ধরে যে অনুষ্ঠানটি অনেক গবেষনা আর শ্রম দিয়ে নির্মাণ করি, সেটি যদি প্রতি মাসে করতে যাই, তাহলে ‘ইত্যাদি’ আর ইত্যাদি থাকবে না।
বিটিভি’র সবথেকে জনপ্রিয় অনুষ্ঠানের কথা বলতে গিয়ে আমার মনে পরছে ‘আইন আদালত’ এর কথা। অনুষ্ঠানটির পরিকল্পনা, গ্রন্থনা ও উপস্থাপনায় ছিলেন তরুন অ্যাডভোকেট রেজাউর রহমান। বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘আইন আদালত’ এর প্রথম অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হয় ১৯৮৩ এর ১৪ জানুয়ারি। ২৫ মিনিটের এই পাক্ষিক অনুষ্ঠানটিতে প্রখ্যাত আইনবিদ গাজী শামসুর রহমান চোখ বন্ধ করে তার গল্পের তিনটি চরিত্র দবির, সগীর আর সালেহার সমস্যাগুলোর সমাধান জটিল আইনের সহজ ব্যাখ্যা দিয়ে বুঝিয়ে দিতেন। গাজী শামসুর রহমান ১৯৯৮ সালের ১২ আগষ্ট মৃত্যুবরণ করেন। এখনো অনেকেই তাঁকে স্মরণ করে শ্রদ্ধার সাথে।
দেশের মানুষকে তাদের আইনানুগ অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তোলা, আইনের অপব্যাখ্যা, অপব্যবহার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার প্রতিকার করাই ছিলো ‘আইন আদালত’ এর উদ্দেশ্য। দর্শকদের অনুরোধে ১৯৮৫ থেকে অনুষ্ঠানের সময়সীমা বাড়িয়ে ৬০ মিনিট করা হয়। ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৭, এই পাঁচ বছর বিপুল জনপ্রিয়তা নিয়ে ‘আইন আদালত’ এর ১২০ টি অনুষ্ঠান প্রচারিত হয়। শেষ অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হয় ১৯ নভেম্বর ১৯৮৭। ‘আইন আদালত’ শেষ হবার আগে অনুষ্ঠনটির জনপ্রিয়তা ছিলো ৯৭%, টিভি গাইড, জানুয়ারী-মার্চ ১৯৮৮ অনুসারে।
প্রথমে অনুষ্ঠানটির প্রযোজক ছিলেন আলিমুজ্জামান দুলু, পরবর্তীতে মাহবুবুল আলম এবং খ ম হারূন। আমার মনে হয় ‘আইন আদালত’এর মতো অনুষ্ঠান শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিন এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আইন বিষয়কে কেন্দ্র করে প্রথম টেলিভিশন অনুষ্ঠান। অনেকে মনে করেন ভারতের ‘আপ কি আদালত’ অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশের ‘আইন আদালত’ এর সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি করা হয়। তার কারণও আছে। ১৯৮৫ সালের ডিসেম্বরে যখন প্রথম সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ঢাকায়, তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী বিটিভি’র ‘আইন আদালত’ দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন। ঢাকায় অবস্থানের সময় তিনি প্রেসিডেন্ট এরশাদকে তার মুগ্ধতার কথা জানান। বাংলাদেশ টেলিভিশনে যে সরকারের এবং আইন শৃংখলা বাহিনীর কোনো বিতর্কিত কাজের সমালোচনা করা যায় সে সম্পর্কে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কোনো ধারনা ছিলোনা এই অনুষ্ঠানটি দেখার আগ পর্যন্ত। যাবার সময় রাজীব গান্ধী ‘আইন আদালত’ অনুষ্ঠানের বেশ কটি ক্যাসেট সাথে নিয়ে যান। তিনি দিল্লিতে ফিরে ভারতের রাষ্ট্রিয় টেলিভিশন ‘দূরদর্শন’ এর সে সময়ের মহাপরিচালককে সেই ক্যাসেটগুলো হস্তান্তর করে প্রশ্ন করেন বিটিভি যেটা পারে, সেটা ‘দূরদর্শন’ কেনো পারেনা! দূরদর্শন অবশ্য চেষ্টা করেছিলো, পরবর্তিতে ভারতীয় জিটিভি’তে রজত শর্মা এই ধরনের একটি অনুষ্ঠান ‘আপ কি আদালত’ উপস্থাপনা করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ১৯৯২ সালে ‘আপ কি আদালত’ শুরু হয়ে এখনো চলছে। অন্যদিকে ‘আইন আদালত’ ১৯৮৩ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়ে অনেকের বিরোধিতার মুখে ১৯৮৭ সালের নভেম্বরে শেষ হয়ে যায়।
‘আইন আদালত’ এর প্রায় সব কটি অনুষ্ঠানের বিষয় ছিলো খুব গুরুত্বপূর্ণ যা এখন ভাবতেই অবাক লাগে। এখানে কয়েকটি প্রতিবেদনের বিষয়ের উল্লেখ করছি-
• ৬৯ এর শহীদ আসাদ হত্যার বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত ও হত্যাকারী পুলিশ কর্মকর্তা এসপি বাহাউদ্দিনের স্বীকারোক্তিমূলক সাক্ষাৎকার গ্রহণ।
• ৬৯ এর শহীদ ডক্টর শামসুজ্জোহার হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন ও তার হত্যাকারী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট হাদীর পরিচয় প্রকাশ।
• একুশ ফেব্রুয়ারির হত্যাকাণ্ডের বিশদ প্রতিবেদন এবং গুলীবর্ষণের সময় উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার প্রচার। পুলিশের গোয়েন্দা হিসেবে যে বাঙালি ছাত্রদের উপর গোয়েন্দাগিরি করতো তার সাক্ষাৎকারও প্রচার করা হয়।
• দুর্ধর্ষ ডাকাত কুদ্দুস মোল্লার নৃশংস অত্যাচারের উপর প্রতিবেদন ও তার মুক্তির বিরুদ্ধে জনমত গঠন করা।
• কারাগারের অভ্যন্তরের করুন পরিস্থিতি তুলে ধরা। উল্লেখ্য, দেশের ইতিহাসে সেই প্রথম কোনো টেলিভিশন টিমকে কারাগারে ঢুকতে দেয়া হয়।
• দেশব্যাপী জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তিতে নিয়োগ করা অপরাধীদের বিশাল নেটওয়ার্কের উপর প্রতিবেদন প্রকাশ। বাংলাদেশ টেলিভিশনে এ বিষয়ে এর আগে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করা নিষিদ্ধ ছিলো।
• যৌতুকসহ বিভিন্ন কারণে ভয়াবহ নারী নির্যাতন, নারীর উপর এসিড নিক্ষেপ, ধর্ষণ ও আইন প্রয়োগ, পুলিশের দুর্নীতি ও বিচারে শিথিলতা, সবকিছুর উপর প্রতিবেদন ও তার প্রতিকার দাবি করা।
• বাংলাদেশে হেরোইন, হাশিশ ও গাঁজাসহ মারাত্মক মাদকদ্রব্য চোরাইপথে আমদানি ও তা বাজারজাত করার একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে ‘আইন আদালত’ অনুষ্ঠানে জড়িত অপরাধীচক্রের পরিচয় উদ্ঘাটন করা হয়।
• পেশাদার বোমাবাজদের গোপন আস্তানা, তাদের কর্মতৎপরতা, বিদেশ থেকে বোমার মালমশলা কি ভাবে দেশে নিয়ে এসে অপরাধীদের কাছে সরবরাহ করা হয় এ বিষয়ে বিশদ প্রতিবেদন প্রচার করা হয়।
• সারাদেশে একসময় ছেলেধরা সন্দেহে নিরাপরাধ নারী, পুরুষকে পিটিয়ে মারার হিড়িক পড়ে যায়। সংবাদপত্রে এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের খবর ক্রমাগত ছাপার পরেও হত্যাকাণ্ড চলতে থাকে। ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে আইন আদালতে একটি মর্মস্পর্শী প্রতিবেদন প্রচার করে। পরে এই হত্যাকান্ড বন্ধ হয়ে যায়। সালেহা নামের এক দরিদ্র মহিলা তার ৩ বছরের শিশুকে কোলে নিয়ে রেললাইন পার হবার সময় কিছু মানুষ ‘ছেলেধরা’ বলে চিৎকার করে ওঠে আর মুহুর্তের মধ্যেই জনতা শিশুটির সামনে সালেহাকে পিটিয়ে মেরে ফেলে।
• ১৯৮৪ সালে তৎকালীন সামরিক সরকারের আদেশ জাল করে স্থানীয় পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের সহযোগিতায় খুলনার মোল্লারহাটে একজন অসহায় মানুষকে তার জমি থেকে উচ্ছেদ করে জমি দখলের উপরে সরেজমিনে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়, সেই সময়ে সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে যেতে পারে এমন কোনো বিষয়ে সরাসরি প্রতিবেদন প্রচার করার উদ্যোগ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিলো।
• ঢাকা শহরের অপরাধী চক্রের সদস্যদের সাক্ষাৎকার প্রচার করা হয়, যেখানে তারা সরাসরি পুলিশের সাথে তাদের সখ্যতা ও তাদের ঘুষ প্রদানের বিশদ বর্ণনা তুলে ধরে।
• বিনা বিচারে ১০ বছর আটক নুরুল ইসলাম ও অন্যান্য নিরপরাধ ব্যক্তিদের আটকের উপর একটি প্রতিবেদন প্রচার করা হয়।
• আইন আদালত অনুষ্ঠানে প্রচারিত সড়ক দুর্ঘটনার উপর একটি প্রতিবেদন আদালত একটি বিচারে অভিযুক্ত চালকদের বিরুদ্ধে প্রমান হিসেবে গ্রহণ করে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি প্রথম বিচার যেখানে ভিডিও ক্যাসেটকে গ্রহনযোগ্য প্রমান হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়।
এই রকম নানা সাহসী প্রতিবেদন রেজাউর রহমান ‘আইন আদালত’ এর প্রতিটি অনুষ্ঠানে তুলে ধরতেন। আমি যে ক’টি অনুষ্ঠান প্রযোজনা করেছিলাম তার মধ্যে একটির কথা না বলে পারছিনা। সেটি ছিলো অন্যতম বিপদজনক একটি অনুষ্ঠান। এডভোকেট মাহবুবুল আলম হত্যাকাণ্ডের উপর নির্মিত।
ঢাকার আইনজীবী মাহবুবুল আলম তার এক পুরানো মক্কেল আনওয়ারুল হক চৌধুরীর কাছ থেকে জমি কেনার জন্য তাকে অগ্রিম ৩ লাখ টাকা দেন। কিন্তু বার বার তাগাদা দেয়া সত্ত্বেও সেই মক্কেল জমি হস্তান্তর করেনি, টাকাও ফেরত দেয়নি। একদিন খুব ভোরে তার মক্কেল তাকে জমি দেখানোর কথা বলে সাথে করে নিয়ে যায় কিন্তু তার পরে আর তিনি ফেরত আসেননি। প্রায় দুই সপ্তাহ পরে তার খণ্ডিত মাথা মতিঝিল এলাকার একটি ডোবা থেকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশি তদন্তে হত্যাকারী দলের নেতা বুলেট ও তার দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়। ‘আইন আদালত’ অনুষ্ঠানের তদন্ত প্রতিবেদনে বুলেট জানায় যে এডভোকেট মাহবুবুল আলমকে টাকা ফেরত দেয়ার পরিবর্তে তাকে হত্যা করার জন্য ১২ হাজার টাকা দিয়ে আনোয়ারুল হক চৌধুরী তাদের ভাড়া করে।
নির্দিষ্ট দিনে জমি দেখানোর কথা বলে এডভোকেট মাহবুবুল আলম কে আনোয়ারুল হক চৌধুরী ঢাকার সোবহানবাগের একটি বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই বুলেট ও তার দলের লোকেরা অপেক্ষা করছিলো। কথা বলার এক পর্যায়ে তারা মাহবুবুল আলমের গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করে খাটের তলায় লাশ রেখে দেয়। সন্ধ্যার পরে বুলেট ও তার দুই সহযোগী প্রথমে তার মৃতদেহের মাথা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে আর ধীরে সুস্থে সিগারেট খেতে খেতে চাপাতি দিয়ে মৃতদেহটিকে খন্ড বিখন্ড করে ফেলে।
বুলেট ও তার সহযোগীদের সামরিক আদালত মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে। আইন আদালতের টিম রায় ঘোষণা ও বুলেটের প্রতিক্রিয়ার চিত্র ধারণের জন্য আদালতে উপস্থিত ছিলো। কাঠগড়া থেকেই বুলেট রেজাউর রহমান কে উদ্দেশ্য করে বলে ‘একবার ছাড়া পাইলে তোমারও ওই অবস্থা করুম’। উত্তরে রেজাউর রহমান বলেন ‘আপনার সেই সুযোগ মনে হয় আর আসবে না’। বুলেট ও তার দুই সহযোগীকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝোলানো হয়।
বেশ পরে আনোয়ারুল হক চৌধুরী ধরা পরে। সেইসময়ে তার মৃত্যুদণ্ড রদ করে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেবার জন্য একটি প্রভাবশালী মহল প্রচেষ্টা চালায়। একজন মন্ত্রীর তদবিরে দণ্ড হ্রাসের আবেদন প্রেসিডেন্ট এরশাদের কাছে পৌঁছে যায়। ঠিক সেই সময়ে ‘আইন আদালত’-এর আরেকটি পর্বে হত্যাকাণ্ডে আনোয়ারুল হক চৌধুরীর ভূমিকা নিয়ে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। রেজাউর রহমান মন্তব্য করেন "আমরা জানতে পেরেছি এই মুহূর্তে দণ্ডিত আনোয়ারুল হক চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদানের একটি আবেদন প্রেসিডেন্টের দপ্তরে তার বিবেচনাধীন রয়েছে, তিনি এই দণ্ড বাতিল করবেন কি না তা আমরা জানিনা"। তবে অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হবার পরপরই প্রেসিডেন্ট এরশাদ মৃত্যুদন্ড বাতিলের আবেদনটি প্রত্যাখ্যান করেন। বিস্ময়কর যে ফাঁসির সময় আনোয়ারুল হক চৌধুরীর মাথা তার দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলো।
[চলবে...]
আগের পর্ব পড়ুন-
ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ২২
ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ২১
ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ২০
ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ১৯
ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ১৮
ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ১৭
ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ১৬
ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ১৫
ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ১৪
ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ১৩
ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ১২
ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ১১
ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ১০
ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ৯
ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ৮
ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ৭
ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ৬
ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ৫
ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ৪
ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ৩
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা
- ধারাবাহিক অনুবাদ উপন্যাস
১৯৮৪ ।। মূল: জর্জ অরওয়েল ।। অনুবাদ: মাহমুদ মেনন - ধারাবাহিক অনুবাদ উপন্যাস
১৯৮৪ ।। মূল: জর্জ অরওয়েল ।। অনুবাদ: মাহমুদ মেনন [পর্ব-৩] - শোকস্রোতের নীলমণি: নাট্যদিশারী আফসার আহমদ
- ধারাবাহিক অনুবাদ উপন্যাস
১৯৮৪ ।। মূল: জর্জ অরওয়েল ।। অনুবাদ: মাহমুদ মেনন, [পর্ব-২] - ভ্রমণকাহিনী: ইরানি গোলেস্তান আর ঝর্ণার গল্প
- ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ১৩
- রশীদ হায়দার আর নেই
- ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ২৪
- সিলভিয়া প্লাথের শেষ বই