টেলিমেডিসিনে আস্থা বাড়ছে মানুষের, সাড়া`য় পড়েছে সাড়া
টেলিমেডিসিনে আস্থা বাড়ছে মানুষের, সাড়া`য় পড়েছে সাড়া
যাত্রা শুরুর চার দিনের মাথায় প্রতিদিন গড়ে এক শ' মানুষ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছেন ‘সাড়া’ টেলিমেডিসিন থেকে। সারা দেশের অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের কাছ থেকে সেবা পাচ্ছেন তারা। অর্থের অভাব কিংবা দূরত্বের বাধার কারণে এখন আর কারো জন্যই আটকে থাকছে না জরুরি ডাক্তার দেখানোর বিষয়টি। সাড়া’র হটলাইন 09612300900 নাম্বারটি ধীরে ধীরে আস্থা অর্জন করে নিচ্ছে দেশের মানুষের। সাড়া'র পক্ষ থেকে পাঠানো সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, সাড়া’র হটলাইন নাম্বারে কোনো রোগী ফোন করলে কলটি তৎক্ষণাৎ সাড়ার একজন ডাক্তার রিসিভ করছেন। এরপর সেটি প্রয়োজন অনুযায়ী ট্রান্সফার করা হচ্ছে অপেক্ষমান একজন ডাক্তারের কাছে। তিনি তখন কলটি রিসিভ করে রোগীর সাথে বিস্তারিত কথা বলছেন। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে রোগের বিস্তারিত বিবরণ শুনে তাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শপত্রও দিচ্ছেন। এরপর সেই পরামর্শপত্রটি মেসেজ আকারে পৌঁছে যাচ্ছে কলারের ফোনে। কখনো ফোনের এপারে সাড়া’র নির্ধারিত চিকিৎসক প্যানেলের ডাক্তাররা সবাই ব্যস্ত থাকলে, তখন ওই কলারকে বলা হচ্ছে ফোনটি কেটে দিয়ে ৫-১০ মিনিট অপেক্ষা করার জন্য। এরপর ডাক্তার ফ্রি হওয়ামাত্র ফিরতি কল করা হচ্ছে ওই রোগীকে। ফলে ব্যর্থ মনোরথ হয়ে ফিরতে হচ্ছে না কাউকেই। আর এই গোটা প্রক্রিয়াটির জন্য কলার বা রোগীকে একটি টাকাও খরচ করতে হচ্ছে না।
ফোনের মাধ্যমে এ ধরনের আন্তরিক এবং অভিনব সেবা পাওয়ার কারণে ব্যাপকভাবে উপকৃত হচ্ছেন মানুষ। ডাক্তার খুঁজে বেড়াতে হচ্ছে না, হাসপাতালে দৌড়াতে হচ্ছে না। সবচেয়ে বড় কথা, করোনাকালে নিশ্চিন্তে সামাজিক দূরত্ব মানা সম্ভব হচ্ছে, স্বাস্থ্যগত যে ধরনের জটিলতাই হোক না কেন, ডাক্তারের কাছে যেতে ঘরের বাইরে যেতে হচ্ছে না তাদের। প্রযুক্তির কল্যাণে হাতের মুঠোয় মোবা্ইল ফোন স্ক্রিন হাজির হয়ে যাচ্ছেন সব ধরনের রোগের জন্য সব ধরনের ডাক্তার।
শিগগিরই বিনামূল্যে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ পাওয়ার ব্যবস্থাও করতে যাচ্ছে সাড়া, জানানো হয়েছে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। বলা হয়েছে বাংলাদেশের পাশাাপশি যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও প্রস্তুত হয়েছেন বিনামূল্যে এই সেবা দেওয়ার জন্য।
কোভিড-১৯ মহামারিতে বিপর্যস্ত বিশে^র পাশাপাশি বাংলাদেশেও হুমকির মুখে পড়েছে মানুষের স্বাস্থ্যসেবা। এ সংকট থেকে উত্তরণে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে ওঠা টেলিমেডিসিন স্বাস্থ্যসেবা এবার ‘সাড়া’ উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশেও এনে দিল চিকিৎসকদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘প্ল্যাটফর্ম’ এবং বুয়েটিয়ানদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘অঙ্কুুর’।
গত ২৬ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে সাড়ার যাত্রা। সাড়া’র স্নোগান, ‘আমাদের ডাকুন, আমরা সাড়া দিচ্ছি’।
সম্প্রতি একটি ভার্চুয়াল লাইভ সংবাদ সম্মেলনে ‘সাড়া’ উদ্যোগের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে কথা বলেন এর উদ্যোক্তারা। তারা জানান, কোনো প্রাপ্তির আশায় নয়, বরং বিপর্যয়কালে বাংলাদেশের মানুষের অপরিহার্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতেই এই প্রথম আমরা, দেশের প্রকৌশলী ও চিকিৎসকরা একমঞ্চ হয়েছি। এক পক্ষ দেবে স্বাস্থ্যসেবা আর অন্য পক্ষ দেবে তার জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি।
‘সাড়া’ প্রকল্পে সহযোগিতা দিচ্ছে বুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সংযোগ; এবং গোটা কার্যক্রমের কারিগরি সহযোগিতা দিচ্ছে বিনির্মাণ টেকনোলজিস।
সংবাদ সম্মেলনে ‘সাড়া’ উদ্যোগ নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তাদের মধ্যে ছিলেন, ইন্টেল করপোরেশনের প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার ও অঙ্কুর ইন্টারন্যাশনালের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শায়েস্তাগীর চৌধুরী, পিএইচডি এবং ইন্টেল করপোরেশনের সিনিয়র প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার ও অঙ্কুর ইন্টারনাশনালের কোষাধ্যক্ষ ও পরিচালক মাহমুদ আলম; স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসকদের ফোরাম প্ল্যাটফর্মের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ডা. আহমেদুল হক কিরণ ও সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সল বিন সালেহ; সংযোগ-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা কাইজার ওয়াটার্স এবং হারিস অ্যান্ড মেনুকের হেড অব সেলস আহমেদ জাভেদ জামাল; বুয়েট অ্যালামনাইয়ের ট্রাস্টি কাজি এম আরিফ; বুয়েট শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে শিল্প ও উৎপাদন প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. একেএম মাসুদ; বুয়েট ব্যাচ ৯০-এর পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের এসএফডবলিউএমডির লিড ইঞ্জিনিয়ার ফাহমিদা খাতুন; যুক্তরাষ্ট্রের মটোরোলা সল্যুশানস ইনক. এর লিড ইঞ্জিনিয়ার কানিজ ফাতেমা; সেন্টার ফর রিনিউয়েবল এনার্জি সার্ভিস লিমিটেডের চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী; কোভিড-১৯ বিশেষজ্ঞ ও কনসালট্যান্ট বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. নাহিদ ফাতেমা এবং কর্নেল ইউনিভার্সিটির ক্লিনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ও লন্ডন মেডিকেল সেন্টারের কার্ডিওলোজিস্ট ডা. সিরাজুম মুনিরা লোপা এবং বিনির্মাণ টেকনোলজিসের পক্ষ থেকে এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর তানভির আরাফাত ধ্রæব এবং নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ ইমতিয়াজ আহমেদ।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়