শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪ || ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১ || ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

অবশেষে টুইটার কিনেছেন মাস্ক

সাই-টেক ডেস্ক

০১:১৩, ২৮ অক্টোবর ২০২২

৬৪৫

অবশেষে টুইটার কিনেছেন মাস্ক

জলঘোলা করার পর অবশেষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটার কিনে নিয়েছেন বলে ঘোষণা দিলেন বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্ক। বৃহস্পতিবার এক টুইটবার্তায় এই ঘোষণা দেন তিনি।

নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টের নামও পরিবর্তন করেছেন তিনি। অ্যাকাউন্টের নতুন নাম দিয়েছেন ‘চিফ টুইট’। সেই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের অভয় দিয়ে বলেছেন, নতুন মালিকানায় টুইটার কর্তৃপক্ষ কোনো নিষ্ঠুর সিদ্ধান্ত নেবে না।

টুইটারের বিজ্ঞাপনদাতাদের উদ্দেশে বৃহস্পতিবার এক টুইটবার্তায় তিনি বলেন, ‘প্রিয় টুইটার বিজ্ঞাপনদাতারা, আমি কী কারনে টুইটার কিনেছি— তা পরিষ্কার করতে সম্ভব হলে আপনাদের সবার সঙ্গে আমি ব্যক্তিগতভাবে দেখা করতাম। কারণ, কেন আমি টুইটার কিনেছি এবং এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিজ্ঞাপনদাতাদের সম্পর্কে আমি কী চিন্তা-ভাবনা করি— এসব ব্যাপার নিয়ে বাজারে অনেক অনুমান ও ধারণার উদ্ভব হয়েছে। এসব অনুমান এবং ধারণার অধিকাংশই ভুল।’

বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান টেসলা ও মহাকাশযানের যন্ত্রাংশ ও অন্যান্য উপকরণ প্রস্তুতকারী কোম্পানি স্পেসএক্সের শীর্ষ নির্বাহী এই ধনকুবের আরও বলেন, ‘সভ্যতার ভবিষ্যতের স্বার্থেই একটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত একটি ডিজিটাল টাউন স্কয়্যার প্রয়োজন যেখানে মানুষজন তাদের চিন্তা-ভাবনা প্রকাশ করতে পারবে। এসব চিন্তাভাবনা নিয়ে বিতর্ক হতেই পারে, তবে অবশ্যই সেসব বিতর্ক হতে হবে স্বাস্থ্যকর। এমন তর্ক-বিতর্ককে অবশ্যই সেই ডিজিটাল প্ল্যাটফরমে সমর্থন করা হবে না— যেগুলো সংঘর্ষ উস্কে দিতে পারে।’

‘আমাদের এই প্ল্যাটফরম অবশ্যই বন্ধুত্বপূর্ণ হবে এবং সবাইকে স্বাগত জানাবে। এটা এমন একটি জায়গা হবে, যেখানে প্রত্যেক ব্যবহারকারী তার নিজ নিজ পছন্দের ক্ষেত্র খুঁজে পাবেন। যেমন উদারণ হিসেবে বলা যায়, যারা সিনেমা পছন্দ করেন— তাদের জন্য এখানে যেমন জায়গা থাকবে, তেমনি যারা ভিডিও গেম পছন্দ করেন, তারাও এখানে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন।’

বর্তমানে বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা করে ৫১ বছর বয়সী মাস্ক বলেন, ‘বর্তমানে যেসব মিডিয়া প্রচলিত রয়েছে, সেগুলোর সবই কোনো না কোনো ভাবে উগ্র ডান বা বামপন্থার সমর্থক। তারা বিশ্বাস করে, নিজেদের বাণিজ্যের জন্য এই দুই নীতির কোনো একটিকে তাদের এগিয়ে নিতে হবে।’

‘এতে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হয় বটে, কিন্তু আলোচনার সুযোগ কিংবা ক্ষেত্র হারিয়ে যায়।’

‘এ কারণেই আমি টুইটার কিনেছি। আমার জন্য এটা কেনা সহজ ছিল বলে কিনেছি— ব্যাপারটি এমন নয়। আমি টাকা কামানোর জন্য টুইটার কিনিনি। বরং মানবতাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কিনেছি, কারণ মানবতাকে এগিয়ে নেওয়া সংক্রান্ত যে কোনো পদক্ষেপের প্রতিই আমার ভালবাসা রয়েছে।’

‘কিন্তু এটাও আমি সবিনয়ে স্বীকার করে নেব যে, সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকা সত্ত্বেও আমাদের মধ্যে হয়তো খুঁত থেকে যাবে। তবে সেসব খুঁতকে অতিক্রমের চেষ্টা সবসময়ই টুইটারের থাকবে।’

ইলন মাস্ক টুইটার কিনছেন— এমন একটি গুঞ্জন চলতি বছর এপ্রিলের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে মাস্কও এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কিনছেন তিনি।

কিন্তু তারপর মে মাসেই মন ঘুরে যায় তার। টুইটারে কতগুলো ভুয়া অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তার প্রকৃত তথ্য তাকে দেওয়া হচ্ছে না। এ তথ্য না পেলে টুইটার কিনবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি।

এ নিয়ে টুইটার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাদানুবাদ শুরু হয় মাস্কের। তারপর কয়েক মাস ধরে টুইটারের চুক্তি থেকে বের হওয়ার নানা চেষ্টা চালিয়েছেন তিনি। মাস্কের গড়িমসির কারণে এক পর্যায়ে টুইটার কর্তৃপক্ষ আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলা করে। ইলন মাস্কও নানা আইনি মারপ্যাঁচে মামলার কার্যক্রম দেরি করানো থেকে শুরু করে নানা কৌশল নিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি।

গত ১৭ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়্যার অঙ্গরাজ্যের চ্যান্সেরি আদালত এক রায়ে জানান, আগামী ২৮ অক্টোবরের মধ্যেই টুইটার কিনতে হবে ইলন মাস্ককে এবং এটি কিনতে হবে পূর্ব প্রতিশ্রুত ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলারেই।

আদালতের রায় মেনে সময়সীমা পেরোনোর এক দিন আগেই টুইটার কিনে নিয়েছেন বলে ঘোষণা দিলেন মাস্ক। বৃহস্পতিবার তাকে টুইটারের মূল কার্যালয়ে একটি সিঙ্ক বহন করতেও দেখা গেছে।

এর আগে ইলন মাস্ক বলেছিলেন, টুইটারে নানা পরিবর্তন আনতে হবে। সেসব পরিবর্তনের অংশ হিসেবে টুইটারের প্রায় ৭৫ শতাংশ কর্মীকে ছাঁটাই হতে পারে বলেও আভাস দিয়েছিলেন তিনি। সামনের মাসগুলোয় টুইটারে কর্মী ছাঁটাই হতে পারে।

টুইটারের মালিকানা ইলন মাস্ক কিংবা বর্তমান কর্তৃপক্ষ যার হাতেই থাকুক না কেন, প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মী ছাঁটাই হবে। ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, টুইটারের বর্তমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ আগামী বছরের শেষ নাগাদ কোম্পানির কর্মীদের বেতন বাবদ বরাদ্দ থেকে ৮০ কোটি ডলার কাটছাঁটের পরিকল্পনা করেছে। এর মানে হলো, প্রতিষ্ঠানটির প্রায় এক–চতুর্থাংশ কর্মশক্তিকে বিদায় নিতে হবে।

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank
সাই-টেক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত