বয়সের ছাপ দূর করার ঘরোয়া উপায়
বয়সের ছাপ দূর করার ঘরোয়া উপায়
ছবি: সংগৃহীত |
প্রতিটি মানুষের চাহিদা থাকে উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত ত্বক। উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত ত্বক মানুষের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয় দ্বিগুণ। কিন্তু পরিবেশ দূষণ এবং মানসিক দুঃশ্চিন্তা ধীরে ধীরে প্রাণহীন ও নিস্তেজ করে তোলে। যার দরুণ আমাদের চেহারায় বয়সের ছাপ পরে যায়। তবে ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য রয়েছে বেশ কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি। ত্বকে যত কম কেমিক্যাল ব্যবহার করা যায়, ত্বক ততই সুস্থ থাকবে। ঘরোয়া পদ্ধতি তে ত্বক এর যত্ন নিলে, কিছুদিনের মধ্যেই এর সুফল আপনি ভোগ করতে পারবেন।
চলুন জেনে নেওয়া যাক ঘরোয়া উপায়ে বয়সের ছাপ দূর করার পদ্ধতি-
পেঁপে ও মধু
২ চামচ পেঁপের পেস্টের সঙ্গে ২ চামচ মধুর রস মিশিয়ে বৃত্তাকার গতিতে আপনার ত্বকে লাগান। এরপর ১৫ মিনিট এভাবেই মুখে লাগিয়ে রাখুন। পেঁপে ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক স্ক্রাব হিসেবে কাজ করে এবং ত্বকে পুষ্টি যোগায়।
কমলার খোসা
কমলার খোসা কুঁচি করে রোদে শুকিয়ে নিন। ১ চামচ শুকনো কমলার খোসার সঙ্গে ২ চামচ বেসন এবং ১ চামচ দুধ যোগ করে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। মুখে প্যাকটি লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। সাইট্রিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন সি কোলাজেন গঠনে সাহায্য করে। যা আপনার ত্বককে টানটান রাখে এবং ফটোজিং ও হাইপারপিগমেন্টেশন এর উপস্থিতি হ্রাস করে।
তরমুজ এবং শসার প্যাক
তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে লাইকোপিনের উপস্থিতি। এটি বলিরেখা এবং সূক্ষ্ম রেখা সহ বার্ধক্যজনিত লক্ষণগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। গ্রেট করা শসা, গ্রেট করা তরমুজ এবং কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে একটি ফেসপ্যাক তৈরি করে মুখে লাগান। এরপর শুকিয়ে গেলে তেলমুক্ত, উজ্জ্বল ত্বকের জন্য হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
পেঁপে এবং কলা
কয়েক টুকরো পাকা পেঁপে এবং অর্ধেক পাকা কলা নিন। দুটি ফল একসঙ্গে ব্লেড করে ঘন পেস্ট তৈরি করে ত্বকের যে অংশে বলিরেখা রয়েছে সেখানে প্যাকটি লাগিয়ে নিন। ১৫-২০ মিনিট রাখার পর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। পেঁপের মধ্যে প্যাপাইন নামক এনজাইম রয়েছে, অন্যদিকে কলার মধ্যে রয়েছে নানা ভিটামিন যা ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে। ন্যাচরাল এই ফেসপ্যাকটি বলিরেখা মুক্ত করতে এবং ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে দারুণ উপকারী। সপ্তাহে দুই থেকে তিন বার এই প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।
টমেটো
৩ টেবিল চামচ টমেটোর রসের সাথে ১ টেবিল চামচ লেবুর রস, ২ টেবিল চামচ দুধের ক্রিম যোগ করে একটি মসৃণ পেস্ট তৈরি করুন। ১৫ মিনিট রাখুন এরপর ধুয়ে ফেলুন। টমেটোতে রয়েছে লাইকোপেন যা ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করে এবং টানটান করে। এতে অ্যাস্ট্রিঞ্জেন্ট বৈশিষ্ট্যও রয়েছে যা আপনার ত্বককে সতেজ রাখে।
অ্যালোভেরা
সংবেদনশীল ত্বকের ক্ষেত্রে অ্যালোভেরা বেশি কার্যকরী। সেইসঙ্গে এটি কাটা বা পোড়া দাগ দূর করতেও দারুণ কাজ করে। অ্যালোভেরা ত্বকে প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার বা ফেসপ্যাক হিসেবেও দুর্দান্ত। অ্যালোভেরায় আছে প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য, ত্বকের জ্বালাপোড়া কমিয়ে ত্বক শীতল করতে কার্যকরী এই উপাদান। নিয়মিত অ্যালোভেরা ব্যবহার করলে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে না।
নিমপাতা
ওষধিগুণ সম্পন্ন ভেষজ হলো নিমপাতা। এটি ত্বককে পরিষ্কার করে এবং সেইসঙ্গে ত্বকের যেকোনো সংক্রমণও প্রতিরোধ করে। নিয়মিত নিমপাতা ব্যবহার করলে ত্বকে ব্রণের সমস্যা দূর হয়। ত্বকে কোনো সমস্যা দেখা দিলে সেখানে ব্যবহার করতে পারেন নিমের তেল বা নিমের পাউডার।
হলুদ
ত্বকের যত্নে হলুদের ব্যবহার নতুন নয়। হলুদের উপকারিতা অনেক। এটি নানাভাবে ত্বকের জন্য কাজ করে থাকে। হলুদে থাকে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা ত্বকের দাগ-ছোপ, ব্রণ ইত্যাদি সমস্যা দূর করে। সেইসঙ্গে ত্বককে সুস্থ ও উজ্জ্বল রাখতেও হলুদের জুড়ি নেই। এটি চেহারায় বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। যে কারণে আপনি ত্বকের যত্নে নিয়মিত হলুদ ব্যবহার করলে আপনার ত্বকে বজায় থাকবে তারুণ্য।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়