বিষফোঁড়া হলে করণীয়
বিষফোঁড়া হলে করণীয়
খুবই যন্ত্রণাদায়ক একটি স্কিন সমস্যা হচ্ছে বিষফোঁড়া। শরীরের যেকোনো স্থানেই এটি হয়ে থাকে। যেমন- মুখমণ্ডল, মুখ, দাঁত, কিডনি বা পেট ইত্যাদি। তবে ত্বকের ফোঁড়াই হলো সবচেয়ে সাধারণ। যন্ত্রণাদায়ক এই ফোঁড়া ছোট কিংবা বড় উভয়েরই হতে পারে।
বিষফোঁড়া কেন হয়?
সাধারণত ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন থেকে ফোঁড়া সৃষ্টি হয়। যখন শরীরে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করে, আমাদের ইমিউন সিস্টেম সংক্রমিত স্থানে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইকারী শ্বেত রক্তকণিকা পাঠায়। শ্বেত রক্তকণিকা ব্যাকটেরিয়াকে আক্রমণ করার ফলে আশপাশের কিছু টিস্যু মারা যায় ও গর্ত সৃষ্টি হয়। গর্তটি পুঁজে ভরে যায়। মূলত পুঁজ হলো মৃত টিস্যু, শ্বেত রক্তকণিকা ও ব্যাকটেরিয়ার মিশ্রণ।
ব্যথাদায়ক ও পুঁজে ভর্তি ফোঁড়া পুরোপুরি সারতে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত লাগতে পারে। চলুন এবার জেনে নেয়া যাক ফোঁড়ার অসহ্যকর ব্যথা থেকে মুক্তির ঘরোয়া পাঁচ উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত-
ক্যাস্টর অয়েল
সাধারণত চুল ঘন করতে ব্যবহৃত হয় ক্যাস্টর অয়েল। জানেন কি, এই তেলে আছে শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য। যা ফোঁড়া সারাতে দুর্দান্ত কাজ করে। ফোঁড়া না পাকা অব্দি প্রতিদিন এই তেল ব্যবহার করুন। ব্যথামুক্ত থাকবেন এবং দ্রুত পেকে ফোঁড়ার ঘা শুকিয়ে যাবে।
নিম তেল
এই তেলে আছে অ্যান্টি-সেপটিক, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যসমূহ। যা ফোঁড়াসহ ত্বকের বিভিন্ন সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে থাকে। দিনে ৩ থেকে ৪ বার নিম তেল ফোঁড়ার স্থানে ব্যবহার করলে ব্যথাও কমবে এবং ঘা শুকাবে দ্রুত।
গরম ভাঁপ
ফোড়ার স্থানে গরম ভাঁপ নিলে ওই স্থানে রক্ত সঞ্চারনের পরিমাণ বাড়বে। ফোড়ার ব্যথার শুরু থেকেই গরম ভাঁপ নেয়া শুরু করলে দ্রুত ব্যথা কমবে। প্রতিদিন অন্তত ২০ মিনিট করে ৩ থেকে ৪ বার ফোঁড়ার স্থানে গরম ভাঁপ নিন।
হলুদ গুঁড়া
এতে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি- ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য আছে। এসব বৈশিষ্ট্য ফোঁড়ার ব্যথা থেকে দ্রুত মুক্তি দেয়। এজন্য এক চা চামচ হলুদের গুঁড়ার সঙ্গে পানি বা সামান্য দুধ মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে ফোঁড়ার স্থানে ব্যবহার করলে উপকার মিলবে। প্রতিদিন অন্তত ৩ বার এই পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
ইপসোম লবণ
এই লবণের কার্যকারিতা অনেক। ফোঁড়ার ব্যথা এবং এটি শুকিয়ে যেতে সাহায্য করে লবণ। ফোঁড়ার পুঁজ শুকিয়ে নেয় ইপসোম লবণ। এজন্য গরম পানিতে ইপসোম লবণ মিশিয়ে ফোঁড়ার স্থানে কটনপ্যাডের সাহায্যে ব্যবহার করুন। দিনে অন্তত ৩ বার করে ২০ মিনিটের জন্য আক্রান্ত স্থানে এই লবণ পানি ব্যবহার করুন।
কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন?
দীর্ঘদিন ধরে যদি ফোঁড়ার ব্যথায় ভুগেন, সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি। যদি আপনি ফোঁড়ার সংক্রমণ বা ইনফেকশন সন্দেহ করেন; তাহলে চিকিৎসক রক্ত পরীক্ষা বা ফোঁড়ার মাঝখান থেকে তরল নিয়ে কালচার করার নির্দেশও দিতে পারেন।
শরীরের কোনো অঙ্গে একটি বড় ফোঁড়ার ক্ষেত্রে, চিকিৎসা হিসেবে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নিষ্কাশন করা যেতে পারে। রোগীকে অ্যানেস্থেশিয়া করে, চিকিৎসক ফোঁড়ার মুখ দিয়ে গর্ত করবেন, যাতে ফোঁড়ার ভেতরের উপাদানগুলো বের করে ফেলা যায়। সংক্রমণটি পুরোপুরি পরিষ্কার করার জন্য সেই সঙ্গে অ্যান্টিবায়োটিকও দেওয়া হয়।
চেরা ও নিষ্কাশন (ফোঁড়া থেকে তরল বের করে দেওয়া) ব্যবস্থার প্রচলিত সার্জারির মধ্যে অনেক পরিবর্তন হয়। চিকিৎসক শরীরের অংশ এবং ফোঁড়ার আকারের উপর ভিত্তি করে সার্জারি করেন।
সূত্র: হেলথলাইন
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- যেসব কারণে ত্বক কালো হয়ে যায়
- মেরুদণ্ডের যত্ন নিন
- কাঁচা পেঁপে কাজে পাকা
- সর্দি-কাশিতে কফ সিরাপ নয়, বিকল্প নাগালেই
- বয়সের ছাপ দূর করার ঘরোয়া উপায়
- দুধের সঙ্গে খেজুর মিশিয়ে খেলে কী হয়?
- মুখের কালো দাগ দূর করার সহজ উপায়
- গুণে ভরা লাল কলা
- দক্ষ কর্মীরা কেন প্রতিষ্ঠান ছেড়ে যায়?
- যে ১০ কারণে মানুষ ব্যর্থ হয়!