শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪ || ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১ || ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

রবীন্দ্র প্রয়াণতিথি

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৩:৫৮, ৬ আগস্ট ২০২০

আপডেট: ২১:১১, ৯ আগস্ট ২০২০

১০০০

রবীন্দ্র প্রয়াণতিথি

আজ ২২ শে শ্রাবণ। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আশিতম প্রয়াণতিথি। মৃত্যু তাঁর জীবনে বারবার ছায়া ফেলেছে। কিন্তু ঢেকে দিতে পারেনি আঁধারে। দুঃখের অনলে দহনের মধ্য দিয়ে মৃত্যুকে সুন্দর ভেবে গ্রহণ করেছেন রবীন্দ্রনাথ।

আজ পৃথিবী যখন গভীর অসুখে, করোনার মহাদুর্যোগেও আমাদের পরম আশ্রয়, রবীন্দ্রনাথের এমন করে মৃত্যুভাবনা।

জীবনভর মৃত্যুকে নিত্যধারা প্রাণের মতোই সত্য জেনেছেন। মৃত্যু যেন তাঁর কাছে অসীমের পানে ধাওয়া, সেথায় নেই বিচ্ছেদ।

১৩ বছরে মায়ের মৃত্যু, ২৪ বছর বয়সে কাদম্বরী দেবীর মৃত্যু, আরো পরে স্ত্রীর মৃত্যু কিংবা সন্তানের অকাল প্রয়াণ তাঁর জীবনে অশ্রুর দীর্ঘমালার মতো গেঁথে গিয়েছিল।

ছেলেবেলার ভানুসিংহ মৃত্যুকে দেখেছেন ' মরণরে, তুঁহুঁ মম শ্যাম সমান!'

কিশোর বয়সে বন্ধুপ্রতিম বৌদি কাদম্বরী দেবীর অকালমৃত্যু ও আরও পরে স্ত্রীর মৃত্যু এবং একে একে প্রিয়জনদের মৃত্যুর নীরব সাক্ষী ও মৃত্যুশোক রবীন্দ্রনাথকে দিয়েছে পরম ব্রক্ষ্ম তথা আধ্যাত্মলোকের সন্ধান। তাইতো জীবনস্মৃতিতে ‘মৃত্যুশোক’ পর্যায়ে অকপটে লেখেন, ‘জগৎকে সম্পূর্ণ করিয়া এবং সুন্দর করিয়া দেখিবার জন্য যে দূরত্ব প্রয়োজন, মৃত্যু দূরত্ব ঘটাইয়া দিয়াছিল। আমি নির্লিপ্ত হইয়া দাঁড়াইয়া মরণের বৃহৎ পটভূমিকার উপর সংসারের ছবিটি দেখিলাম এবং জানিলাম, তাহা বড়ো মনোহর।’

বিশ্বপিতার অপার মহিমাকে মননে অনুধাবন করেই কবি লিখেছিলেন, 'হে সুন্দর হে সত্য, তুমি আমায় এ মোহ বাঁধন থেকে মুক্ত করো শূন্য করে দাও আমার হৃদয় আর এই শূন্যতার মাঝে আমার হৃদয় আসনে তুমি সুপ্রতিষ্ঠিত হও। দুঃখের অনলে দহনে মধ্য দিয়ে শোধন করে আমায় সুন্দর করো, গ্রহণ করো।’

মহামারীর বুকে দাঁড়িয়ে রবীন্দ্রনাথের সেই উচ্চারণ আজও বাঁচার মন্ত্র।

মৃত্যুর মাত্র সাত দিন আগে পর্যন্তও কবি ছিলেন সৃষ্টিশীল। জোড়াসাঁকোয় রোগশয্যায় শুয়ে রানী চন্দকে লিখে নিতে বলেছিলেন। আর রানী চন্দ সূত্রধরের মতো লিখে নিয়েছিলেম—রবীন্দ্রনাথ উবাচ।

'তোমার সৃষ্টির পথ/ রেখেছ আকীর্ণ করি/বিচিত্র ছলনাজালে/হে ছলনাময়ী—’’।

এরপর কবি তাঁর পুত্রবধূ প্রতিমাদেবীকেও চিঠি লিখতে বলেছিলেন। রানী চন্দ সেই চিঠি লিখে দেবার পর কবি অশক্ত হাতে কাঁপা কাঁপা অক্ষরে সইও করে দিয়েছিলেন, ‘বাবামশাই’।

যেদিন মৃত্যুর মুখোমুখ। সেই ২২ শে শ্রাবণ, ১৩৪৮ বাংলা। দ্বিপ্রহর। শ্রাবণের আকাশে সেদিন মেঘ ছিল না। বরং মধ্যগগণে সূর্য যখন কিরণ ছড়াচ্ছিল, ব্রাক্ষ্ম মন্ত্র 'শান্তম, শিবম, অদ্বৈতম...' শুনতে শুনতেই ঘুমের দেশে অস্ত গেলেন ভরা জীবনের রবি।

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank