মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১ || ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

প্রকল্পের অর্থ ভাগাভাগি, মুখোমুখি পাবিপ্রবি প্রকৌশলী -কর্মকর্তারা

রিজভী জয়, পাবনা

০৯:১২, ১৭ জুন ২০২১

আপডেট: ০৯:৩৩, ১৭ জুন ২০২১

৪৬৩

প্রকল্পের অর্থ ভাগাভাগি, মুখোমুখি পাবিপ্রবি প্রকৌশলী -কর্মকর্তারা

দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ যেন পিছু ছাড়ছে না পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের। উপাচার্য প্রফেসর ড. এম রোস্তম আলীর স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্ণীতি নিয়ে একের পর এক অভিযোগের পর বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এবার প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ তুলে তাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে খোদ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। 

বুধবার (১৬ জুন) প্রধান প্রকৌশলীর অপসারণ দাবী করে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার সমিতি। এর বিপরীতে প্রধান প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে একই দিনে কর্মবিরতি পালন করেছে প্রকৌশল দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে পাবিপ্রবির অপর একটি সূত্র জানায়, উন্নয়ন প্রকল্পের লুটপাটের টাকা ভাগ বাটোয়ারার দ্বন্দ্ব থেকেই এখন প্রকাশ্যে নেমেছেন কর্মকর্তারা। 

প্রধান প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম জানান, প্রশাসন বিভাগের এক কর্মকর্তাকে বদলির জন্য আমাকে দায়ী করে অফিসার সমিতির নেতৃবৃন্দ মঙ্গলবার (১৫ জুন) আমার অফিস রুমে এসে অশোভন আচরণ শুরু করেন। আমি এই বদলির সঙ্গে সম্পৃক্ত নই বলে,তাদের বার বার জানানোর পরও তারা উত্তেজিত হয়ে আমার সাথে খারাপ আচরণ করেন। পরে অফিস শেষে বাড়ি ফেরার সময় মূল ফটকে আমার গাড়ির থেকে নামিয়ে চাবি কেড়ে নেন। এ সময় তারা মারমুখী হয়ে আমার আর অফিসে আসার দরকার নেই বলেও শাসিয়ে দেন। একই সাথে তারা আমার সাথে চরম দূর্ব্যবহার করেন।  
এ ঘটনায় প্রকৌশল দপ্তরের সকল কর্মকর্তারা ক্ষুব্ধ হন এবং বিচার দাবীতে বুধবার তারা কর্ম বিরতি পালন করেন। 

তবে পাবিপ্রবির এক প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান ঘটনা আর্থিক লেনদেন নিয়ে। তিনি বলেন, কর্মকর্তা সমিতির নেতারা উন্নয়ন প্রকল্পের শুরু থেকেই বিভিন্ন প্রকল্প থেকে টাকা সরিয়ে তাদের দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে আসছেন। তাদের অনৈতিক দাবী মেনে না নেওয়ার কারনে তারা প্রায়ই প্রকৌশলীদের সাথে অশোভন আচরণ করেন। 

“সম্প্রতি অফিসার সমিতির সভাপতি হারুনর রশিদ ডনের ভাই আলতাব মাটি ভরাটের কাজ নিয়ে নয়ছয় কাজ করছিলেন। প্রকৌশল বিভাগের লোকজন এতে বাধা দিলেই সে আমার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে সংঘবদ্ধ ভাবে তারা আমাদের লাঞ্ছিত করার চেষ্টা চালায়। উপাচার্য সে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার করেননি। এখন তারা প্রধান প্রকৌশলীকেও ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের অনৈতিক দাবী আদায়ের চেষ্টা করছেন। ”

পাবিপ্রবি অফিসার্স সমিতির সভাপতি হারুনর রশিদ ডন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান প্রায় পাঁচ শত কোটি টাকার উন্নয়ন কাজের শুরু থেকেই অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্প কাজের শুরতেই উপাচার্য এম রোস্তম আলী তার আজ্ঞাবহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুর্নীতির দায়ে চাকরিচ্যূত প্রধান প্রকৌশলী আবদুর রহিমকে এই প্রকল্প তদারকির জন্য নিয়োগ দেন। তুমুল বিতর্কের মুখে সে নিয়োগ বাতিল হলে উপাচার্য নিজের পছন্দের আমিনুল ইসলামকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেন। তার প্রশ্রয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর একের পর এক অনিয়ম-দুর্নীতি শুরু করে। আমরা বারংবার এই দপ্তরের অনিয়মের প্রতিবাদ জানিয়ে ভিসি স্যারকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করলেও তিনি বিষয়টি আমলে নেননি। 

তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ষ্টোরে কিছু মেডিকেল সরঞ্জামাদি ক্রয় করেন প্রকৌশল দপ্তর, সেগুলোর চালান অনুযায়ী সরঞ্জামাদি সরবরাহ না করে নিম্ন মানের সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে। ষ্টোরে দায়িত্বরত পরিচালক রফিকুল ইসলামকে জোরপূর্বক সে সব জিনিসপত্র বুঝে পাওয়ার প্রত্যয়ন ও ভূয়া বিল ভাউচারে স্বাক্ষর করার জন্য চাপ দিতে থাকেন প্রকৌশলীরা। তিনি তা না করায় তারা আমার ভাইয়ের ঠিকাদারী কাজকে এর সাথে মিলিয়ে অসত্য অভিযোগ করছেন। 

পাবিপ্রবি কর্মকর্তা এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সোহাগ হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী নিয়োগকৃত ৫ জন প্রকৌশলী থাকার পরেও অপ্রয়োজনীয় ভাবে মাসিক লাখ টাকা চুক্তি ভিত্তিক বেতনে প্রধান প্রকৌশলীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা অপচয়ের অবসান চাই।  প্রধান প্রকৌশলীর পদত্যাগের দাবিতে বুধবার পাবিপ্রবি অফিসার সমিতির পক্ষে উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। আমরা প্রয়োজনে কঠোর আন্দোলন করবো। তবু এই বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা অপচয় হতে দিব না। 

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিষ্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম স্মারকলিপি পাওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, উপাচার্য স্যার এলে সমস্যার সমাধান করা হবে।

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank
শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত