শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪ || ৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১ || ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

ক্যান্সার প্রতিরোধে খাদ্যাভ্যাস

মাহফুজা আফরোজ সাথী, প্রধান পুষ্টিবিদ, ইমপেরিয়াল হসপিটাল

১১:৩২, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১

আপডেট: ১৫:৫৭, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১

৩৫৬৮

ক্যান্সার প্রতিরোধে খাদ্যাভ্যাস

৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ক্যান্সার দিবস। সারাবিশ্বে এই দিনটি বিভিন্ন আয়োজনে পালন করা হয়। আমাদের দেশেও তাই। তারই ধারাবাহিকতায় আমি যেহেতু বিগত ৩ বছর ধরে ক্যান্সার রোগীর পুষ্টিগত দিক নিয়ে কাজ করছি ফলে এর ভয়াবহতা নিজের চোখে দেখেছি। তাই আজ ক্যান্সার নিয়ে কিছু কথা লিখছি।

আসলে ক্যান্সার একটিমাত্র রোগ নয়। শুরুটা একটি অংশে হতে পারে তবে পরবর্তীতে তা দেহের অন্যান্য অংশেও ছড়ায়।

ক্যান্সারের বিভিন্ন ধরণ রয়েছে।
১. Carcinoma : skin বা, Epithelial tissue সংক্রান্ত ক্যান্সার।
২. Sarcoma: Connective tissue যেমন: হাঁড়, কার্টিলেজ, রক্তনালী সংক্রান্ত ক্যান্সার।
৩. Leukemia : Bone marrow তে যে ক্যান্সার হয় সেগুলো এই শ্রেণীভুক্ত।
৪. Lymphoma, Myeloma: Immune system এর ক্যান্সার।

ক্যান্সারের প্রকোপ দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। সারাবিশ্বে প্রতি বছর ১৪.১ মিলিয়ন নতুন রোগী সনাক্ত হয়। আর ক্যান্সারজনিত কারণে মারা যায় ৮.২ মিলিয়ন। এই রোগীগুলো অধিকাংশই স্বল্পোন্নত দেশের। ৫৭% ক্যান্সার রোগী এশিয়া ও অফ্রিকা মহাদেশের। এদের মধ্যে ৬৫% রোগী প্রতি বছর মারা যায়। আর শুধু আমেরিকাতে বছরে প্রতি ১০০,০০০ জনে ৪৩৯.২ জন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। এই রোগীদের পরিণতি এতটাই ভয়াবহ হয় যে আক্রান্তদের মধ্যে  প্রতি ১০০,০০০ জনে ১৬৩.৫ জন মারা যায়।

ক্যান্সার নানাবিধ কারণে হতে পারে তবে এখন পরিবেশগত কারণ ও জীবনযাপনের ধরণকে অনেকাংশেই দায়ী করা হচ্ছে। ক্যান্সার প্রতিরোধ করার জন্য খাদ্যাভাস কিছুটা পরিবর্তন করলে অনেক উপকারী ভূমিকা রাখে।

প্রতিদিন সবুজ শাক সবজি, লাল হলুদ ফল, একমুঠো বাদাম অত্যন্ত কার্যকরী ক্যান্সার প্রতিরোধে। সমীক্ষায় দেখা গেছে যারা সপ্তাহে ৩ দিন অন্তত টমেটো খায় তাদের প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি শতকরা ৫৬ ভাগ কম।

পর্যাপ্ত ঘুম, প্রতিদিন নূন্যতম ৮ গ্লাস পানি পান এবং কায়িক শ্রম ক্যান্সারকে দেহে বাসা বাঁধতে দেয় না।

ক্যান্সারের চিকিৎসাকালীন সময়েও ডায়েটের ভূমিকা অনেক। Chemotherapy চলাকালীন সময়ে রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় ফলে opportunistic Infection এর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ‘নিউট্রপেনিক ডায়েট’ দেয়া হয়। এ ডায়েটে কাঁচা ফল, সবজি,সালাদ খেতে নিষেধ করা হয় কেননা এগুলো থেকে খাদ্যবাহিত নানাবিধ সংক্রমণ হতে পারে।

তাছাড়া ক্যান্সার চিকিৎসা চলাকালীন উচ্চমাত্রার প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে। বাদ দিতে হবে চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার।

হলুদ, আদা, ডার্ক চকলেট আর কালোজিরা ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি ও ইনফ্ল্যামেশন রোধে কাজ করে।

ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে যে রোগীরা মারা যান তাদের অধিকাংশ কারণই অপুষ্টি। ক্যান্সার হলে মুখে রুচি থাকে না, কারণ চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। তাই সঠিক খাদ্য ব্যবস্থাপনাই পারে ক্যান্সারের সাথে লড়াই করার শক্তি যোগাতে।

ক্যান্সারকে জানুন, নিজে বাঁচুন, আপনজনদের বাঁচান।

Statistical Reference: International Agency for Research on Cancer.

মাহফুজা আফরোজ সাথী: প্রধান পুষ্টিবিদ, ইমপেরিয়াল হসপিটাল, চট্টগ্রাম।

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank