বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন অঞ্জনা
বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন অঞ্জনা
রাজধানীর বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের সত্তর ও আশির দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নৃত্যশিল্পী অঞ্জনা রহমান। শনিবার (৪ জানুয়ারি) বিকেল ৩টা ১৫ মিনিটে অভিনেত্রীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে বলে ইত্তেফাককে শিল্পী সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য ও অভিনেতা সনি রহমান জানিয়েছেন।
এর আগে চলচ্চিত্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন-বিএফডিসি এবং চ্যানেল আইয়ের প্রাঙ্গনের অঞ্জনার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সকাল সোয়া ১১টায় অভিনেত্রীর মরদেহবাহী গাড়িটি যখন এফডিসিতে প্রবেশ করে, অভিনেত্রীকে শেষ বিদায় জানাতে সেখানে আরো আগে থেকেই অপেক্ষায় ছিলেন অভিনেতা আলমগীর, উজ্জল, ইলিয়াস কাঞ্চন, মিশা সওদাগর, চিত্রনায়িকা নূতনসহ চলচ্চিত্রের মানুষেরা।
বিএফডিসিতে চিত্রনায়িকাকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে চোখের জলে বিদায় জানিয়েছেন তার দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা।
অঞ্জনার স্মৃতিচারণ করে নূতন বলেন, ‘অঞ্জনা আমার বোনের মত ছিল। যেখানে যেতাম আমাদের হাসি ঠাট্টা দেখে মানুষ মনে করত আমরা দুই বোন, আমরা যে শিল্পী টের পেত না। একসঙ্গে অনেক সিনেমা করেছি, চলচ্চিত্রের বাইরেও সম্পর্ক ভালো ছিল। গত ৬ ডিসেম্বর তার সাথে শেষ দেখা, একজন সুস্থ মানুষ ছিলেন। সেদিনই যে শেষ দেখা হবে, শেষ কথা হবে বুঝতে পারিনি।’
সিনেমার নায়িকা হওয়ার আগেও অঞ্জনা যে একজন নৃত্যশিল্পী ছিলেন সে কথা স্মরণ করেছেন অভিনেতা উজ্জল। তিনি বলেন, ‘আমি দেখেছি, সে সময় বিদেশি রাষ্ট্রীয় অতিথি থেকে সরকারি বড় বড় অনুষ্ঠানে তার নাচের ডাক পড়ত। সবাই তার নাচের প্রশংসা করত। এভাবে আমরা সবাই একদিন চলে যাব, আমাদের কাজই থেকে যাবে। যারা চলে গেছেন, তাদের স্মৃতি যেন আমরা সব সময় স্মরণ করি।’
অঞ্জনাকে বিদায় জানানের কাতারে আরো ছিলেন এসিড রুবেল, চিত্রনায়ক মেহেদী, অভিনেতা সুব্রত, নাসরিন, চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস, জয় চৌধুরী, পলি আক্তার, রোমানা ইসলাম মুক্তি, নৃত্য পরিচালক ইউসুফ খান, শ্রাবণ সাহা।
অঞ্জনাকে চলচ্চিত্রের একজন ‘বড় অভিভাবক’ বর্ণনা করে অপু বলেন, ‘আমরা আরেকজন কিংবদন্তি হারালাম। উনার আত্মার শান্তি কামনা করছি।’
শ্রদ্ধা জানাতে পরিচালকদের মধ্যে এসেছিলেন ছটকু আহমেদ, শাহিন সুমন, মুশফিকুর রহমান গুলজার, চয়নিকা চৌধুরী, পরিচালক মোহাম্মদ ইকবাল, দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, প্রযোজকনেতা খোরশেদ আলম খসরুসহ আরো কয়েকজন।
জোহরের নামাজের পর দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে জানাজা শেষে সেখান থেকে অভিনেত্রীর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় চ্যানেল আই প্রাঙ্গনে। সেখানে দুপুর আড়াইটার আগ দিয়ে আরেকবার জানাজা হয়েছে।
ছেলেবেলার বান্ধবী ও অভিনেত্রীকে বিদায় জানাতে চ্যালেন আইয়ে ছিলেন সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র গবেষক ও পরিচালক মতিন রহমানও।
ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাতে ১টা ২০ মিনিটে অঞ্জনা মারা যান। এই অভিনেত্রীকে বুধবার রাত থেকে হাসপাতালে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রাখা হয়েছিল।
অভিনেত্রীর ছেলে মনি জানিয়েছিলেন, বাড়িতে জ্বর হওয়ার পর বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে অঞ্জনাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে রক্তের সংক্রমণ ধরা পড়লে ওই হাসপাতালেই তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। পরে কিছুটা উন্নতি হলে সিসিইউতে আনা হয়।
সেখানে নয় দিন চিকিৎসার পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বুধবার রাতে বিএসএমএমইউ ভর্তি করা হয় অঞ্জনাকে।
রক্তের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া, ফুসফুসে পানি আসা, ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যাওয়া, এর মধ্যেই স্ট্রোক হওয়াসহ নানা জটিলতা তৈরি হয় অভিনেত্রীর। এক পর্যয়ে তাকে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট দেওয়া হয়। যে অবস্থা থেকে আর ফেরানো যায়নি সিনেমা ও নাচে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া এই শিল্পীকে।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- মিয়া খলিফার নতুন ভিডিও ভাইরাল
- চুইংগামের পোশাক পরলেন উরফি জাভেদ
- ২০২২ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেলেন যারা
- বিয়ে করলেন শমী কায়সার
- স্মরণে সত্যজিৎ
- তিনি উজ্জীবিত করতেন গণমানুষকে
- গোপনে বিচ্ছেদ, নতুন বিয়ে দুটোই সারলেন ইভা রহমান
- মিনা পাল থেকে ‘কবরী’ রূপে আত্মপ্রকাশের গল্প
- অস্কার পুরস্কার ২০২২ : এক নজরে বিজয়ীরা
- মজিবুর রহমান দিলু
স্যালুট আপনাকে হে জীবন ও মুক্তির যোদ্ধা!