সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১ || ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

শাবিপ্রবির উপাচার্য ভবনে সাধারণের প্রবেশ এবং পানি-বিদ্যুৎ বন্ধের ঘোষণা

শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট

১৯:৪৫, ২৩ জানুয়ারি ২০২২

আপডেট: ২০:৩৭, ২৩ জানুয়ারি ২০২২

৫৪৩

শাবিপ্রবির উপাচার্য ভবনে সাধারণের প্রবেশ এবং পানি-বিদ্যুৎ বন্ধের ঘোষণা

শাবিপ্রবির উপাচার্য ভবনে পানি-বিদ্যুৎ বন্ধের ঘোষণা
শাবিপ্রবির উপাচার্য ভবনে পানি-বিদ্যুৎ বন্ধের ঘোষণা

অনশনের পরও উপাচার্য (ভিসি) পদত্যাগ না করলে তাকে পূর্ণ অবরুদ্ধ করে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। আরও বলা হয়েছে রবিবারের পর থেকে উপাচার্যের বাসভবনে পুলিশ ছাড়া আর কেউ ঢুকতে পারবে না। তার বাসায় পানি, বিদ্যুৎসহ সব পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হবে।

আন্দোলনকারীদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে রবিবার (২৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় এই সিদ্ধান্তের কথা জানান শিক্ষার্থী মোহাইমিনুল বাশার রাজ।

সংবাদ সম্মেলনে এসে শিক্ষার্থীদের পক্ষে মোহাইমিনুল বাশার রাজ বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা প্রায় ১০০ ঘণ্টা ধরে অনশন করছেন। অথচ এখন পর্যন্ত উপাচার্যের পদত্যাগের কোনো লক্ষণ নেই। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমরা উপাচার্যকে পূর্ণ অবরুদ্ধ করতে বাধ্য হবে।

‘তখন তার বাসার জরুরি পরিষেবাও (পানি, বিদ্যুৎ) বন্ধ করে দেব আমরা। আর আজ থেকে পুলিশ ছাড়া কেউ তার বাসায় প্রবেশ করতে পারবেন না।’

উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে তার পদত্যাগ দাবিতে গত ১৭ জানুয়ারি থেকে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। গত বুধবার থেকে একই স্থানে অনশন শুরু করেন ২৪ শিক্ষার্থী।

আর উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বাসায় প্রতিদিনই শিক্ষক, কর্মকর্তা, পুলিশ ও সাংবাদিকরা যাওয়া-আসা করছেন। চালু রয়েছে তার বাসার সব জরুরি পরিষেবাও।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থী ইয়াছির সরকার বলেন, ‘এই উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। অনশনের চেয়ে বড় কোনো অহিংস আন্দোলন হতে পারে না। আমরা এটিই চালিয়ে যাব।’

উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে উত্তাল শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়। সর্বশেষ গত বুধবার উপাচার্যের বাসার সামনে আমরণ অনশনে বসেছেন ২৪ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে একজনের বাবা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি অনশন শুরুর পরের দিনই বাড়ি চলে যান। বাকি ২৩ অনশনকারীর মধ্যে এখন ১৫ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। বাকি ৮ শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের শরীরে স্যালাইন পুশ করেছেন চিকিৎসকেরা। 

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সূত্রপাত হয় ১৩ জানুয়ারি। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী। ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ছাত্রলীগ ছাত্রীদের আন্দোলনে হামলা চালায়।  

পরের দিন বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা ও তাদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ।

শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। ওই হামলার প্রতিবাদে ঢাকা, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর, খুলনা, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন নাগরিক ও রাজনৈতিক সংগঠন।

এর মধ্যে  শিক্ষার্থীরা শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিকে তাদের দাবি লিখিতভাবে দেবেন বলে জানিয়েছেন। তবে শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের মূল দাবি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ। এই দাবি না মানা পর্যন্ত তারা আন্দোলন থেকে সরবেন না।

শনিবার রাতে ঢাকায় নিজ বাসভবনে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষামন্ত্রী।

তিনি জানান, প্রয়োজনে তার প্রতিনিধিদল শাবিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত। শিক্ষার্থীরা যখন কথা বলতে রাজি হবে, তখনই প্রতিনিধি যেতে পারবে। পারিবারিক কারণে এখন তিনি সিলেটে যেতে পারছেন না।

এরপর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গভীর রাতে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। বৈঠকে উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না এলেও দাবিগুলো লিখিতভাবে জমা দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি। দীপু মনি আশ্বস্ত করেন, লিখিত দাবি পেলে সেগুলো সমাধানে উদ্যোগ নেবে সরকার।
 

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank
শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত