রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১ || ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

আবেদন করে মুক্তিযোদ্ধার সনদ পেতে চাননি গাফফার চৌধুরী

নিউজ ডেস্ক

১৮:১৩, ২৯ মে ২০২২

৯১৮

আবেদন করে মুক্তিযোদ্ধার সনদ পেতে চাননি গাফফার চৌধুরী

মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার জন্য নিজে আবেদন করবেন না বলে জানিয়েছিলেন কিংবদন্তী লেখক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরী। মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভূক্তির জন্য সরকার নির্ধারিত নিয়মে আবেদনের অনুরোধের পরও গাফফার চৌধুরীকে রাজী করানো যায়নি বলে জানালেন ১৯৭১ সালের যুক্তরাজ্যে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ইউকের উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মোজাম্মেল আলী। 

অমর একুশের গানের রচয়িতা আবদুল গাফফার চৌধুরী স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ইউকের স্মরণ সভায় একথা বলেন তিনি। 

শনিবার যুক্তরাজ্যে বসবাসরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাইদের সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে ইউকের ভার্চুয়াল স্মরণ সভা 'আমি কি ভূলিতে পারি' শীর্ষক আলোচনায় স্মৃতি চারণ করতে গিয়ে একথা বলেন প্রয়াত গাফফার চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সহচর সৈয়দ মোজাম্মেল আলী। 

ভার্চুয়াল আলোচনায় ভিডিও বার্তায় গাফফার চৌধুরীর কন্যা ড. তনিমা চৌধুরী বলেন, বাবা ছিলেন তাদের জীবনে বট গাছের মতো, ছোট বেলায় তিনি বাবার কাঁধে বসে থাকতেন। যদিও গাফফার চৌধুরী বাঙালি জাতীর একজন আইকন, কিন্তু তার কাছে শুধুই একজন বাবা। 'পিতা হিসেবে তিনি ছিলেন আমাদের অনুপ্রেরণা, সিদ্ধান্ত গ্রহণে সব সময় তিনি আমাদের সহযোগিতা করতেন। তবে মৃত্যুর ৩৫ দিন আগে বিনিতার মৃত্যুতে তিনি সবচেয়ে বেশী ভেঙ্গে পড়েছিলেন। দুইজন দুই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন, ডাক্তারদের অনুমতি পাওয়া না যাওয়ায় পিতা-কন্যার শেষ দেখা হয়নি'। 

ড. তনিমা বলেন, তার বোন বিনিতা আবদুল গাফফার চৌধুরীকে বলেছিলে,' বাবা আমি যদি তোমার আগে যাই আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করবো, তুমি আমার আগে গেলে আমার জন্য অপেক্ষা করো'। গাফফার চৌধুরী বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুকে এতটাই ভালোবাসতেন যে ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর বাবাকে তিনি প্রথম কাঁদতে দেখেছিলেন বলে বলেন ড. তনিমা। 

যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফ অপর এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ১৫ আগষ্টের কষ্ট আর বেদনাকে সাথে নিয়ে মূঢ় হয়ে থাকেন নাই আবদুল গাফফার চৌধুরী। তিনি সাথে সাথে প্রতিবাদ শুরু করেছেন। 

ব্রিটেন থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক জনমত পত্রিকায় বঙ্গবন্ধুর খুনিদের প্রতি ঘৃণা জানিয়ে, তিরস্কার করে বিশ্ব পরিমলন্ডে প্রথম লেখাটি লিখেছিলেন আবদুল গাফফার চৌধুরী। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ইউকে'র ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য ও অনুষ্ঠানের চেয়ার বিধান গোস্বামী আবদুল গাফফার চৌধুরীর স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গাফফার চৌধুরী চেয়ার স্থাপনের দাবী জানান। 

অনুষ্ঠানের মডারেটর সাংবাদিক তানভীর আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য আবদুল গাফফার চৌধুরী নামে ফেলোশিপ প্রবর্তনের প্রস্তাব দেন। 

ভার্চুয়াল আলোচনায় আবদুল গাফফার চৌধুরীর সাথে ব্যক্তিগত জীবনের স্মৃতিচারণ করে বক্তৃতা করেন ব্যরিস্টার চৌধুরী হাফিজুর রহমান, ব্যরিস্টার কাজী আশিকুর রহমান, লিংকনস ইন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান,  জার্মানে নিযুক্ত বাংলাদেশের সম্মানিত কনসাল জেনারেল ইঞ্জিনিয়ার হাসনাত মিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য  পলি জাহান ও শওকত আলী বেনু।

 অনুষ্ঠানে সিনিয়র এ্যালামনাই ও ম্যানেজমেন্টের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ব্যরিস্টার অজয় রায় রতন, সোনালী ব্যাংক ইউকের সাবেক সহকারী প্রধান নির্বাহী আমীরুল ইসলাম, প্রদীপ মজুমদার,  ঝুমুর দত্ত, পুস্পদেব, ফাতেমা লিলি, চিত্রকর মাসুদ মিজান, মোকাররম হোসেন, সাংবাদিক জুনায়েদ জিলানী, আরিফুর রহমান, সুলতানা রশীদ নাসরিন সহ অন্যরা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে গাফফার চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন ও অমর একুশের সঙ্গীত রচনার প্রেক্ষাপটের উপর ধারণ করা একাত্তর টেলিভিশনে প্রচারিত আবদুল গাফফার চৌধুরীর শেষ টেলিভিশন সাক্ষাতকার ' রক্তে রাঙানো একুশের সত্তর' এর ধারণকৃত অংশ প্রচার করা হয়। 
 

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)

আরও পড়ুন

Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank