বুক রিভিউ
সৃজনশীল চিন্তার খোরাক জোগাবে ‘প্রতি মঙ্গলবার আমরা বই ছাড়া স্কুলে যাই’
বুক রিভিউ
সৃজনশীল চিন্তার খোরাক জোগাবে ‘প্রতি মঙ্গলবার আমরা বই ছাড়া স্কুলে যাই’
একটা প্রজন্ম বেড়ে উঠছে ডিভাইসে আসক্তি নিয়ে। কাঁধে বইয়ের বোঝা আর চোখের সামনে স্ক্রিন। পর্যাপ্ত খেলার মাঠ নেই, নিজের জন্য সময় নেই, আছে শুধু ভালো ফলাফল করার তাড়া। কিন্তু বয়সটাই যে,
‘আব্বু বলে পড়রে সোনা
আম্মু বলে মন দে
পড়ায় আমার মন বসে না
কাঁঠাল-চাঁপার গন্ধে’ (আল মাহমুদ)
এই পরিস্থিতিতে শিশু- কিশোরদের জন্য লেখা মানসম্পন্ন গল্প-উপন্যাসেরও খরা চলছে। কিশোরদের মতো করে ভেবে, তাদের কল্পনার সাথে মিশে গিয়ে, তাদের ভাষায়, তাদের জন্য লেখা হচ্ছে খুব কম।
এই খরার সময়ে ‘প্র প্রকাশনী’ থেকে প্রকাশিত হয়েছে কয়েকটি কিশোর উপন্যাস। তারই একটি বই ‘প্রতি মঙ্গলবার আমরা বই ছাড়া স্কুলে যাই’। পলাশ মাহবুবেবর এই বইটির গল্প ও গল্প বলার ধরন কিশোর উপযোগী।
উপন্যাসের মূল চরিত্র এসএমএস স্যার, বিদ্যাসাগর হাইস্কুলে তিনি বিজ্ঞান পড়ান। বিজ্ঞানের শিক্ষক হলেও সৃজনশীলতার প্রতি রয়েছে তার অগাধ দরদ। আর তাই তিনি স্কুলের সৃজনশীল সমন্বয়কের দায়িত্বও পালন করে আসছেন। তার হাত ধরে স্কুল দুই-দুই বার সৃজনশীল শাখায় বিভাগীয় পর্যায়ে সেরার পুরষ্কার অর্জন করেছে। এই ধারাবাহিকতায় এসএমএস স্যারের পরবর্তী লক্ষ্য জাতীয় পর্যায়ে সেরার খেতাব পাওয়া। তবে শুধু সৃজনশীলতা নয় এমন এক পদ্ধতিতে তিনি এগুতে চান যে-পথে পড়াশোনাটাও ঠিকঠাক মতো চলে। সেই সাথে পড়াশোনা শিক্ষার্থীদের কাছে বোঝা মনে না হয়, পড়াশোনাটা হয়ে ওঠে আনন্দের কাজ।
সৃজনশীল কর্মকাণ্ড আর পড়াশোনাকে আনন্দের করে তুলতে অভিনব এক উদ্যোগ হাতে নেন এসএমএস স্যার। সপ্তাহের একটা দিন কে ঘোষণা করা হয় ‘নো ব্যাগ ডে’ হিসেবে। সেদিন ছাত্র-ছাত্রীরা কেউ বই তো অবশ্যই নয়, ব্যাগও সাথে আনবে না। প্রধান শিক্ষকের সহযোগিতা পেয়ে কাজে নেমে পড়েন এসএমএস স্যার। এই কর্মযজ্ঞে সঙ্গী হিসেবে পান স্কুলের আরও কয়েকজন শিক্ষক ও ক্লাস এইটে পড়–য়া ফুল পরিষদকে। ফুলের নামে নাম হওয়ায় চার শিক্ষার্থীকে নিয়ে গঠিত ফুল পরিষদ।
এক সুযোগেই বাজিমাত করেন এসএসএম স্যার। অভিনব এবং মজার সব কর্মকাণ্ড দিয়ে তাক লাগিয়ে দেন তিনি। আর তাতে সৃজনশীলতার পাশাপাশি সাফল্য আসে পড়াশোনায়ও। আবার স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরাও আছে তুমুল আনন্দে! অল্প সময়ের মধ্যেই বিদ্যাসাগর হাই স্কুলের মাইন্ডব্লোয়িং মঙ্গলবারের খবর ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। এসব নিয়েই মূলত পলাশ মাহবুবের ‘প্রতি মঙ্গলবার আমরা বই ছাড়া স্কুলে যাই’ এর গল্প।
কিশোর উপন্যাস হলেও সববয়সী পাঠক বইটি পড়ে আনন্দ পাবে। শব্দ চয়ন ও বাক্য গঠনে লেখক প্রশংসার দাবিদার। বেশ মজার করে লিখেন লেখক পলাশ মাহবুব, পড়তে পড়তে হাসিতে মুখ ভরে ওঠে। সেইসাথে লেখক এই বইয়ের মাধ্যমে চমৎকার কিছু বার্তা দিতে চেয়েছেন। কিশোর বয়সী না হলেও পাঠক হিসেবে আমাকে মুগ্ধ করেছে লেখক পলাশ মাহবুবের ভাবনা।
সত্যিই যদি এমন হতো, কাঁধের ওপর চাপ না নিয়ে খেলতে গিয়ে হাসতে হাসতে শিখতে পারা যেত।
বইটি সংগ্রহ করতে-
https://www.rokomari.com/book/283881/proti-mongalbar-amra-boi-chara-schoole-jai
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা
- ধারাবাহিক অনুবাদ উপন্যাস
১৯৮৪ ।। মূল: জর্জ অরওয়েল ।। অনুবাদ: মাহমুদ মেনন - ধারাবাহিক অনুবাদ উপন্যাস
১৯৮৪ ।। মূল: জর্জ অরওয়েল ।। অনুবাদ: মাহমুদ মেনন [পর্ব-৩] - শোকস্রোতের নীলমণি: নাট্যদিশারী আফসার আহমদ
- ধারাবাহিক অনুবাদ উপন্যাস
১৯৮৪ ।। মূল: জর্জ অরওয়েল ।। অনুবাদ: মাহমুদ মেনন, [পর্ব-২] - ভ্রমণকাহিনী: ইরানি গোলেস্তান আর ঝর্ণার গল্প
- ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ১৩
- রশীদ হায়দার আর নেই
- ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ২৪
- সিলভিয়া প্লাথের শেষ বই