সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১ || ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

আইগ্লোবাল ও ড্যাফোডিলের সমঝোতা স্মারক সই

অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক

১১:৪৪, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২

৫৯৯

আইগ্লোবাল ও ড্যাফোডিলের সমঝোতা স্মারক সই

যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনয়াস্থ আইগ্লোবাল ইউনিভার্সিটি ও বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক বিনিময়সহ আইটিভিত্তিক শিক্ষার উৎকর্ষে দুই বিশ্ববিদ্যালয় একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে। 

ভার্জিনিয়ার লিসবার্গে আইজিওর নিজস্ব ক্যাম্পাসে বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) এই এমওইউ সই হয়। 

ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের টাস্ট্রি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান এবং আইগ্লোবাল ইউনিভার্সিটির চ্যান্সেলর ইঞ্জিনিয়ার আবু বকর হানিপ সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

ড. মো. সবুর খান সস্ত্রীক আইগ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালের ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর বাংলাদেশি আমেরিকান প্রকৌশলী আবুবকর হানিপের এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, একজন বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন যা বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের জন্য গর্বের বিষয়। 

"আমি নিজেও গর্ব অনুভব করি এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় কিভাবে কাজ করতে পারে তারই একটি পরিকল্পনা নিয়ে আমরা এগোচ্ছি। সম্পর্কটিকে আমরা সর্বোতভাবে ফলপ্রসূ করে তুলতে চাই," বলেন ড. মো. সবুর খান। 

মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, "একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শীর্ষে পৌঁছানের জন্য যে বৈশিষ্ট্য ও সম্ভাবনা থাকা প্রয়োজন তার সবই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে।" 

"আইজিইউ'র চ্যান্সেলর আবুবকর হানিপ একজন উদ্যমী ও উদ্যোগী ব্যক্তিত্ব। দুই দশকের বেশি সময় ধরে আইটি জগতে কাজ করছেন। এরই মধ্যে তার প্রতিষ্ঠিত আইটি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান পিপলএনটেক সর্বোচ্চ সফলতা দেখিয়েছে। এমন একজন উদ্যোক্তার নতুন এই উদ্যোগটিও সর্বোচ্চ সফলতা পাবে বলেই আমার বিশ্বাস," যোগ করেন সবুর খান। 

অন্যদিকে সবুর খানকে বাংলাদেশে তার নিজের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত আইটি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান ও তারই ধারাবাহিকতায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে দেশে ও বিদেশে সুপরিচিত করে তোলার সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে আবুবকর হানিপ বলেন, "আমাদের লক্ষ্যগুলো একইরকম। আমরা চাই শিক্ষার উৎকর্ষ এবং তার জন্য আধুনিক সময়ের যুগোপযোগী শিক্ষাকেই আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।" 

"বাংলাদেশে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস আমি ঘুরে এসেছি। ড. সবুর খান একটি স্বপ্নকে শুধু লালনই করেননি, সেটিকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন। তার প্রমাণ তার প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় ও তার ক্যাম্পাস। আইগ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়কে অনেকটা একই ধাচে গড়ে তোলার প্রগাঢ় ইচ্ছা নিয়েই আমরা এগিয়ে চলেছি," বলেন আবুবকর হানিপ। 

অনুষ্ঠানে আইগ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. কারাবার্ক অতিথিদের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরার পাশাপাশি এরই মধ্যে যেসব সাফল্য দেখাতে শুরু করেছে তা তুলে ধরেন। ড. কারাবার্ক বলেন, আবুবকর হানিপ বিশ্ববিদ্যালয়টির চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এক খোলনলচে পাল্টে যেতে শুরু করেছে। গত এক বছরে বিশ্ববিদ্যালয়টি যেসব সাফল্য দেখাতে পেরেছে তা এর অতীতের দেড় দশকে সম্ভব হয়নি।" 

আবুবকর হানিপকে একজন ভিশনারি শিক্ষা-প্রশিক্ষণ উদ্যোক্তা হিসেবে তুলে ধরে তিনি বলেন, "তার এই পথ চলার সঙ্গে থাকতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অধ্যাপক ও কর্মকর্তারা আনন্দিত ও গর্বিত।"

প্রেসিডেন্ট ড. কারাবার্ক ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্কেও কথা বলেন। তিনি বলেন, আমি ওয়েব সাইট থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি সম্পর্কে জেনেছি এবং মুগ্ধ হয়েছি। ড. সবুর খানের কাছে তিনি জানতে চান তার সাফল্যের পেছনের গল্প।  

উত্তরে ড. সবুর খান বলেন, "আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় সাফল্য একটি শক্তিশালী সুদক্ষ অ্যালামনাই গড়ে তুলতে পারা। বিশ্বের দেশে দেশে আইটি খাতে এখন ড্যাফোডিলের গ্রাজুয়েটরা তাদের দক্ষতার প্রমাণ রাখতে পারছে। এরচেয়ে বড় গর্বের আর আনন্দের কিছু হতে পারে না।"

"আর শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে গড়ে দিতে চাই যোগ্য ও দক্ষ ফ্যাকাল্টি। ড্যাফোডিল শুরু থেকেই বিষয়টিতে জোর দিয়ে আসছে। ফলে এখানে শিক্ষকরাই সবচেয়ে বড় সম্পদ," বলেন তিনি।

এক্ষেত্র ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নিজেদের অ্যালামনাইদের শিক্ষক হিসেবে নেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দেয় জানিয়ে ড. সবুর খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী যখন নিজ বিশ্ববিদ্যালয়েই আবার শিক্ষকতার সুযোগ পান তার চেয়ে আনন্দের কিছু নেই। এক্ষেত্রে তাদের কমিটমেন্ট অনেক বেশি থাকে।

"তৃতীয় যে বিষয়টিতে জোর দেওয়া প্রয়োজন তা হচ্ছে নেটওয়ার্কিং। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে, শিক্ষা-প্রশিক্ষণের নেটওয়ার্কের সঙ্গে এরই মধ্যে যুক্ত হয়েছে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নতুন নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে।"

সবুর খান আবারও আশা প্রকাশ করেন আইগ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয় তারা শিক্ষা প্রশিক্ষণের অঙ্গণে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন পালক যুক্ত করবে এবং সামনে এগিয়ে যাবে।

এসব প্রশংসার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে ইঞ্জিনিয়ার আবু বকর হানিপ বলেন, "ড. মো. সবুর খানের মতো অভিজ্ঞ মানুষ পাশে থাকলে লক্ষ্যে পৌছানো সহজ হবে। ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী ব্যাচেলর কমপ্লিট করেছে, তাদের মধ্যে অসংখ্য মেধাবী রয়েছে যারা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পেলে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করতে পারবে। আইগ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমরা সেই সুযোগটা তৈরি করে দিতে চাই।"

শুধু ছাত্রছাত্রী নয় দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও অভিজ্ঞতারও আদান প্রদান করতে পারবেন। এই সমঝোতার চুক্তির মাধ্যমে সব পথ খুলে গেছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এখন আমার আরো সামনে এগিয়ে যেতে চাই, বলেন আবুবকর হানিপ।  

আইজিইউ'র প্রধান অর্থ কর্মকর্তা ফারহানা হানিপ ড. সবুর খানকে বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিদর্শনে আসা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কাজ করতে সমঝোতা স্মারক সই করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে কিভাবে শীর্ষে তুলে নিতে হয় তার প্রমাণ তিনি এরই মধ্যে রেখেছেন। আইগ্লোবাল তার সেই পথচলাকে গুরুত্বের সাথে দেখে। 

"দুটি বিশ্ববিদ্যালয় একসঙ্গে কাজ করতে পারলে তা শিক্ষার উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখতে পারবে," বলেন ফারহানা হানিপ।   

আইগ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকদের অনেকেই এই এমওইউ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে স্কুল অব আইটি'র পরিচালক প্রফেসর অ্যাপোসটোলস এলিওপোলস, স্কুল অব বিসনেস এর পরিচালক অধ্যাপক মার্ক রবিনসন, সাইবার সিকিউরিটির অধ্যাপক ডেরেক স্মিথ, প্রফেসর নেকমি মুটলু, প্রফেসর জাফর পিরিম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। 

তারা সকলেই বাংলাদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফল্যে তাদের মুগ্ধতার কথা জানান এবং আইগ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন উচ্চতায় তুলে নেওয়ার জন্য অব্যাহত প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন। 

শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাকে সহজ করে তোলাই আমাদের কাজ, বলেন ড. অধ্যাপক মুটলু। ড. ডেরেক স্মিথ বলেন, এখানে সাইবার সিকিউরিটির শিক্ষা একটি চাকরি পাওয়ার জন্য নয়, শিক্ষার্থীর মধ্যে এই সাইবার সিকিউরিটি ব্রেন তৈরি করাই আমাদের উদ্দেশ্য। ড. হুগো বলেন আমরা তাই শেখাই যা শিক্ষার্থীদের জানা প্রয়োজন। আমরা তাদের মধ্যে একটি দক্ষতা তৈরি করে দিতে চেষ্টা করি। একটি উচ্চমানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থাই নিশ্চিত করে আইগ্লোবাল, বলেন তিনি। এখন সময়টাই নেটওয়ার্কিংয়ের। ব্যক্তির সম্পর্ক, বন্ধুত্ব আমাদের কাছে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ তবে তার চেয়েও বেশি গুরুত্ব রাখে প্রাতিষ্ঠানিক বন্ধুত্ব, বলেন জাফর পিরিম। 

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের অপর সুপরিচিত উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান, আইগ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. শ্যান চো ও মামুন ওয়াহাব। এছাড়াও ছিলেন এডমিশন ম্যানেজার সারাহ হেদায়েত, অ্যাসিস্ট্যান্ট আইটি ম্যানেজার কাজি বারী, অ্যাকাউন্ট্যান্ট কৌশিকা নাভাল, এডমিশন অফিসার সেমি জ্যাং সহ অন্যরা। 

পরে ড. মো. সবুর খান ও তার স্ত্রীর সম্মানে একটি নৈশভোজের আয়োজন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মকর্তারা এই নৈশভোজে অংশ নেন। 

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)

আরও পড়ুন

Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank