মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১ || ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

বরিশাল মেডিকেলে ইন্টার্নদের কর্মবিরতি, তিনদিনে মৃত্যু ৪৬

ডিসট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বরিশাল

১৫:৪০, ৩ নভেম্বর ২০২০

আপডেট: ১৭:৪৯, ৩ নভেম্বর ২০২০

৯১৬

বরিশাল মেডিকেলে ইন্টার্নদের কর্মবিরতি, তিনদিনে মৃত্যু ৪৬

ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কমিশন বাণিজ্য নিয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক ও সহকারী রেজিস্ট্রারের দ্বন্দ্বে অচল হয়ে পড়েছে হাসপাতালটির চিকিৎসাসেবা। ৩১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতিতে ইতোমধ্যে মারা গেছেন ৪৬ জন রোগী। 

হাসপাতালের সেবা তত্ত্বাবধায়ক সেলিনা পারভীন জানান, শনিবার (৩১ অক্টোবর) ১০ জন, রবিবার ১৭ জন এবং সোমবার ১৯ জন রোগী হাসপাতালে মারা গেছেন। রোগীরা মারা যাওয়ার সময় হাসপাতালে চলছিল ইন্টার্নদের কর্মবিরতি। অর্থাৎ ৩১ অক্টোবর (শনিবার) ইন্টার্নদের কর্মবিরতি শুরু হওয়ার দিন থেকে তিনদিনের হিসেব বলছে মৃত্যুর সংখ্যা প্রত্যেকদিন বাড়ছে। তিনদিনে মারা গেছেন ৪৬ জন।

প্রত্যেক রোগীই যে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে মারা গেছেন বিষয়টা তেমন না হলেও, অধিকাংশ মৃতের স্বজন দাবি করছেন, তাদের রোগী মারা গেছে চিকিৎসা না পেয়ে। যে কয়েকজন ডাক্তার চিকিৎসা দিচ্ছেন, সংখ্যায় কম হবার কারণে তাদের পক্ষে সবার চিকিৎসা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। 

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২ অক্টোবর কাউনিয়া থানার শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দা সেকেন্দার আলীর স্ত্রী নাসিমা বেগম হাসপাতালে মারা যান। নাসিমা বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেছেন বলে স্বজনরা অভিযোগ তোলেন। মৃতের স্বামী সেকেন্দার আলী জানান, ওয়ার্ডে রোগী নেওয়ার পর থেকে কোন ডাক্তার দেখতে আসেননি। নার্সদের কাছে পরামর্শ করতে গেলে তারা খারাপ আচরণ করেছেন। 

শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) রাতে হাসপাতালের সার্জারী-২ (পুরুষ) ওয়ার্ডে ভর্তি হন মোটরসাইকেলে গুরুতর আহত গনি সরদার। ওই ওয়ার্ডের নার্সরা জানিয়েছেন, উজিরপুর থেকে আসা রোগীকে আসার পর থেকেই তারা চিকিৎসা দিচ্ছিলেন। কিন্তু চিকিৎসক না থাকায় সঠিক চিকিৎসা দেওয়া যায়নি। শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টায় রোগী গনি সরদার মারা যান। হাসপাতালের মেডিসিন (মহিলা) ওয়ার্ডে মারা যান নুর বানু নামে আরেক গৃহবধূ। জানা গেছে, নুর বানু অ্যাজমা রোগী ছিলেন। তার স্বজন রমিজ আলী বলেন, তারা আগৈলঝড়া থেকে এসেছিলেন। কিন্তু সারারাত কোনো চিকিৎসা না পেয়ে ওই রোগী মারা যান।

কর্মবিরতীর কারণে রোগীর মৃত্যু পরিমান বাড়ছে বিষয়টি স্বীকার করেন শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ বাকির হোসেন। তিনি বলেন, উভয় পক্ষকে নিয়ে একটি সমাধানের চেষ্টা চলছে। আশা করা যাচ্ছে সুষ্ঠু সমাধান দ্রুতই সম্ভব হবে। ইন্টার্নদের কর্মবিরতির কারনে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ভোগান্তি হচ্ছে এটি সত্য। ডাক্তার না ডিউটিতে থাকলে রোগীর মৃত্যুর পরিমান বাড়বে এটা অস্বাভাবিক নয়।  

এদিকে আজ (৩ নভেম্বর) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) চতুর্থ দিনের মতো চলছে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘট। প্রায় দেড়শ’ ইন্টার্ন চিকিৎসক কাজে না ফেরায় এক হাজার শয্যার দক্ষিণাঞ্চলের এই হাসপাতালটিতে চলছে চরম অব্যবস্থাপনা। ৫ শ’ শয্যার হাসপাতালে ২২৪ টি পদের বিপরীতে চিকিৎসক রয়েছেন ৯১ জন। বাকি ১৩৩টি পদ শূন্য রয়েছে। ।  

প্রসঙ্গত, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কমিশন বাণিজ্য নিয়ে ২০ অক্টোবর হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মাসুদ খানকে কক্ষে আটকে মারধর করেন ইন্টার্ন চিকিৎসক নেতা ডাঃ সজল পান্ডে ও তারিকুল ইসলাম। এ ঘটনায় ডাঃ মাসুদ খান ১০ জন ইন্টার্ন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। তার প্রতিবাদে ইন্টার্নরা কর্মবিরতির ডাক দেন।

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank
খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত