রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪ || ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১ || ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

গবেষণায় বাংলাদেশে বিক্রি হওয়া শিশুখাদ্য সেরেলাক নিয়ে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য

অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক

১৬:৫৫, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

৪৪৪

গবেষণায় বাংলাদেশে বিক্রি হওয়া শিশুখাদ্য সেরেলাক নিয়ে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য

বহুজাতিক খাদ্য প্রস্তুতকারী সংস্থা নেসলে বিশ্বের বহু দেশের মতো বাংলাদেশেও অত্যন্ত জনপ্রিয়। সুইজারল্যান্ডের প্রতিষ্ঠান নেসলের শিশুখাদ্য সেরেলাকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বাংলাদেশে। সুইজারল্যান্ডের অলাভজনক বেসরকারি সংগঠন পাবলিক আই ও ইন্টারন্যাশনাল বেবি ফুড অ্যাকশন নেটওয়ার্কের যৌথ গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে সেরেলাক নিয়ে।

পাবলিক আইয়ের প্রতিবেদন অনুসারে, সুইজারল্যান্ডে নেসলে তাদের পণ্য সেরেলাকে বাড়তি কোনো চিনি মেশায় না। তবে দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ, ভারতসহ উন্নয়নশীল দেশ ও দরিদ্র দেশগুলোতে তারা সেরেলাকে চিনি মেশায়।

আশঙ্কাজনক ব্যাপার হলো, শিশুদের জন্য নেসলের ব্র্যান্ড নিডোর যেসব পণ্য আছে তার সবগুলোতেই বাড়তি চিনি আছে।

সুইজারল্যান্ডে বিস্কুট স্বাদের সেরেলাকে কোনো প্রকার চিনির ব্যবহার ছাড়াই বিক্রি করছে নেসলে। কিন্তু ঠিক একই পণ্যতে চিনি মিশিয়ে সেনেগাল, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নশীল কিংবা দরিদ্র দেশগুলোতে বিক্রি করছে। দক্ষিণ আফ্রিকা এবং সেনেগালে এ স্বাদের সেরেলাকের প্রতি প্যাকে ৬ গ্রাম চিনি রয়েছে।

পাবলিক আই ও ইন্টারন্যাশনাল বেবি ফুড অ্যাকশন নেটওয়ার্কের যৌথ গবেষণায় আরও ওঠে এসেছে, নেসলের ৯টি পণ্য বাংলাদেশের বাজারে বিক্রি হয়, যার প্রতিটিতেই বাড়তি চিনি আছে। গড়ে এসব পণ্য থেকে একটি শিশু সাধারণভাবে একবার যে পরিমাণ খাবার গ্রহণ করে তাতে প্রায় ৩ দশমিক ৩ গ্রাম বাড়তি চিনি রয়েছে।

বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতে বিক্রি হওয়া সেরেলাকেও চিনি ব্যবহার করা হয়। এ ব্যাপারে দেশটির হিন্দুস্তান টাইমস, ইন্ডিয়া টুডে, ইন্ডিয়া ডটকমের মতো গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। নেসলের ১৫টি পণ্য চালু আছে ভারতের বাজারে, যার প্রতিটিতেই বাড়তি চিনি আছে। এসব পণ্যে গড়ে প্রায় ২ দশমিক ৭ গ্রাম বাড়তি চিনি রয়েছে।

বাংলাদেশ ছাড়াও পাকিস্তান, নাইজেরিয়া, ফিলিপাইন, সেনেগাল, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, ইথিওপিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলোতেও নেসলের শিশুখাদ্য বাড়তি চিনির প্রমাণ মিলেছে। বিপরীতে জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যের মতো ইউরোপীয় দেশগুলোতে এসব পণ্যে বাড়তি চিনি পাওয়া যায়নি।

দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের উইটওয়াটারসরান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্যের অধ্যাপক ও শিশু বিশেষজ্ঞ কারেন হফম্যান জানান, শিশুর খাবারে চিনি যোগ করার কোনো বৈধ কারণ নেই। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ রয়েছে, রোগ প্রতিরোধের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক নির্দেশিকা অমান্য করে নেসলে গরিব দেশগুলোতে শিশুদের পণ্যে চিনি মেশায়। শিশুদের সেরেলাকে মেশানো এসব চিনি স্থূলতা এবং বেশ কিছু দীর্ঘস্থায়ী রোগের কারণ হতে পারে।

ব্রাজিলের পারাইবা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি বিভাগের অধ্যাপক রডরিগো ভিয়ানা জানান, ‘এটা উদ্বেগজনক। শিশু ও কমবয়সীদের খাদ্যে অতিরিক্ত চিনি মেশানো উচিত নয়। এটা অপ্রয়োজনীয় তো বটেই, অত্যন্ত আসক্তি সৃষ্টিকারীও। এতে বাচ্চারা মিষ্টত্বের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। ফলে আরও বেশি মিষ্টি খাবারের দিকে ঝোঁকে। দেখা যায়, প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে পৌঁছনোর আগেই তাদের খাদ্যে পুষ্টির শৃঙ্খলা নষ্ট হয়ে যায়।’

 

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank
স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত