চাইলে আপনিও পারেন সম্ভাব্য আত্মহত্যা প্রতিরোধ করতে
চাইলে আপনিও পারেন সম্ভাব্য আত্মহত্যা প্রতিরোধ করতে
চাইলে আপনিও পারেন সম্ভাব্য আত্মহত্যা প্রতিরোধ করতে |
আত্মহত্যার কথা চিন্তা না করে সাহায্য গ্রহণ করুন। জাতীয় জরুরি সহায়তা নাম্বার ৯৯৯-এ ফোন করলে এ বিষয়ে সহায়তা পাওয়া যাবে। এছাড়া, কান পেতে রই নামক মানসিক সহায়তা হেল্পলাইন থেকেও সাহায্য নিতে পারেন। তাদের সাথে যোগাযোগের নাম্বারগুলো লেখার শেষে দেওয়া হলো।
একজন মানুষ যখন আত্মহত্যা করেন তখন হয়তো তিনি তার নিজের যাতনাগুলো থেকে মুক্তি পান, কিন্তু তার এই কাজের ফলে তার আশেপাশের অনেকে কষ্ট পান।
আত্মহত্যা মানুষ তখনই করে যখন মানুষের সবরকম সহ্যক্ষমতা ছাড়িয়ে যায়। তবে কাউকে সে পর্যায়ে পৌঁছাতে অনেকগুলো যন্ত্রণাদায়ক ধাপ পেরোনো লাগে।
এসব ধাপে অন্যরা যদি তাকে সাহায্য করে, তাহলে হয়তো আত্মহত্যা থেকে ব্যক্তিকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। অর্থাৎ আত্মহত্যা প্রতিরোধ করা যায় সম্মিলিত প্রচেষ্টায়।
কেউ আত্মহত্যা করতে যাচ্ছে কিনা তা কী করে বুঝবেন? অনেকগুলো লক্ষণ তার মধ্যে প্রকাশ পেতে পারে। সেগুলো ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলে আগাম ধারণা পাওয়া যায় কোনো ব্যক্তি আত্মহত্যা করার পর্যায়ে যাচ্ছেন কিনা।
১) বিষণ্ণতা: আপনার আশপাশের কেউ সবসময় বিষণ্ণ থাকলে হতে পারে তার এ বিষণ্নতাই তাকে কোনো একদিন আত্মহত্যার দিকে নিয়ে যাবে।
২) বিদায় প্রস্তুতি: এ রকম ক্ষেত্রে দেখা যায় ব্যক্তি তার পছন্দের জিনিসপত্র অন্য কাউকে দিয়ে যাচ্ছেন। অনলাইন থেকে নিজেকে মুছে ফেলছেন। বন্ধুদের থেকে বিদায় নিয়ে নিচ্ছেন ইত্যাদি।
৩) আচরণে পরিবর্তন: ব্যক্তি হঠাৎ করে সবার কাছ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়। সবসময় নিজের মতো মনমরা হয়ে থাকে। সবকিছুতে মনোযোগ হারায়।
৪) হুমকি: এক্ষেত্রে ব্যক্তি সরাসরি বলতে পারেন, 'আমি মরতে চাই', অথবা পরোক্ষভাবে বলতে পারেন, 'আমি না থাকলে-ই-বা কার কী এসে যায়' ইত্যাদি। এগুলোকে হাসির ছলে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। খোদ ব্যক্তি নিজেই এগুলোকে কৌতুকপূর্ণভাবে বলতে পারেন।
৫) সুইসাইড নোট: ব্যক্তির অধিকারে থাকা কোনোপ্রকার সুইসাইড নোট পাওয়া গেলে তার ব্যাপারে বিশেষ নজর রাখতে হবে।
আত্মহত্যার প্রতিকার করারও কিছু উপায় আছে।
১) প্রথমেই ওপরে লেখা লক্ষণগুলো সবসময় মাথায় রাখতে হবে এবং এগুলোর কোনোটি কারও মধ্যে দেখা গেলে তার ব্যাপারে বিশেষ যত্নবান হতে হবে।
২) অন্যদের সাথে কোনো সম্ভাব্য আত্মহত্যা নিয়ে কথা বলতে হবে। কাউকে যদি দেখা যায় আত্মহত্যা করার কোনো লক্ষণ দেখাচ্ছে, তাহলে তার সাথে যেমন এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে হবে তেমনিভাবে অন্যদের কাছ থেকে এ ব্যাপারে সাহায্য চাওয়া যেতে পারে।
৩) অন্যের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। কেউ যদি তার দুঃখবোধের কথা আপনার সাথে শেয়ার করতে চায়, তাহলে তার সব কথা কোনোপ্রকার বাঁধা না দিয়ে চুপচাপ শুনে যেতে হবে।
৪) সাহায্য গ্রহণের জন্য উৎসাহ দেওয়া যেতে পারে ব্যক্তিকে। কেউ যদি বিষণ্নতায় ভোগে তাহলে তাকে অনুরোধ, পরামর্শ, উৎসাহ দেওয়া যেতে পারে কোনো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার জন্য। এমনকি ব্যক্তি যদি আপনার সাথে সবকিছু শেয়ার না করতে চায়, তাহলে তাকে তার পছন্দের কোনো মানুষের কাছে মন খুলে কথা বলার জন্য তাকে আন্তরিক অনুরোধ করতে হবে।
৫) কারও মধ্যে যদি আত্মহত্যা করার লক্ষণগুলো প্রকট হয়ে দেখা যায়, তাহলে তাকে কখনোই একা ছাড়া যাবে না। কোনোপ্রকার বস্তু যা দিয়ে তারা নিজেদের আঘাত করতে পারবে, সেগুলো থেকে তাদেরকে দূরে রাখতে হবে।
৬) তারা যদি আপনাকে তাদের বিষয়ে অন্যকে কোনো কথা না বলার শপথ করায়, তাহলে সে শপথ ভাঙতে হবে। তাদের বিষয়ে কিছুই গোপন করা যাবে না। এতে তারা মনঃক্ষুণ্ন হলেও তাদের ভালোর জন্যই অন্যকে তাদের পরিস্থিতির কথা জানাতে হবে।
সূত্র: ভেরি ওয়েল মাইন্ড ও ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব স্কুল সাইকোলজিস্ট
কান পেতে রই-এর সাথে যোগাযোগের উপায়:
গ্রামীনফোন: ০১৭৭৯৫৫৪৩৯১, ০১৭৭৯৫৫৪৩৯২
এয়ারটেল: ০১৬৮৮৭০৯৯৬৫, ০১৬৮৮৭০৯৯৬৬
বাংলালিংক: ০১৯৮৫২৭৫২৮৬
রবি: ০১৮৫২০৩৫৬৩৪
টেলিটক: ০১৫১৭৯৬৯১৫০
শুক্রবার থেকে বুধবার দুপুর ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টা থেকে ভোর ৩টা পর্যন্ত ফোন করা যাবে। এছাড়া ইমেইল করা যাবে [email protected] ঠিকানায়। ওয়েবসাইট: http://shuni.org/
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়