এক রক্ত পরীক্ষায় শনাক্ত হবে ৫০ ধরনের ক্যান্সার!
এক রক্ত পরীক্ষায় শনাক্ত হবে ৫০ ধরনের ক্যান্সার!
মাত্র একটি ডিএনএ রক্ত পরীক্ষায় নির্ণয় করা সম্ভব হবে ৫০ ধরনের ক্যান্সার। অ্যানালস অব অনকোলজি জার্নালে শুক্রবার (২৫ জুন) প্রকাশিত এক গবেষণায় এমনটাই দাবি করা হয়েছে।
গবেষকদের দাবি সত্য হলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নতুন বিপ্লব আসছে বলে দেয়া যায়। কারণ ৫০ ধরনের ক্যান্সারের মধ্যে এমন ধরনও আছে যেগুলো শনাক্ত করার কার্যকর কোন পদ্ধতিই নেই।
ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের গ্লিকম্যান ইউরোলজিকাল অ্যান্ড কিডনি ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. এরিক ক্লেইন বলেন, বর্তমানে প্রতিটি ক্যান্সারের জন্য আমাদের আলাদা আলাদা পরীক্ষা করাতে হয়। আমাদের গবেষণা মতে, একটি রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ৫০ ধরনের ক্যান্সার শনাক্ত করা সম্ভব।
নতুন রক্ত পরীক্ষাটি তথাকথিত সেল-মুক্ত ডিএনএ (সিএফডিএনএ) এর উপস্থিতি সন্ধান করে যা ক্যান্সারজনিত টিউমারগুলির লক্ষণ প্রকাশ করে।
গবেষণার সর্বশেষ পর্যায়ে ক্যান্সার শনাক্ত হওয়া ২ হাজার ৮০০ জন এবং এক হাজার ২৫০ জন সুস্থ মানুষের রক্ত পরীক্ষা করা হয়, যার ফলাফল অনেক আশা দেখাচ্ছে বলে জানান ড. ক্লেইন।
গবেষণায় ক্যান্সারের চার স্তর ধরে দেখা যায় চতুর্থ স্তরের ক্যান্সার শনাক্তে সবচেয়ে সফল তাদের রক্ত পরীক্ষা। এই স্তরে থাকা রোগীদের ৯০.১ শতাংশের ক্যান্সার সঠিকভাবে শনাক্ত হয়। এছাড়া তৃতীয় স্তরের ৭৭ শতাংশ, দ্বিতীয় স্তরের ৪০.৪ শতাংশ ও প্রথম স্তরের ১৬.৮ শতাংশ সঠিকভাবে শনাক্ত হয়।
সব মিলিয়ে সঠিক শনাক্তের সংখ্যা ৫১.৫ শতাংশ। আর ফলস পজিটিভ বা ক্যান্সার না থাকা মানুষের ফলাফল ইতিবাচক এসেছে মাত্র ০.৫ শতাংশ।
এই ফলাফলেও তাদের রক্ত পরীক্ষাকে ক্যান্সার শনাক্তের টুল হিসেবে ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট বলছেন ড. ক্লেইন। বিশেষত খাদ্যনালী, যকৃত ও অগ্নাশয়ের ক্ষেত্রে।
ক্যান্সারের সব স্তুর জুড়ে হিসেব করলে দেখা যায়, শনাক্তের জন্য যেসব ক্যান্সারের কার্যকর পদ্ধতি আছে সেগুলোর চেয়ে অন্যগুলোর ক্ষেত্রে এই রক্ত পরীক্ষা বেশি কার্যকর। যেমন স্তন, অন্ত্র ও জরায়ু বা প্রোস্টেট ক্যান্সার নির্ণয়ে রক্ত পরীক্ষার সফলতা ৩৩.৭ শতাংশ।
অন্যদিকে যেসব ক্যান্সারের কার্যকর নির্ণয় পদ্ধতি নেই যেমন- খাদ্যনালী, যকৃত এবং অগ্ন্যাশয় ক্যান্সার নির্ণয়ে এই রক্ত পরীক্ষার সাফল্য ৬৫.৬ শতাংশ।
সর্বোপরি, ক্লেইন ও তার গবেষক দল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, লক্ষণ দেখা যাক বা না যাক, ক্যান্সারের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা লোকদের রোগ নির্ণয়ে এই রক্ত পরীক্ষা এক কার্যকর পদ্ধতি। যা নির্ণয় টুল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।
অধ্যয়নের ফলাফল পর্যালোচনা করার পরে, আমেরিকান সোসাইটি অফ ক্লিনিকাল অনকোলজির চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. জুলি গ্রাও এই গবেষণাকে "দারুণ" মন্তব্য করলেও সতর্ক করে বলেন, পরীক্ষাটি "এখনও প্রাইম টাইমের জন্য প্রস্তুত নয়।"
তবে তিনি আরও বলেন, পদ্ধতিটি একটা বাস্তব সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করছে। কেননা অনেক মারাত্মক ক্যান্সারের এখনও সঠিক নির্ণয় পদ্ধতি নেই। এই রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে হয়তো এই ক্যান্সারগুলো আরও সহেজেই উদঘাটন করা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- পুরুষের দেহে টেস্টোস্টেরন অতিরিক্ত বেড়ে বা কমে গেলে কী হয়?
- বিএসএমএমইউ`র ৩৭০ শয্যার করোনা সেন্টারে রোগী ভর্তি শুরু
- আইসিডিডিআর,বি-র প্রথম বাংলাদেশি নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ
- ১০ লক্ষণে বুঝুন আপনার করোনা হয়ে সেরে গেছে
- এশিয়ার নোবেলখ্যাত ম্যাগসেসে পুরস্কার পেলেন ড. ফিরদৌসী কাদরী
- সাইমুম তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে
- কৈশোর মানব জীবনের এক অনন্য বৈশিষ্ট্য, সঠিক নির্দেশনা জরুরি
- চিকিৎসা বিজ্ঞানের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও এগিয়ে অধ্যাপক স্বপ্নীল
- সখিপুরে চালু হলো ক্যাম্পস এর স্বল্পমূল্যে ডায়ালাইসিস সেবা
- রাবেয়া খেলছে, রোকেয়া পারছে নিজে খেতে, জানাচ্ছে সিএমএইচ