পৃথিবীতে উল্কাপিণ্ড আঘাত হানলে কী হবে?
পৃথিবীতে উল্কাপিণ্ড আঘাত হানলে কী হবে?
উল্কাপিণ্ড পৃথিবীতে আঘাত হানতে যাচ্ছে, মানুষজন দিকবিদিক পালাচ্ছে, সরকারি কর্তারা মাটির তলায় সুরক্ষিত বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছে, সেনাবাহিনীর লোকেরা রাস্তায় শেষবারের মতো দায়িত্ব পালন করছে: এরকম দৃশ্য কেবল সিনেমার পর্দাতেই দেখা যায়।
কিন্তু বাস্তবে কোনো উল্কা যদি পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে তখন কী হবে? সেসব নিয়েও চিন্তা করছেন বিজ্ঞানীরা। ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত নাসা'র জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরি (জেপিএল)-এ 'অ্যাস্টরয়েড ওয়াচ' নামের একটি সেকশনই আছে যেটার কাজ হচ্ছে পৃথিবীর নিকটে আসতে পারে এমন উল্কা বা ধূমকেতুকে পর্যবেক্ষণ করা।
বিজ্ঞানীদের তথ্য অনুযায়ী পৃথিবীতে উল্কাপিণ্ডের আঘাত হানার সম্ভাবনা খুবই কম। পৃথিবীর প্রাণ পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করতে ১০০ কিলোমিটার ব্যাসের উল্কাপিণ্ডকে এখানে পড়তে হবে। আশার কথা হলো, এত বড় দৈর্ঘ্যের উল্কাপিণ্ডের সংখ্যা মহাকাশে কেবল পাঁচ শতাংশ।
তবে মহাকাশে এমন কোনো বড় উল্কা থাকতে পারে যার খবর হয়তো নাসার বিজ্ঞানীরা এখনো পাননি। সেরকম যদি বড়সড় কোনো উল্কা পৃথিবীতে আঘাত হানে, তাহলে আর দেখতে হবে না। এক মাইল প্রশস্ত একটি উল্কা যদি ভূপৃষ্ঠে আঘাত করে, তাহলে এটি ঘণ্টায় ৪৮ হাজার কিলোমিটার গতিতে এখানে পড়বে। আর এর ক্ষমতা হবে এক মিলিয়ন মেগাটন একটি বোমার সমান।
আপনার ঘরের সমান একটি উল্কাও যদি পৃথিবীতে ঘণ্টাপ্রতি ৪৮ হাজার কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে, তাহলে তার শক্তিমত্তা হবে হিরোশিমায় ফেলা বোমার মতো, প্রায় ২০ কিলোটন। ঢাকা শহরে এরকম একটি উল্কা আঘাত করলে আধা মাইলের মধ্যে থাকা সব স্থাপনা মাটির সাথে মিশে যাবে।
২০ তলা ভবনের সমান উল্কার কথা চিন্তা করা যাক। এর ক্ষমতা হবে ২৫ থেকে ৫০ মেগাটন। এরকম কিছু আঘাত হানলে এটি কেন্দ্র থেকে আট কিলোমিটারের মধ্যে সবকিছু ধ্বংস করে দেবে। বিশ্বের যেকোনো মেগাসিটিকে ইতিহাসের পাতায় স্থান করে দিতে এরকম একটি উল্কাই যথেষ্ট।
আর যদি আমরা পুরো পৃথিবীতে বড় রকমের ধ্বংসযজ্ঞ ঘটার কথা চিন্তা করি, তাহলে উল্কাকে হতে হবে ১১ থেকে ১৩ কিলোমিটার প্রশস্ত। এটি আঘাত হানার সাথে সাথে পুরো পৃথিবী ধুলায় ভরে যাবে, সূর্য ঢেকে যাবে, আঘাতস্থলের তাপমাত্রা বেড়ে যাবে। কয়েকশ কোটি মানুষ মারা যাবে। কিছু হয়তো কোনোভাবে টিকে থাকবে।
এক আঘাতে পুরো পৃথিবীকে ধ্বংস করতে সেই উল্কাকে হতে হবে ৯৬ কিলোমিটার প্রশস্ত। তবে ভালো খবর হলো এরকম কিছু ঘটার সম্ভবনা খুবই কম। আর নাসা এখন উল্কা থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করার উপায় বের করতে গবেষণা চালাচ্ছে। তারা ইতোমধ্যে ডাইমর্ফোস নামের একটি উল্কার ওপর মহাকাশযান দিয়ে ধাক্কা দেওয়ার মিশন শুরু করেছে। এটি স্রেফ একটি পরীক্ষা, কিন্তু এ থেকে প্রাপ্ত তথ্য উল্কা থেকে পৃথিবীকে বাঁচাতে সহায়তা করবে।
আরও পড়ুন: এবার গ্রহাণুর গায়ে স্পেসক্রাফট ভাঙবে নাসা!
হাউ স্টাফ ওয়ার্কস অবলম্বনে।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- বিড়াল ভয়ংকর!
- আপনি কি একজন এমবিভার্ট?
- মাটি খাওয়া মানুষ
- বিষাক্ত পাতাবাহার গাছ
- বঙ্গবন্ধুর যেসব অনন্য উক্তি জাগিয়ে তোলে প্রাণশক্তি
- নাগলিঙ্গম ফুলের সৌরভে...
- বিশ্বব্যাপী গাছে গাছে জুতা ঝুলানো হয় কেন?
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রিকদের শেষ চিহ্ন [ভিডিও স্টোরি]
- টাইটানিক ডোবার ভিন্ন ব্যাখ্যা দিলেন বিজ্ঞানী!
- পটকা মাছ কেন বিষাক্ত?