রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪ || ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১ || ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

কবীর সুমনের ইচ্ছাপত্র: মৃত্যুর পর আমার সৃষ্টি যেন পুড়িয়ে ফেলা হয়

এন্টারটেইনমেন্ট ডেস্ক

১৪:০৭, ২৪ অক্টোবর ২০২০

আপডেট: ০০:১৪, ২৯ অক্টোবর ২০২০

৯২০

কবীর সুমনের ইচ্ছাপত্র: মৃত্যুর পর আমার সৃষ্টি যেন পুড়িয়ে ফেলা হয়

ছবি কবীর সুমনের ফেসবুক থেকে
ছবি কবীর সুমনের ফেসবুক থেকে

'বড় বেরঙীন আজকাল
 কাছাকাছি
 কোন রঙ পাইনা,
 তাই দিতে পারি না কিছু
 কিছুই রাঙানো হল না নয়তো
 আগামীর রঙে ছোপাতাম হয়তো
 এই মলিন আর এ ধুসর পথ চাওয়া
 এ চাওয়ার রঙ নাও তুমি
 আগামীর রঙ নাও তুমি'

বেরঙীন এই সময়ে এক অদ্ভুত রঙহীনতায় নিজেকে ঢেকে দিতে চাইছেন এই লিরিকের স্রষ্টা কবীর সুমন। আধুনিক বাংলা গানের জীবন্ত কিংবদন্তি  এক অন্যরকম ইচ্ছাপত্র বা উইল প্রকাশ করেছেন নিজের ফেসবুকে। সেখানে তিনি বলেছেন, মৃত্যুর পর যেন তার সমস্ত সৃষ্টি ট্রাকে করে নিয়ে গিয়ে ধ্বংস করে ফেলে কলকাতা পৌরসভা।

পশ্চিমবঙ্গের তথা ভারতের এই গীতিকার, সুরকার, গায়ক ও প্রাক্তন সাংসদ নিজের প্যাডে লেখা ইচ্ছাপত্রটি পোস্ট করেছেন নিজের ফেসবুকে। যার শিরোনাম 'সকলের অবগতির জন্য'। 'আমার মৃতদেহ যেন দান করা হয় চিকিৎসাবিজ্ঞানের কাজে। কোনও স্মরণসভা, শোকসভা, প্রার্থনাসভা যেন না হয়। আমার সমস্ত পাণ্ডুলিপি, গান, রচনা, স্বরলিপি, রেকর্ডিং, হার্ড ডিস্ক, পেনড্রাইভ, লেখার খাতা, প্রিন্ট আউট যেন কলকাতা পুরসভার গাড়ি ডেকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় সেগুলো ধ্বংস করার জন্য। আমার কোনও কিছু যেন আমার মৃত্যুর পর না থাকে। আমার ব্যবহার করা সব যন্ত্র, বাজনা, সরঞ্জাম যেন ধ্বংস করা হয়। এর অন্যথা হবে আমার অপমান।'

এ রকম ইচ্ছাপত্র প্রকাশের কারণ অবশ্য ব্যাখ্যা করেননি এই নাগরিক কবিয়াল। তবে তিনি সজ্ঞানে, সচেতন অবস্থায়, স্বাধীন ভাবনাচিন্তা ও সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। এও বলেছেন,  'আমি জানাচ্ছি, আমার কোনও অসুখ করলে, আমায় হাসপাতালে ভর্তি হতে হলে, অথবা আমি মারা গেলে, আমার সম্পর্কিত সবকিছুর, প্রতিটি বিষয় ও ক্ষেত্রে দায়িত্বগ্রহণ এবং সিদ্ধান্তগ্রহণের অধিকার থাকবে একমাত্র মৃন্ময়ী তোকদারের। অন্য কারওর কোনও অধিকার থাকবে না এই সব বিষয় ও ক্ষেত্রে।'

তার পোস্টের নিচে মৃন্ময়ী লিখেছেন, তিনি সুমনের দেওয়া ওই দায়িত্ব স্বীকার করে নিচ্ছেন।

গত শতকের নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে 'তোমাকে চাই' অ্যালবাম দিয়ে বাংলা আধুনিক গানের জগতে ঝড় তোলেন সেসময়ের সুমন চট্টোপাধ্যায় তথা বর্তমানের কবীর সুমন। বাঁক বদলে দেওয়া আধুনিক বাংলা গানের জনক হিসেবে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। অনেকে তাকে বাংলার বব ডিলানও বলে থাকেন। বব ডিলানের ‘ব্লোইং ইন দ্যা উইন্ড’ এর বাংলা রূপান্তর ‘কতটা পথ পেরোলে তবে পথিক বলা যায়’ দিয়ে বব ডিলানকে বাংলায় একটা অতি চেনা নামে পরিণত করেছেন কবীর সুমন। বাংলা গানে পশ্চিমা প্রভাবের সংমিশ্রণে এক নতুন ধাঁচের গান প্রবর্তনের জন্য বিখ্যাত হন তিনি।

নব্বই থেকে শুরু করে দুই দশক ধরে একের পর এক অ্যালবাম উপহার দিয়ে তৈরি করেন আলাদা শ্রোতা জগত। মাখে রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন। বর্তমানে বাংলা খেয়াল নিয়ে চর্চায় মেতেছেন। 
ফেসবুক পোস্টের নীচে ‘জন্মস্বাধীন। স্বপরিশ্রমে ও স্বখরচায় স্বেচ্ছাচারী, কবীর সুমন’ লিখে ইচ্ছাপত্রে দাঁড়ি টানেন অসামান্য এই শিল্পী।

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank