বৃহস্পতিবার   ০৪ জুলাই ২০২৪ || ১৯ আষাঢ় ১৪৩১ || ২৪ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৫

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

উচ্ছ্বসিত গ্রাজুয়েটদের আনন্দময় অংশগ্রহণে সম্পন্ন হলো ডব্লিউইএসটি কমেন্সমেন্ট ২০২৪

অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক

১৭:৫৪, ১ জুলাই ২০২৪

৬৪

উচ্ছ্বসিত গ্রাজুয়েটদের আনন্দময় অংশগ্রহণে সম্পন্ন হলো ডব্লিউইএসটি কমেন্সমেন্ট ২০২৪

গ্রাজুয়েশন ঘোষণার সাথে সাথেই শিক্ষার্থীরা তাদের মাথার ক্যাপের ওপরে বাঁধা টাসেলগুলো ডান দিক থেকে বাম দিকে ঘুরিয়ে দেন। হাতে পাওয়া ডিগ্রির কপিটি উচ্চে তুলে ধরেন। এর মধ্য দিয়ে তারা জানিয়ে দেন, এটাই তাদের অর্জন। হলভর্তি দর্শকের তখন মুহুর্মূহু করতালি। যার মধ্য দিয়ে ওয়াশিংনটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির ২১৩ জন শিক্ষার্থী অর্জন করলেন তাদের ব্যাচেলরস ও মাস্টার্স ডিগ্রি। এদের মধ্যে স্কুল অব আইটি থেকে গ্রাজুয়েট হলেন ১৫৮ জন, আর স্কুল অব বিজনেস থেকে গ্রাজুয়েট হলেন ৫৫ জন।  

যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াস্থ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির ক্লাস অব ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো আলেক্সান্দ্রিয়া সিটি হাইস্কুল কম্পাউন্ডে। দুপুর না গড়াতেই নব্য গ্রাজুয়েটদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা ক্যাম্পাস। অতিথিরা আসতে শুরু করেন তারও কিছুটা পরে। ততক্ষণে কালো গাউনের ওপর কেউ লাল ও নীল রঙের ব্যাচেলর'স হুড কেউবা কমলা ও লাল রঙা মাস্টার্স হুড পরে প্রস্তুত।

ঘড়ির কাঁটায় ২টা বাজতেই শুরু হলো আনুষ্ঠানিকতা। প্রথমেই বিশ্ববিদ্যালয় চ্যান্সেলর ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপের নেতৃত্বে লিডারশিপ প্রোসেশন শেষে অভ্যাগত অতিথি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব ও শিক্ষকদের একটি দল মণ্চে অবস্থান নেন। এরপর গ্রাজুয়েশন প্যারেড করে কমেন্সমেন্ট হলরুমে ঢুকলেন স্কুল অব আইটির শিক্ষার্থীরা। তারা গিয়ে বসলেন হলের ডান দিকের সারিতে। আর পরপরই হল রুমে ঢুকলেন স্কুল অব বিজনেসের শিক্ষার্থীরা। তারা বসলেন বাম দিকের সারিতে।

আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীতে শুরু হলো আনুষ্ঠানিকতা। যার অন্যতম ছিলো গ্রাজুয়েশন বক্তৃতামালা। কিনোট স্পিকার ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি সভার সদস্য কংগ্রেসম্যান গেরি কোনোলি। অন্যতম বক্তা ছিলেন ভার্জিনিয়া হাউজ অব ডেলিগেটসের সদস্য ক্যারেন কিজ-গামারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও বোর্ড চেয়ারম্যান আবুবকর হানিপ শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন আর আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষার্থীদের গ্রাজুয়েশন ঘোষণা করেন ও ধন্যবাদ জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান কারাবার্ক।  

গেরি কনোলি তার বক্তৃতায় প্রযুক্তি শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন ও গ্রাজুয়েটদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, তাদের এই অর্জন নিঃসন্দেহের প্রশংসার দাবি রাখে। কমিউনিটির প্রতি অবদান রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তোমরা যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর অংশিদার। নর্দার্ন ভার্জিনিয়া থেকে তোমরা গ্রাজুয়েট হয়েছো যেখানে বয়ষ্ক জনশক্তির দুই তৃতীয়াংশই ব্যাচেলর ডিগ্রিধারি। আর ৩০ শতাংশের বেশিই রয়েছেন যারা উচ্চতর ডিগ্রি নিয়েছেন। যে পরিসংখ্যান যুক্তরাষ্ট্রের গড় পরিসংখ্যানের দ্বিগুন।  বিজ্ঞান-প্রযুক্তি-প্রকৌশল ও গণিতে ডিগ্রি অর্জনের সময়োপযোগিতার কথা তুলে ধরে এই কংগ্রেসম্যান বলেন,  প্রযুক্তিজ্ঞান ও দক্ষতাকে ব্যবহার করেই জলবায়ূ পরিবর্তন, অতিমারি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার, অপতথ্য ও সাইবার অপরাধের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। “প্রযুক্তিকে আমরা ভালো কাজের জন্যই ব্যবহার নিশ্চিত করবো, খারাপ উদ্দেশ্যে এর ব্যবহার প্রতিহত করবো,” বলেন গেরি কোনোলি।

ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে গুরুত্বারোপ করেন খাপ খাইয়ে নেওয়ার কৌশলের ওপর। শিক্ষার্থীদের প্রতি তিনি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে তাকে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে অর্জিত জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবোধ ও ইতিবাচক বৈশিষ্টাবলী দিয়ে মোকাবেলা করার পরামর্শ দেন।

"আজ আপনারা কেবল গ্রাজুয়েট হলেন, তা নয়, একই সঙ্গে আপনারা অর্জন করলেন নেতৃত্ব, উদ্ভাবনী দক্ষতা ও পরির্তনের কৌশল, যা আপনাদের ভবিষ্যত চলার পথ প্রশস্ত করবে," বলেন আবুবকর হানিপ।

শিক্ষার্থীদের কাছে জীবনের সংগ্রামের দিনগুলোকে সাফল্যের পথে নিয়ে যাওয়ার ব্যক্তিগত গল্প শোনানএই বাংলাদেশি আমেরিকান প্রযুক্তি শিক্ষা উদ্যোক্তা। তিনি জানান, দক্ষতা উন্নয়নে তার উদ্যোগ থেকে সুফল নিয়ে ২৫ হাজার মানুষ ও তাদের পরিবার আজ যুক্তরাষ্ট্রের মূল ধারায় তথা গোটা বিশ্বে তাদের জীবন মানে পরিবর্তন আনতে পেরেছেন।

মিজ ক্যারেন কিজ-গামারা তার বাল্যবেলার গল্প শোনান। কিভাবে তার বাবা তাকে শিখিয়েছিলেন সিট-আপের কৌশল। যার মধ্য দিয়ে জীবনময় শিক্ষার মূল্য তিনি উপলব্দি করেছেন। গ্রাজুয়েটিং শিক্ষার্থীদের তিনি আহ্বান জানান, প্রতিদিনই তারা যেনো নতুন কোনো অর্জনের চেষ্টায় নিয়োজিত থাকেন এবং কমিউনিটির উন্নয়নে অবদান রাখেন।

ডব্লিউইউএসটি'র সিএফও ফারহানা হানিপ যুক্তরাষ্ট্রে তার নিজের চলার পথের চ্যালেঞ্জগুলোর কথা তুলে ধরে বলেন, স্রেফ নিজের ওপর নিজের বিশ্বাস আর যেকোনো বাধাকে সুযোগে পরিণত করার প্রচেষ্টাই তার এই পথ সুগম করে দিয়েছে। নিজের প্রত্যাশা পূরণের সাথে মাতৃত্বের দায়িত্বকে তিনি সঠিক ভারসাম্যে পালন করার চেষ্টা করেন, বলেন ফারহানা হানিপ।

অনুষ্ঠানে অন্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন জর্জিয়ার স্টেট সিনেটর শেখ রহমান, ভার্জিনিয়ার স্টেট সিনেটর সাদ্দাম আজলান সেলিম, চীনের এইচডিডি গ্রুপের পরিচালক ড. হুসেইন ভূঁইয়া, ফিনটেক ইকো সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট এর কর্নধার ড. সাইফুল খন্দকার, ডব্লউইউএসটির বোর্ড সদস্য সিদ্দিক শেখ, ডব্লিউইউএসটি স্কুল অব প্রফেশনালস এর পরিচালক ও বোর্ড সদস্য মোহাম্মদ মাহদী-উজ-জামান ও অ্যাকসেনচুয়েট এর সিইও ও বোর্ড সদস্য নাসিরুল হক।  

বক্তারা নতুন গ্রাজুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে ন্যয়নিষ্ঠতা, একাগ্রতা ও ধৈর্য্যের সাথে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের স্বপ্ন পূরণে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেন।

এবারের ক্লাস অব ২০২৪ এ দুই ভ্যলেডিক্টোরিয়ান শিক্ষার্থী ছিলেন কার্লোস ইসরায়েল মোরেন হারনান্দেজ ও জেনিফার আফরোজ চৌধুরী। স্কুল অব আইটি ও স্কুল অব বিজনেস এর এই দুই সেরা শিক্ষার্থী তাদের বক্তৃতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ও সুযোগের কথা উল্লেখ করে এর ফ্যাকাল্টি ও প্রশাসনের সদস্যদের প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতা জানান।

পরে শিক্ষার্থীদের হাতে একে একে তুলে দেওয়া হয় তাদের ডিগ্রি। স্কুল অব আইটির ডিরেক্টর অধ্যাপক অ্যাপোসটোলস এলিওপোলস এবং স্কুল অব বিজনেস এর ডিরেক্টর ড. মার্ক রবিনসন নিজ নিজ স্কুলের গ্রাজুয়েটদের হাতে এই ডিগ্রি তুলে দেন।

এরপর মাইক্রোফন তুলে নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান কারাবার্ক। তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষার্থীদের গ্রাজুয়েশন ঘোষণা করেন এবং সকলকে ধন্যবাদ জানান। নৈশভোজের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank