মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১ || ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

অপমানের বিচার না পেয়ে পাবিপ্রবি’র প্রধান প্রকৌশলীর পদত্যাগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, পাবনা

০০:০৪, ৩০ জুন ২০২১

আপডেট: ০০:০৯, ৩০ জুন ২০২১

৬৫৫

অপমানের বিচার না পেয়ে পাবিপ্রবি’র প্রধান প্রকৌশলীর পদত্যাগ

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) প্রধান প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম কর্মকর্তাদের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার পর বিচার না পেয়ে পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার তিনি ব্যাক্তিগত সমস্যার কথা উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার বিজয় কুমার বহ্ম বরাবর এই পদত্যাগ পত্র দেন। 

পাবিপ্রবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার বিজন কুমার বহ্ম পদত্যাগপত্র পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগ ও কর্মকর্তা সমিতির মধ্যে বিরোধ চলছিল। এ ধরনের পরিস্থিতিতে উভয় পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে  লিখিত পত্র দেন। 

প্রকৌশল দপ্তরের লিখিত পত্রে বলা হয়, গত ১৫ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী আমিনুল ইসলামকে তার কক্ষে গিয়ে লাঞ্ছিত করা, গাড়ির চাবি কেড়ে নিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়া ও পিকনিকের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারদের কাছ থেকে চাঁদাবজির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করা হয় অফিসার সমিতির নেতাদের বিরুদ্ধে। 

অভিযোগগুলি স্পর্শকাতর হওয়ায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক কামরুজ্জামানকে আহবায়ক এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টারকে সদস্য সচিব করে তদন্ত কমিটি করে দ্রুততম সময়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল। তবে তদন্ত কমিটি এখনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি বলেও জানান রেজিস্ট্রার। 
অন্যদিকে, এক কর্মকর্তাকে বদলি করার জেরে প্রধান প্রকৌশলী আমিনুল ইসলামের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পরে পাবিপ্রবি অফিসার সমিতি। পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয় তহবিলের অর্থ অপচয় বন্ধে ও চলমান পাঁচশ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পে নানা অনিয়ম এবং সেসব অনিয়মের বৈধতা দিতে ভুয়া বিল ভাউচারে কর্মকর্তাদের স্বাক্ষরে বাধ্য করার অভিযোগ তুলে আমরা প্রধান প্রকৌশলী আমিনুল ইসলামের অব্যহতি চেয়ে আন্দোলন ও কর্মবিরতি শুরু করেন। উভয় পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপ্তরিক কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, অফিসার্স সমিতি ও প্রকৌশল বিভাগের দ্বন্দ্বে
ক্যাম্পাসের অচলাবস্থা নিরসনে দীর্ঘ ১৫ দিনেও কোন দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়নি পাবিপ্রবি প্রশাসন। উপাচার্য রোস্তম আলীর বিরুদ্ধে নানা দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ থাকায় তিনি দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেননি। তার ইশারায় বিতর্কিত ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটিও প্রতিবেদন দেয়নি। অপমানের বিচার না পাওয়ার ক্ষোভ থেকেই প্রধান প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম পদত্যাগ পত্র দিয়েছেন।
সদ্য পদত্যাগ করা পাবিপ্রবির প্রধান প্রকৌশলী আমিনুল ইসলামের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যাক্তিগত কারণে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছি। কারো দাবির মুখে নয়। এর বেশি কিছু তিনি আর বলতে রাজি হননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রশাসন বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও অসাদাচারণে কোন প্রকৌশলীর আর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করার পরিবেশ নেই। তিনি আরও বলেন, একজন সজ্জন ব্যাক্তির সাথে যে আচরণ করা হয়েছে, তা চূড়ান্ত রকম নোংরামির দৃষ্টান্ত। 

প্রকৌশল দপ্তরের সেকশন অফিসার তৌফিকুর রহমান বলেন, ‘অফিসার্স সমিতির নেতারা স্বার্থসিদ্ধি করতে না পেরে প্রধান প্রকৌশলী স্যারকে লাঞ্ছিত করেছেন। অপমান অপদস্ত করার কারনেই তিনি নিজেকে সরিয়ে নিলেন। আমি দ্ব্যার্থহীণ ভাবে বলতে পারি আমিনুল স্যারের সততা নিয়ে কোন প্রকার সন্দেহ নেই। বরং আমরাই খারাপ বলে ভালো মানুষের মুল্যায়ন করতে পারলাম না।’
পাবিপ্রবি অফিসার্স সমিতির সভাপতি হারুনর রশিদ ডন বলেন, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থের অপচয় হয়। তাই আমরা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিপক্ষে। প্রধান প্রকৌশলী স্যার যেহেতু চুক্তিভিত্তিক তাই আমরা তার অপসারণ চেয়েছিলাম। তিনি পদত্যাগ করায় আমরা সমিতির বৈঠক করে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।
তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক কামরুজ্জামান বলেন, ‘যেহেতু প্রকৌশলী ও অফিসারদের একসাথেই কাজ করতে হবে, সে কারণে আমরা সম্মানজনক শান্তিপূর্ণ সমাধান চাইছিলাম। এ কারণে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে ধীরে চলো নীতি অবলম্বন করা হয়েছে।’
প্রধান প্রকৌশলীর পদত্যাগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার পদত্যাগ পত্র এখনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গ্রহণ করেনি। এ সমস্যাটি এখনো সমাধানের সুযোগ রয়েছে।
 এ বিষয়ে পাবিপ্রবি উপাচার্য এম রোস্তম আলীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ থাকায় কথা বলেননি।
 

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank
শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত